সংক্ষিপ্ত

  • মহারাষ্ট্র পুলিশের জালে ৩০০ শ্রমিক 
  • ২টি ট্রাকে ৩০০ শ্রমিক
  • অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
  • সব রাজ্যগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের
     

দুটো ভাত বা রুটির জন্য নিজের গ্রাম বা নিজের শহর ছেড়েছিলেন। পাড়ি দিয়েছিলেন অন্য কোনও শহরে। উদ্দেশ্য ছিল নিজের আর পরিবারের মুখে দুটো অন্ন তুলে দেওয়া।কিন্তু করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অচকমাই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি কাজ হারিয়েছেন অনেক অভিবাসী শ্রমিক। খাবার নেই। আশ্রয় হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটেই ফিরেছন নিজের গ্রামে। কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছেন অন্য পথের।  মহারাষ্ট্রে কাজ করতে আসা প্রায় তিনশো শ্রমিক নিজেদের জীবন বিপল্ল করে দুটি ট্রাক কন্টেনারে লুকিয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন নিজের গ্রামে। বৃহস্পতিবারই পুলিশ উদ্ধার করেছে ৩০০ শ্রমিককে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানাগেছে তাঁরা রাজস্থানের বাসিন্দা। কাজের জন্য নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে চলেগিয়েছিলেন অন্যত্র। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আশ্রয়হীন তাঁরা। খাবারও নেই। তাই বাড়ি ফিরতে মরিয়া । অন্যকোনও রাস্তা না দেখে ট্রাক কন্টেনার ভাড়া করেই লুকিয়ে রাজস্থান চলে যেতে চেয়েছিলেন। 

মহারাষ্ট্র পুলিশ জানিয়েছে তেলাঙ্গনা সীমান থেকে আটক করা হয়েছে দুটি ট্রাক কন্টেনারকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ট্রাকের চালক কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেনি। তাই সন্দেহ হয়। তখনই তল্লাশি শুরু করা হয়। তারপরই উদ্ধার করা হয় ৩০০ অভিবাসী শ্রমিককে। একএকটি কন্টেনারে ১৫০ জন করে শ্রমিক ছিলেন। ঠাসাঠাসি করে শ্রমিকরা থাকায় মানাই হয়নি সামাজিক দূরত্ব। আর সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতেই লকডাউনের ডাক দেওয়া হয়িছল। তবে এই তিনশো অভিবাসী শ্রমিককে অবিলম্বে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। মহারাষ্ট্রে নথিভুক্ত অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ১২ লক্ষ। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে বলে আগেই মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তারপরেও আতঙ্ক কাটেনি রাজ্যের অভিবাসী শ্রমিকদের।  

অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে রীতিমত উদ্বেগে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের মোট জনসংখ্যা ২০ শতাংশেরও বেশি অভিবাসী শ্রমিক। যারা রুজি রুটির সন্ধানে চলে গেছে অন্যত্র। অভিবাসী শ্রমিকদের খাবার ও আশ্রয় নিশ্চিত করতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন অনেক শ্রমিক। তাদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীন পট্টনায়ক আগেই ১৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি  লিখে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সদর্থক পদক্ষেপ নিতে আবেদন জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বিহার ও ঝাড়খণ্ড ত্রাণ বন্টনের উদ্যোগ নিয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ করোনা যুদ্ধে সামিল ভারতীয় রেল, ট্রেনের বগিতেই বানান হচ্ছে কোয়ারেন্টাইন

আরও পড়ুনঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় কী করেছে ভারতীয় সেনা, পর্যালোচনা রাজনাথের

আরও পড়ুনঃ খেতে না পেয়ে মরার থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরাই ভালো, লকডাউনের দিল্লি থেকে আর্জি মহিলার

অভিবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশ রয়েছে কেরলে। বেসরকারী হিসেব অনুযায়ী উত্তর পূর্ব থেকে আসা ২৫ লক্ষ অভিবাসী শ্রমিক রয়েছে এই রাজ্যে। আগেই অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে কেরল সরকার। অভিবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে প্রত্যেকটি রাজ্যই নিজের নিজের মত করে কাজ করছে। কিন্তু লকডাউনের ভারতে অভিবাসী শ্রমিকরা যে প্রবল সমস্যার সম্মুখিন তা বারবারই সামনে আসছে।