সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হলেন এয়ার ইন্ডিয়া এয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস লিমিটেড বা এআইএএসএল (AIASL)র এক কর্মী। মৃত কর্মীর সঞ্জীব রায় উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন।
শুক্রবার বিকালে, কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হলেন এয়ার ইন্ডিয়া এয়ার ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস লিমিটেড (Air India Air Transport Service Limited) বা এআইএএসএল (AIASL)-র এক কর্মী। মৃত কর্মীর নাম সঞ্জীব রায়। তাঁর বাড়ি উত্তরবঙ্গে বলে জানানো হয়েছে বিমানবন্দর সূত্রে।
কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা? সূত্রের খবর, কলকাতা বিমানবন্দরের ১৮ এবং ২০ নম্বর হ্যাঙারের মাঝামাঝি এক জায়গায় ঘটে এই দুর্ঘটনাটি। জানা গিয়েছে, সঞ্জীব রায় এদিন বিকালে একটি ট্রাক্টর নিয়ে হ্যাঙারের কাছে যাচ্ছিলেন। পথে, কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, তিনি ট্র্যাক্টর থেকে পড়ে যান। এরপর, চলন্ত ট্রাক্টরের পিছনের চাকা তাঁর শরীরে উপর উঠে যায়। যে ট্র্যাক্টর তিনি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তারই নিচে পিষ্ট হন ওই কর্মী।
এরপরই তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে চিনার পার্কের (Chinar Park) কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে, সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটেছে। ট্রাক্টরের চাকার নিচে পড়ে তাঁর মাথায় গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। সেই আঘাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে (R G Kar Medical College and Hospital)। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বিমান বন্দরের এক পদস্থ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ভারতীয় কোস্টগার্ড বাহিনির একটি উড়োজাহাজ তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে দেখে, সংঘর্ষ এড়াতে সঞ্জীব রায় নামে ওই গ্রাউন্ড কর্মী দ্রুত ট্রাক্টরটির স্টিয়ারিং বাঁ দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, তাতেই ট্রাক্টরটির উল্টে যায়। তার টাকা ওই হতভাগ্য কর্মীর গায়ের উপরে উঠে যায়, এবং ট্রাক্টরের ছাউনির নিচে তার মাথা পিষ্ট হয়। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন বা ডিজিসিএ (DGCA) এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য কে বা কারা দায়ী, তা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে, কলকাতা বিমানবন্দরে একটি বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন, রোহিত বীরেন্দ্র পাণ্ডে নামে স্পাইসজেট (Spice Jet) সংস্থার এক প্রযুক্তিবিদ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করার সময় ওই প্রযুক্তিবিদ স্পাইসজেটের একটি বোম্বারডিয়ার কিউ৪০০ বিমানের (Bombardier Q400 Aircraft) ল্যান্ডিং গিয়ারের দরজাটিতে আটকে গিয়েছিলেন। বিমানটির ত্রুটি মেরামতের কাজ চলাকালীন, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের দরজাটি হঠাৎ-ই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আর সেই দরজার ফাঁকে ওই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মাথা ও বুকের কিছুটা অংশ পিষে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল ওই প্রযুক্তি কর্মীর। স্পাইসজেট সংস্থা হাইড্রোলিক ম্যালফাংশানের (Hydraulic Malfunction) দাবি করলেও, সংস্থার বিরুদ্ধে নিহত কর্মীকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল।