সংক্ষিপ্ত

করোনার ডেল্টা রুপে ছাড়খাড় বাংলাদেশ - এমনটাই উঠে এল জিনোম সিকোয়েন্সিং-এ। এছাড়াও সেখানে মিলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ভেরিয়েন্ট এবং নাইজেরিয় রূপভেদও। 
 

ভয় ধরাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া ভারতের প্রতিবেশী রাজ্য বাংলাদেশ। ভারতে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের উচ্ছ্বাস দীরে ধীরে কমে এলেও, বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে  মহামারিতে। বর্তমানে সেই দেশে দৈনিক  ১৪ হাজারের আশপাশে রয়েছে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা আর প্রতিদিন প্রায় ২৫০-র কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে। তবে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য হল বাংলাদেশে সংক্রমণের ৯৮ শতাংশই আক্রান্ত করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টে, এমনটাই জানা গিয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশে মিলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ভেরিয়েন্ট বা বিটা ভেরিয়েন্ট এবং করোনার একেবারে নতুন নাইজেরিয় কিংবা মরিসাস রূপভেদও!

বৃহস্পতিবার, 'ঢাকা ট্রিবিউন', 'প্রথম আলো'র মতো প্রথম সারির বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা বিএসএমএমইউ (BSMMU)-এর এক সাম্প্রতিক গবেষণায়, বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ থেকে করোনা রোগীদের মোট ৩০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল। গত ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত এক মাস ধরে এ নমুনা সংগ্রহের কাজ করা হয়েছিল। নমুনার ৫৩ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়েছিল পুরুষ রোগীদের থেকে আর বাকি অংশ মহিলা রোগীদের থেকে। এঁদের বেশিরভাগের বয়স ৩০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে হলেও, গবেষণার ব্যপ্তি বাড়াতে পরীক্ষিত নমুনাগুলির মধ্যে ৯ মাস থেকে ৯০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। 

বিএসএমএমইউ-এর এক জিনোম সিকোয়েন্সিং-এ কী দেখা গেল? যে ৩০০ নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হয়েছিল, তার প্রায় ৯৮ শতাংশই করোনার ডেলটা ভেরিয়েন্ট-এ আক্রান্ত। আর ১ শতাংশ নমুনায় মিলেছে বিটা ভেরিয়েন্ট, যা দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম মিলেছিল। আর একটি নমুনা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন সেটি করোনার মরিসাস ভেরিয়েন্টও হতে পারে আবার  একেবারে নতুন পাওয়া নাইজেরিয় ভেরিয়েন্টও হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে এখনও গবেষণা চালানো হচ্ছে। তবে এই গবেষণা চলাকালীন গবেষকরা আঁচ পেয়েছেন, ধীরে ধীরে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট, বিটা ভেরিয়েন্টের জায়গা নিয়ে নিচ্ছে। ৩০ দিন শেষে বিটা ভেরিয়েন্টের সংখ্যা মাত্র  শতাংশ হলেও এই গবেষণার প্রথম ১৫ দিনে সংগৃহীত নমুনায় বিটা ভেরিয়েন্টের পরিমাণ ছিল ৩ শতাংশ!

আরও পড়ুন - করোনা টিকা নিলে কী বেড়ে যাচ্ছে স্তনের মাপ, ব্রিটিশ ইউটিউবারের ভিডিও দেখে এগিয়ে এলেন অনেকেই

আরও পড়ুন - সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনাভাইরাসের তৃতীয় ডোজ দেবেন না, আবেদন WHO-র

আরও পড়ুন - মাদককাণ্ডে নাম জড়াল পরিমণি-র, বনানীতে অভিনেত্রীর বাড়িতে তল্লাশি, নেশার সাপ্লায়ার কি প্রযোজক নজরুল

বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় খুব ভালভাবে তুলে ধরা হয়েছে, কীভাবে একের পর এক করোনার আগের রূপের জায়গা নিচ্ছে তারই আরও সংক্রামক কোনও ভেরিয়েন্ট। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যেমন বাংলাদেশে সংক্রমণের হার বেশি ছিল আলফা ভেরিয়েন্টের। যে ভেরিয়েন্টটি প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্যে, পরিচিত ইউকে ভেরিয়েন্ট নামে। গত মার্চ মাসে আবার বিটা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি ছিল। এবার তারই জায়গা নিল, প্রথম ভারতে সনাক্ত হওয়া করোনার আরও সংক্রামক ডেল্টা ভেরিয়েন্ট। এই ভেরিয়েন্ট গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি করেছিল। 

এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে এখনও বাংলাদেশে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, শ্বাসযন্ত্র এবং ফুসফুসের রোগের মতো সহ-অসুস্থতায় ভোগা ব্যকর্তিদের মধ্যেই করোনায় মৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া দেখা গিয়েছে, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী রোগীরা যদি দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে তাঁদেরও করোনায় প্রাণ হারানোর সম্ভাবনা বেশি থাকছে।

 

 

YouTube video player