সংক্ষিপ্ত

দেরিতে অনুমতি মেলায় এবং কোভিড পরিস্থিতির কারণে জয়দেব মেলায় আউল-বাউল-সাঁই-ফকিরের আনাগোনা চোখে পড়েনি। পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল না রাধাবিনোদ মন্দিরেও।

করোনা অতিমারির (Corona) কারণে শতাব্দী প্রাচীন (century-old) জয়দেব-কেন্দুলির মেলায় (Joydev-Kenduli fair) জনশূন্য। স্নান ঘাটেও পূণ্যার্থীদের (Devotees) থেকে পুলিশের (Police) সংখ্যায় বেশি দেখা যায়। দেরিতে অনুমতি মেলায় এবং কোভিড পরিস্থিতির কারণে জয়দেব মেলায় আউল-বাউল-সাঁই-ফকিরের আনাগোনা চোখে পড়েনি। পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল না রাধাবিনোদ মন্দিরেও। যে কটা দোকানপাট বসেছে তাদেরও খদ্দের নেই।

প্রসঙ্গত, প্রথম দিকে জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছিল জয়দেব কেন্দুলির মেলা হবে না। তবে পুণ্যস্নান হবে করোনা বিধি মেনেই। কিন্তু মেলার তিন দিন আগে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানিয়ে দেন জয়দেব-কেন্দুলির মেলা হবে। পুণ্যস্নান থেকে পুজো সবই হবে। বসবে দোকানপাট। হবে আখড়া। কিন্তু এদিন জয়দেবের মেলায় তেমন জমায়েত লক্ষ্য করা যায়নি। 

জয়দেব-কেন্দুলি মেলা কমিটির সম্পাদক তথা বোলপুর মহকুমা শাসক অয়ন নাথ বলেন, “কোভিডের কারণে এবার খুব কম সংখ্যক পুণ্যার্থী এসেছেন। শুক্রবার ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫০০০ বা তার একটু বেশি সংখ্যক পুণ্যার্থী স্নানঘাটে স্নান করেছেন। অন্যান্যবার ওই সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। তাছাড়া বীরভূম জেলায় ৬টি পৌর এলাকায় আংশিক লকডাউন চলছে। কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য প্রচার করা হচ্ছে। সেইসব কারণেই মানুষ মেলা মুখো হননি”।

ঢোলক নিয়ে আসা সুদূর মুর্শিদাবাদ থেকে শ্রীদাম দাস বলেন, “২ দিন আগে এসেছি। একটিও ঢোলক বিক্রি হয়নি। গাঁটের কড়ি ভেঙ্গেই খাওয়া-দাওয়া চলছে। মেলায় বসেছে নাগরদোলা। তবে তাতে চড়ার লক নেই। তাদের বক্তব্য, বছরের-পর-বছর জয়দেব মেলা দেখে আসছি। এই ধরনের মেলা এই প্রথম। সন্ধ্যা নামলেই আমরা কয়েকটি দোকানদার ছাড়া আর কেউ থাকবে বলে মনে হয় না”।

জয়দেব রামকৃষ্ণ আশ্রমে দূরান্ত থেকে আসা মানুষজন সাধু মহান্তদের এক বেলা খাবার ব্যবস্থা করেছেন দুবরাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমের শীর্ষ সেবক স্বামী সত্যশিবানন্দ মহারাজ। তিনি বলেন, আমাদের সংঘ গুরু স্বামী গৌরানন্দ মহারাজের নির্দেশেই আগত ভক্তদের পাত পেড় প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। 

জয়দেব মেলার মূল আকর্ষণ আখড়া। সেখানে প্রতিটি আখড়াতে বসে বাউল-ফকির ও কীর্তন গানের আসর। মেলাতে আগত সমস্ত ভক্ত তিনদিন ধরে বিনাপয়সায় পেটপুরে দুবেলা খাবার পান। এবার সে সব বন্ধ। তবে মেলায় ভক্তদের আনাগোনা কম থাকলেও পুলিশের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মেলায়। তাছাড়াও সব রকম নাশকতা রুখতে রাখা হয়েছে সিআইডি বম্ব স্কোয়াড। স্নানের আগে ভোররাতে প্রতিটি ঘাটে পুলিশ কুকুর সঙ্গে নিয়ে ঘুরে তদন্ত করেছে। বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ওয়াচ টাওয়ার। মাথার উপরে ড্রোন সব সময় ছবি করছে। মেলা চত্বর জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।