সংক্ষিপ্ত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রুমমেট
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে একঘরে ৫ জন
কর্মসূত্রে দুবাইয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী কেরলের বাসিন্দারা
পরিচ্ছন্ন আর সামাজিক দূরত্ব রেখেই সুস্থ থাকলেন বাকিরা 
লকডাউনের দুবাইয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার হয়েছিল ওঁদের। ওঁরা কেরলের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকেন দুবাইতে। ৬ জন এতদিন ধরে এক কামরার একটি ফ্ল্যাটেই দিন কাটাতেন। কোনও সমস্যা ছিল না। হঠাৎই তাঁদের এক রুমমেট আক্রান্ত হয়ে পড়েন করোনাভাইরাসে। তারপরই বিপদ নেমে আসে ওঁদের জীবনে। ওঁদের কথায় দুবাই কোয়ারেন্টিনের তেমন সুবিধে তৈরি হয়নি তখনও। গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয় সেখানে। তাই আক্রান্ত রুমমেটের চিকিৎসাতেও সমস্যা তৈরি হয়। কারণ লকডাউনের দুবাইতে কোনও অ্যাম্বুলেন্স তাঁরা যোগাড় করে উঠতে পারেননি। বাধ্য হয়েই অনেক টাকা দিয়ে একটি ভাড়ার গাড়ির ব্যবস্থা করেন। আক্রান্ত যুবকের কথায় সবকটি হেল্ফ লাইনে ফোন করেও কোনও লাভ হয়নি। আরব আমীর শাহীতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বিশেষ সুবিধে হয়নি। 

রুমমেট করোনাভাইরাসে  আক্রান্ত হওয়া স্বত্ত্বেও মানবিক কারণেই তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার কথা মাথাতেও আসে বাকি পাঁচ জনের। নিজেরাই ঘরটি ভাগাভাগি করে নেন। একদিকে চারজন। বাকি একটি দিক বরাদ্দ করা হয়েছিল রোগীর জন্য। কিন্তু সংক্রমণ ছড়াতে বেশিদিন লাগেনি। কয়েক দিনের মধ্যে ফ্ল্যাটের অন্য এক বাসিন্দারও করোনায় সংক্রমিত হওয়া লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে শুরু করে। এই অবস্থায় দুবাই প্রশাসনের থেকে তাঁরা তেমন সাহায্য পাননি বলেই অভিযোগ। তবে এক বন্ধুর কোম্পানি পর্যাপ্ত সাহায্য করেছিল। মাস্ক, গ্লাভস আর পিপিই কিট পাঠিয়ে দিয়েছিল। 

আক্রান্ত জানিয়েছেন, একটি ঘরেই তাঁরা থাকছিলেন। তাই বারবার ডেটল দিয়ে ঘর পরিষ্কার করার পাশাপাশি নিজেদের পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয় তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। আক্রান্তদের থালা বাসনও সম্পূর্ণরূপে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ঘরে শৌচাগার একটি হওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁদের। আক্রান্তরা শৌচাগার ব্যবহার করার পরপরই তা স্যানিটাইজ করা হত। একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন আতঙ্কিত না হয়ে তাঁরা নিজেদের আর ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার ওপর জোর দিয়েছিলেন। 

আক্রান্তদের নমুনার ফল পজেটিভ হওয়ার পরেও তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি। দুবাইয়ের হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানন হয়েছিল হাসপাতালে জায়গা খালি হলেই তাঁদের ডেকে নেওয়া হবেয ততদিন বাড়িতে থাকারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশই বাকিদের থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু তখনও হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে তেমন কোনও পরামর্শ দেওয়া হয়নি। 

আরও পড়ুনঃ লকডাউনের মরশুমে স্বস্তিতে প্রকৃতি, এবার উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলে দেখা মিলল বিরল প্রজাতির তুষার চিতার ...
আরও পড়ুনঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আর্থিক অনুদানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বিল গেটস, ভারত পাকিস্তানের থেকেও পিছি...
আরও পড়ুনঃ পিৎজা খেয়ে কোয়ারেন্টাইনে ৭২টি পরিবার, দিল্লিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ডেলিভারি বয় ...
এই পরিস্থিতিতে আক্রান্ত তাঁর পরিবারকে সবকথা জানান। আক্রান্তের পরিবার কেরল সরকারের দ্বারস্থ হয়। তারপরিই ক্রল সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দুবাইয়ে আবস্থতি কেরলবাসীর জন্য খাবার ওষুধ ও হাসপাতালের ব্যবস্থা করার হল আবেদন জানান। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কথা 
বলা হয় দুবাই প্রশাসনের তরফ থেকে। তারপরই আক্রান্ত ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। বাকি রুমমেটদেরও কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ভাগ্যক্রমে বাকিদের মধ্যে কোনও সংক্রমণ ছড়ায়নি বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।