সংক্ষিপ্ত
- গোসাবার মানুষের জন্য ত্রাণ
- ত্রাণের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা
- সংক্রমণ রুখতে ত্রাণদাতাদের করোনা টেস্টের সিদ্ধান্ত
- নয়া নিয়ম গোসাবা ব্লক প্রশাসনের
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই আবার আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু বাঁধের উপর। এই পরিস্থিতিতে গোসাবার মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বহু সরকারি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
প্রতিদিনই বহু সংগঠন সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে যাচ্ছেন। এরফলে নতুন এক আতঙ্কের মেঘ উঁকি দিচ্ছেন প্রশাসনের কপালে। এই ত্রাণের হাত ধরে নতুন করে আরও সংক্রমণ ঢুকে পড়বে না তো দ্বীপাঞ্চলে? এই দুশ্চিন্তাই এখন ভাবাচ্ছে গোসাবা ব্লক প্রশাসনকে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গদখালি ঘাটেই র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করছে গোসাবা ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। গোসাবার দ্বীপাঞ্চলে দুর্গত মানুষজনের জন্য ত্রাণ নিয়ে আসুন কিন্তু করোনা নয়, এই বার্তা ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে দেওয়া শুরু হয়েছে। গদখালি সহ গোসাবার দ্বীপাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য অন্য যে খেয়াঘাট গুলি রয়েছে সর্বত্রই বৃহস্পতিবার থেকে এ বিষয়ে প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি গদখালি সহ বড় খেয়াঘাট গুলিতে যেখান থেকে মানুষজন বেশি পরিমানে ত্রাণ নিয়ে গোসাবার বিভিন্ন দুর্গত দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন সেখানে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এরফলে সংক্রমণে কিছুটা লাগাম টানা যাবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। এমনিতেই গত কয়েকদিনে গোসাবায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ফ্লাড সেন্টার বা ত্রাণ শিবিরগুলিতে ইতিমধ্যেই যাদের উপসর্গ রয়েছে তাঁদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যদি কারো শরীরে সংক্রমণ মেলে তাহলে সাথে সাথে সেই সংক্রমিত ব্যক্তিকে সেফ হোমে পাঠাবার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রতিদিন ত্রাণের জন্য নদীর পাড়ে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন বহু মানুষজন। সেখানে শারীরিক দূরত্বের বালাই একদিকে যেমন থাকছে না, তেমনি যে সমস্ত মানুষজন ত্রাণ দিতে আসছেন তাঁরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছেন। তাঁরাও যে করোনার ভাইরাস বয়ে নিয়ে আসছেন না সেটা বুক ঠুকে বলা যাচ্ছে না।
এই কারণেই এবার ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে ত্রাণ নিয়ে যারা আসছেন গোসাবায় তাঁদের জন্য কোভিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোসাবা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ইন্দ্রনীল বর্গী বলেন, “দ্বীপাঞ্চলের মানুষজন এই মুহূর্তে যথেষ্ট সমস্যায় রয়েছেন। নিজেদের বাড়িঘর সব জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভবনা যথেষ্ট। পাশাপাশি ত্রাণ দিতে যে সমস্ত মানুষজন বাইরে থেকে আসছেন গোসাবায় তাঁদের হাত ধরেও করোনা ভাইরাস ঢুকে পড়তে পাড়ে এই দ্বীপভূমিতে। সেই কারণেই পরিস্থিতি সামাল দিতে খেয়াঘাটে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”