সংক্ষিপ্ত
- আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এর দ্বিতীয় ম্যাচটি হল একপেশে
- প্রথম ইনিংস পাকিস্তানকে মাত্র ১০৫ রানে অলআউট করে দেয় ওয়েস্টইন্ডিজ
- জয়ের রান করতে ক্যারিবিয়ানদের লাগল ১৩.৪ ওভার
- অর্ধশতরান করলেন গেইল
ম্যাচটা শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রথমার্ধেই। ২১.৪ ওভারে মাত্র ১০৫ রান করলে, হাতে যত ভালো বোলিং আক্রমণই থাকুক না কেন, বিশ্বকাপের ম্যাচ জেতা যায় না। তার উপর কোমরে ব্যথা নিয়েও ৩৪ বলে অর্ধশতরান করলেন ক্রিস গেইল। আর গেইলের ব্যাট চললে অনেক বড় বড় স্কোরই জলভাত হয়ে যায়। এদিন জয়ের স্কোরে পৌঁছতে ক্যারিবিয়ানদের লাগল মাত্র ১৩.৪ ওভার। প্রথম ম্যাচ ৭ উইকেটে জিতে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল হোল্ডার বাহিনী।
মাত্র একবছর আগেই মার্চ মাসে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে বিশ্বকাপ খেলার চাড়পত্রের জন্য লড়ে হয়েছিল ওয়েস্টইন্ডিজ-কে। এমন দলকে ক্রিকেট বিশ্বের প্রথম সারির দলগুলি ভয় পাওয়া তো দূর ধর্তব্যের মধ্যেই আনত না। কিন্তু সেই ক্যারিবিয়ান দলই গত ছয় মাসে প্রায় আমূল বদলে গিয়েছে। আর তাই, বিশ্বকাপের কালো ঘোড়া হিসেবে বিশেষজ্ঞরা ওয়েস্টইন্ডিজকেই চিহ্নিত করেছিলেন।
অভিযানের প্রথম থেকেই টগবগিয়ে দৌড়তে শুরু করল সেই ঘোড়া। টসে জিতে পিচ ও পরিস্থিতি দারুণ ভাবে পড়ে নিয়ে পাকিস্তানকে ব্য়াট করতে পাঠিয়েছিলেন হোল্ডার। আর তাঁর সেই সিদ্ধান্তকে যোগ্য মর্যাদা দেন তাঁর বোলাররা। একেবারে শুরু থেকে দুর্দান্ত শর্ট বলে পাকিস্তানকে একেবারে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। একমাত্র ওয়াহাব রিয়াজ বোল্ড ও শাদাব খান এলবিডব্লু হওয়া ছাড়া বাকি আটজনই আত্মসমর্পন করেছেন শর্ট পিচ বলের সামনে।
আর পাকিস্তানকে ১০৫ রানে আটকে রাখার পর গেইল প্রায় একাই ম্য়াচটি শেষ করে দেন। পাকিস্তান বোলাররাও বাউন্সারের রাস্তা নিয়েছিলেন। কিন্তু, পাক ব্য়াটসম্য়ানদের থেকে ক্যারিবিয়ানরা বাউন্সারটা অনেক বেশি ভালো খেলেন। তাও, মহম্মদ আমিরের শর্ট বলে মারতে গিয়ে হাফিজের হাতে ধরা পড়েন শাই হোপ (১১)। ব্রাভো আবার আমিরের বলেই খোঁণচা মেরে ফিরে যান কোনও রান না করেই।
তা সত্ত্বেও ওয়েস্টইন্ডিজ ব্যাটসম্য়ানদের উপর কোনও চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি পাকিস্তান। কারণ উল্টো দিকে স্বাভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ব্য়াট করছিলেন গেইল। কিন্তু বয়সটা তাঁর ৩৯ হয়েছে। তাই এদিন ছোট্ট ইনিংসটা খেলতে গিয়েই কোমরে টান লাগে তাঁর। তাই নিয়েই অর্ধশতরান করলেন। তারপরেই অবশ্য আমিরকে মারতে গিয়ে উইকেট খোয়ান। বাকি আনুষ্ঠানিকতা নির্বিঘ্নে সাড়েন নিকোলাস পুরান (১৯ বলে ৩৪)।
এর আগে শুধু মাত্র ফখর জামান (২২), বাবর আজম (২২), মহম্মদ হাফিজ (১৬) এবং ওয়াহাব রিয়াজ (১৮) - এই চারজন ছাড়া বাকি পাক ব্য়াটসম্য়ানরা কেউই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। শেষের দিকে এলোপাথারি ব্যাট চালিয়ে ওয়াহাব রিয়াজ দুটি ছয় ও একটি চার মেরে পাকিস্তানকে ১০০ রানের গণ্ডি পার করায়। শর্ট বলের সামনে একজন পাক ব্যাটসম্যানও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। যা দেখে শোয়েব আখতার টুইট করেছেন 'স্পিচলেস'।
ক্যারিবিয়ান বোলারদের মধ্যে বিশ্বকাপে অভিযেক ঘটিয়েই ওযানে থমাস ৫.৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন। তাঁকেই ম্য়াচের সেরা বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অধিনায়ক হোল্ডার ৪২ রানে ৩টি, আন্দ্রে রাসেল ৪ রানে ২টি ও কটরেল ১৮ রানে ১টি উইকেট নিয়েছেন। ব্রেথ ওয়েট উইকেট না পেলেও রান দেননি। সব মিলিয়ে সোনালি সময়ের নস্টালজিয়া ফিরিয়ে আনলেন ওশানে থমাসরা।