সংক্ষিপ্ত
- বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় বিজয় শঙ্করকে ত্রিমাত্রিক ক্রিকেটার বলা হয়েছিল
- কিন্তু তারপর থেকে আইপিএল-এ ব্যাটে-বলে ব্যর্থ হয়েছেন এই অলরাউন্ডার
- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনভিজ্ঞ শঙ্করের ফর্ম ভারতকে চিন্তায় ফেলেছে
মাঝখানে সময়ের ফারাক এক মাসের কিছু কম। আর এই অতি অল্প সময়েই অনেকটা বদলে গিয়েছে চিত্রটা। গত ১৫ এপ্রিল আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এর জন্য ভারতীয় দল ঘোষণার সময় বিজয় শঙ্করকে 'ত্রিমাত্রিক ক্রিকেটার' বলে বর্ণনা করেছিলেন নির্বাচক প্রধান এমএসকে প্রসাদ। কিন্তু, তারপর থেকে আইপিএল-এ এতটাই খারাপ ফর্ম গিয়েছে শঙ্করের যে এই বাছাইটা বুমেরাং হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শঙ্করের উত্থানটা হয়েছিল প্রায় ধূমকেতুর গতিতে। অস্ট্রেলিয়া সফরে সিমিত ওভারের সিরিজে নির্বাসনের জন্য বাদ পড়েছিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। তাঁর জায়গায় ফাঁক পূরণের উদ্দেশ্যেই তামিলনাড়ুর এই অলরাউন্ডারকে নেওয়া হয়েছিল দলে। কিন্তু সুযোগ-কে কাজে লাগিয়ে শঙ্কর একের পর এক চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মাঝের ওভারে ব্যাট করা, লোয়ার অর্ডারে ব্য়াট করা, দারুণ ফিল্ডিং এর সঙ্গে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ ওভারে বল হাতে ভারতকে জয এনে দেওয়ার পর, শঙ্করের মধ্যে এক আগুনে তারকাকে দেখেছিল ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা। হার্দিকের বিকল্প নয়, তাঁকে একেবারে মহা গুরুত্বপূর্ণ 'নাম্বার ফোর'-এর ভূমিকায় দেখা শুরু হয়।
এবারের আইপিএল-টা কিন্তু দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শুরু করেছিলেন শঙ্কর। প্রথম দুই ম্যাচে কেকেআর এবং রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে যথাক্রমে ২৪ বলে ৪০ ও ১৫ বলে ৩৫ রানের দুটি মূল্যবান ইনিংস-ও খেলেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই তাঁর ফর্ম পড়তে শুরু করে। পরের ১২ ইনিংসে তিনি মাত্র ১৪৪ রান পেয়েছেন। একটিও ৩০-এর উপরে রান পাননি। স্ট্রাইক রেট-ও নেমে যায় ১০০.৬-এ। বল হাতেও বিশেষ কিছু করতে পারেননি। গোটা মরসুমে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৮ ওভার বল করার। তাতে ৭০ রান দিয়ে জুটেছে সাকুল্যে ১টি মাত্র উইকেট।
এখন প্রশ্ন হল বিজয় শঙ্করের এই আইপিএল ফর্ম ভারতের বিশ্বকাপ অভিযানে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে? এমনিতে ভারতীয় ব্যাটিং প্রধানত প্রথম তিন মহান ব্য়াটসম্যানের উপরই নির্ভরশীল। কিন্তু, অনেক সময়ই এই তিন ব্য়াটসম্যানের ব্য়াট না চললে চাপ-টা এসে পড়ে মিডল অর্ডারের উপর। কাজেই বিশ্বকাপে এই রকম পরিস্থিতি হলে কিন্তু শঙ্করের উপরই নির্ভর করতে হবে।
দল নির্বাচনের সময় এমএসকে প্রসাদ জানিয়েছিলেন আইপিএল-এর ফর্ম দল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে না। অনেকে বলতে পারেন ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের চালু সেই কথা, ফর্ম সাময়িক, ক্লাস চিরায়ত। আর বিজয় শঙ্করের প্রতিভা নিয়ে কারোর মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। কিন্তু শঙ্করের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাঁর অভিজ্ঞতার অভাব।
এতদিনে একদিনের আন্তর্দজাতিক ম্যাচ খেলেছেন শঙ্কর মাত্র ৯টি। বেশ কয়েকটি নজর কাড়া ইনিংস খেললেও দেখা যাচ্ছে এখনও একটি ম্যাচেও তিনি ৬৪ বলের বেশি খেলেননি। এমনকী ইংল্যান্ডের পিচ সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই। কাজেই এইরকম অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের সঙ্গে যদি ফর্ম না থাকে, তাহলে বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের চার নম্বর জায়গাটি তাঁর কাছে কন্টকময় হয়ে উঠতে পারে। কাজেই আইপিএল-এ শঙ্করের পড়তি ফর্ম দেখে এখন নির্বাচকরা কাজটা হঠকারী হয়ে গিয়েছে ভেবে আঙুল কামড়াতেই পারেন। উদ্বেগের কিন্তু যথেষ্ট কারণ রয়েছে।