সংক্ষিপ্ত
বিশ্বজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে করোনার নতুন রূপ 'ওমিক্রন' (Omicron Variant)। এই নিয়ে বড় বিবৃতি দিল করোনাভাইরাস টিকা (Coronavirus Vaccine) প্রস্তুতকারী দুই সংস্থা ফাইজার (Pfizer) এবং বায়োএনটেক (BioNTech)।
ধীরে ধীরে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের (Coronavirus Vaccine) ডোজ পাচ্ছিলেন। দুই বছরে মহামারির (Coronavirus Pandemic) দুটি তরঙ্গের পর, ধীরে ধীরে সংক্রমণের উচ্ছ্বাসও কমে আসছিল। অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়িচ্ছে। বিশ্ববাসী যখন অন্ধকারময় দিন কাটিয়ে, ফের কোভিড পূর্ব পৃথিবীতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সেই সময়ই ফের বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে করোনার নতুন রূপ 'ওমিক্রন' (Omicron Variant)। এই ভেরিয়েন্টটি প্রথম পাওয়া গিয়েছিল বতসোয়ানায় (Botswana), তারপর দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) এবং হংকং-এও (Hong Kong) দেখা মিলেছে। আর এই নব রূপের করোনাভাইরাস'কে নিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের বর্তমান ভ্যাকসিনগুলি এই ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করবে কি না, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই নিয়ে শুক্রবার বড় বিবৃতি দিল ফাইজার (Pfizer) এবং বায়োএনটেক (BioNTech) সংস্থা।
এখনও পর্যন্ত কোভিডের যে ভ্যাকসিনগুলি চালু রয়েছে, তার মধ্যে কার্যকারিতার দিক থেকে অন্যতম সেরা মার্কিন সংস্থা ফাইজার এবং তাদের জার্মান পার্টনার বায়োএনটেক সংস্থার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন। তাদের তৈরি টিকাটি-কি কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাসের নতুন রূপভেদ ওমিক্রন-এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হবে? দুই সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বর্তমান টিকা, করোনার নতুন রূপের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবে, ফাইজার এবং বায়োএনটেক, মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে, ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে একটি নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
দুই সংস্থার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফাইজার এবং বায়োএনটেক আনুমানিক ১০০ দিনের মধ্যে নতুন রূপভেদের বিরুদ্ধে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির অনুমোদন পেলে তারা তার মধ্যে নতুন ভ্যাকসিনটির উৎপাদনও শুরু করে ফেলতে পারবে, এমনই দাবি করেছে তারা। ফাইজার এবং বায়োএনটেক আগামী দুই সপ্তাহে 'ওমিক্রন' ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে আরও তথ্য হাতে পাওয়ার আশা করছে। তারপরই, নতুন টিকা তৈরি করার কাজ শুরু করে দেবে। কয়েক মাস আগেই তাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে, নতুন সম্ভাব্য ভেরিয়েন্টগুলির বিরুদ্ধে কার্যকর করে তোলার কাজ শুরু করে দিয়েছিল মার্কিন ও জার্মান টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাদুটি। তবে তারা জানিয়েছে, 'ওমিক্রন' ভেরিয়েন্টটি করোনার আগের ভেরিয়েন্টগুলির তুলনায় অনেকটাই আলাদা।
ভেরিয়েন্টটি প্রথম পাওয়া গিয়েছিল আফ্রিকার দক্ষিণের দেশ বতসোয়ানায়। সেই কারণে এটিকে বাতসোয়ানা ভেরিয়েন্ট (Botswana Variant) বলা হচ্ছিল। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) করোনার এই নতুন রূপটির নাম দিয়েছে ওমিক্রন। শুক্রবার তারা জানিয়েছে, করোনার একটি নতুন স্ট্রেন সনাক্ত করা হয়েছে, বি.১.১.১.৫২৯ (B.1.1.1.529)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক উপদেষ্টা কমিটি জানিয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি অত্যন্ত সংক্রামক। একে হু-এর উদ্বেজনক রূপভেদ (Variant of Concern)-এর তালিকায় রাখা হয়েছে। বেশ কয়েক মাসে এই তালিকায় আবার কোনও নতুন নাম যুক্ত হল। এর আগে এই বিভাগে ফেলা হয়েছিল করোনাভাইরাসের ডেল্টা রূপভেদকেও (Delta Variant)। যাকে, অনেক চেষ্টা করেও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকানো যায়নি। ভারতে করোনার ভয়াল দ্বিতীয় তরঙ্গের (Covid-19 Second Wave India) জন্যও এই ভেরিয়েন্টই দায়ী ছিল।
ওমিক্রন-কে আটকাতে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত যাত্রীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে। অনেক দেশে, দক্ষিণ আফ্রিকা সঙ্গে উড়ান যোগাযোগই বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।