সংক্ষিপ্ত
জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মর্গান, স্টোকস, বাটলারদের মতো আগ্রাসী ব্যাটসম্য়ানদের উপস্থিতি এবং অন্তত ৭ প্রকার বোলিং বৈচিত্র - ঘরের মাঠে এই কারণেই ইংল্যান্ড দলকে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ জয়ের অন্যতম দাবিদার ধরা হচ্ছে। একমাত্র দুর্বলতা ভালো মানের সুইং বোলিং-এর সামনে এখনও বেশ নড়বড়ে ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা। এছাড়া প্রধান বোলিং অস্ত্র ক্রিস ওকস-এর হাঁটুর চোটও মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।
এইবারের বিশ্বকাপ জেতার অন্যতম দাবিদার ধরা হচ্ছে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ডকে। ২০১৫ বিশ্বকাপের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর দলের খোল নলচেই বদলে দেওয়া হয়েছিল। সেই বিশ্বকাপ দলের মর্গান, বাটলার, মইন আলি, জো রুট ও ক্রিস ওকস শুধুমাত্র এইবারের দলেও রয়েছেন। কিন্তু তাই বলে দলে কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাব নেই। কারণ বর্তমান দলের অধিকাংশ সদস্যই সেই ২০১৫ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। মাদক ব্যবহারের জন্য প্রথমে দলে নিয়েও একেবারে শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয়েছে ব্য়াটসম্যান অ্যালেক্স হেলস-কে। তাঁর বদলি এখনও ঠিক করতে পারেনি ইংল্যান্ড।
হেলস বাদ পড়ায় কিছুপটা হলেও ইংরেজ দলের ব্যাটিং ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। তবে তাদের দুই গোড়াপত্তনকারী ব্যাটসম্যান জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো বর্তমানে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অন্যতম বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি। ২০১৮ সালে বলা যেতে পারে ইচ্ছেমতো শতরান হাঁকিয়েছেন দুই জনেই। চলতি আইপিএল-এও বেয়ারস্টো তাঁর ফর্মের ঝলক দেখিয়েছেন।
তিন ও চারে ইংল্যান্ড দলে রয়েছেন জো রুট ও অধিনায়ক ইয়ন মর্গান। এই দুই ব্যাটসম্যানের বিশেষত্ব হল প্রয়োজনে তাঁরা ইনিংস গঠন করতে পারেন। আবার দরকার পড়লে প্রথম দুই ব্যাটসম্য়ানর ধ্বংসলীলা বজায় রেখে ব্য়াট করে যেতে পারেন।
লোয়ার অর্ডারে স্টোকস, বাটলার ও মইন আলির তিন জনেই স্ট্রোক খেলতে সিদ্ধহস্ত। সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকে স্টোকস-কে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে দেখা যাচ্ছে। বল হাতেও আগ্রাসী ভূমিকা নিতে পারেন। সেইসঙ্গে এই ইংরেজ দলের সেরা ফিল্ডারও তিনি। বাটলার ও মইন আলি দুজনেই চলতি আইপিএল-এ বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা ফর্মেই আছেন।
বোলিং বিভাগে বলতে গেলে সব রকমই বৈচিত্র রয়েছে এই ইংরেজ দলে। প্রধান দুই অস্ত্র ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ। নতুন বল হাতে ইনিংসের শুরুতে এবং ডেথ ওভারে বোলিং-এর নেতৃত্ব দেবেন ওকস, আর মাঝের ওভারে মইন আলির সঙ্গে জুটিতে বিপক্ষকে ধরাশায়ী করার দায়িত্ব নেবেন আদিল রশিদ। ২০১৫ সাল থেকে গত ৪ বছরে তিনি ১২৫টি উইকেট নিয়েছেন।
মাঝের ওভারে বোলিং-এর দায়িত্ব থাকবে প্লাঙ্কেটের উপরেও। কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ খারাপ, বলের জোরও অনেকটাই কমেছে। তাই তাঁকে নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় ইংরেজ ক্রিকেট মহল। তবে মার্ক উড বেশ জোরে বল করতে পারেন। উইলির জোগাবেন বাঁহাতি জোরে বোলিং-এর বৈচিত্র্য আর টম কুরান ডেথ বোলিং বিশেষজ্ঞ। সেই সঙ্গে ব্যাটিং-এর হাতটিও ভাল।
জো ডেনলিকে দলে রাখা হয়েছে ব্যাক আপ স্পিনার হিসেবে। হেলস-এর জায়গায় দলে জায়গা পেতে পারেন জোরে বোলার জোফ্রা আর্চার। নিয়মিত ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারেন তিনি।
এই ইংল্যান্ড দলকে এগিয়ে রেখেছে তাদের আগ্রাসী ব্যাটিং ও বিপুল বোলিং বৈচিত্র্য। বোলিং-এ অন্তত ৭ টি বিকল্প পাবেন মর্গান, যা পাটা উইকেটে সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে। আগে ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের অন্যতম সমস্যার জায়গা ছিল স্পিন বোলিং খেলা। এই দল কিন্তু সেই দুর্বলতাও কাটিয়ে উঠেছে। একমাত্র বালো মানের সুইং বোলিং-এর বিরুদ্ধে এখনও ভেঙে পড়ার প্রবণতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইংরেজরা। সেই সঙ্গে চিন্তায় রেখেছে বোলিং-এর প্রধান ভরসা ওকস-এর হাঁটুর চোট।
তবে, যদি প্রত্যাশা মতো পারফর্ম করতে পারেন ইংরেজ ক্রিকেটাররা, তাহলে এইবারই তাদের ঘরে প্রথমবার বিশ্বকাপ ট্রফি আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল।
ইংল্যান্ডের ১৪ সদস্যের* বিশ্বকাপের দল:
ইয়ন মর্গান (অধিনায়ক), মইন আলি, জনি বেয়ারস্টো (উইকেটরক্ষক), জস বাটলার (সহঅধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), টম কুরান, জো ডেনলি, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ, জো রুট, জেসন রয়, বেন স্টোকস, ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস এবং মার্ক উড।
*শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েছেন অ্যালেক্স হেলস