সংক্ষিপ্ত

আমরা এই উমার মধ্যেই দেবী দুর্গাকে খুঁজেছি। সংসার , সন্তানসন্ততি সামলেও যিনি দশভূজা রূপে সংসারের সমস্ত প্রতিবন্ধকতা রুপী অসুরকে বধ করেছেন। 

মহিষাসুরসংহারিণী নারায়ণীর আগমনে প্রায় হারিয়ে যাওয়া একটি জীবনযাত্রার মেল বন্ধনে তুলে ধরার প্রস্তুস্তি নিচ্ছে হাতিবাগান নবীনপল্লী পুজো কমিটি। প্রতি বছরেই এই পুজো কমিটি এক অন্য স্বাদের ছোঁয়া তুলে ধরার চেষ্টা করেন দুর্গা পুজোর মাধ্যমে। পুজোর পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক দিক উন্নত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় হাতিবাগান নবীনপল্লী। এই বছরেও তার কোনও ত্রুটি হয়নি। 

এই বছরের তাদের বিষয় ভাবনা হল, "উমা আর শিবু ফেরিওয়ালা দম্পতি। পুরনো জামাকাপড়ের বিনিময়ে উমা স্টিলের বাসনপত্র মাথায় নিয়ে ফেরি করে। জীর্ণ পুরাতনের বদলে নতুনের আবাহন হয় উমার হাত ধরে। আয়নার মতো নতুন বাসনে ঝকমক করে গেরস্থের মুখ। আর অন্যদিকে শিবু পুরোনো টিভি, ফ্রিজ, আলমারি, হারমোনিয়াম, রেডিও, দেওয়াল ঘড়ি, টেপ রেকর্ডার ইত্যাদি কিনে নেয় গেরস্থের বাড়ি থেকে আবার কিছু লাভ করে বিক্রির আশায়। আগে শিবু পুরোনো শিশি, বোতল, খবরের কাগজ, লোহা ভাঙ্গা ইত্যাদিও কিনত। জিনিসপত্রের সঙ্গে গেরস্থ বাড়ি থেকে উমা আর শিবুর সঙ্গে আসে হাজারো স্মৃতি।"



এমন অনেক উমা আর শিবু আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে যাদের হাত যশে আমাদের এই ফেলনা অর্থাৎ বিসর্জন হওয়া জিনিসের অকালবোধন হয়। আমরা এই উমার মধ্যেই দেবী দুর্গাকে খুঁজেছি। সংসার , সন্তানসন্ততি সামলেও যিনি দশভূজা রূপে সংসারের সমস্ত প্রতিবন্ধকতা রুপী অসুরকে বধ করেছেন। আর শিবু যেনো ভোলানাথ। উদায়স্ত পরিশ্রমের পরেও রাতে উমার সঙ্গে বসে সারাদিনের কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়। সমাজের এই উমা আর শিবু ফেরিওয়ালা দম্পতিদের মধ্যে থেকেই দুর্গাকে স্মরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান নবীনপল্লী। তাদের মতে আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোর মধ্যে হর পার্বতী কে খুঁজে করলেই সার্থক হবে মাতৃ আরাধনা।