সংক্ষিপ্ত
প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ। এবারের থিম হলো- 'চলোমান'। প্রতি বছরই নয়া নয়া থিমে সকলকে চমকে দেয় দমদম পার্ক তরুণ সংঘ। এবারও সেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। প্রতিমা সজ্জায় সৈকত বাসু এবং সৃজনে মানস দাসের ছোঁয়ায় এই থিম হয়ে উঠবে জীবন্ত।
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গাপুজো। গোটা বছর ভর এই দিনটার জন্য মুখিয়ে থাকে বাঙালিরা। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে পুজোর কাউন্টডাউন। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা দিয়েই দুর্গাপুজোর শুভারম্ভ। ইতিমধ্যেই সাদা কাশফুল জানান দিচ্ছে মা আসছে। হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। সারা শহর আবার সেজে উঠবে আলোয়। দেবী দুর্গার আগমনে চারিদিকে যেন সাজো সাজো রব। করোনাকালে মহাসঙ্কট কাটিয়ে যেন ফের ছন্দে ফিরেছে আট থেকে অষ্টাদশী। পুজোর আনন্দে খুশির রেশ বাঙালির মনে। তার উপর বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ায় তা যেন বড় গর্বের ও আনন্দের বটে। পুজো নিয়ে বরাবরই বাঙালির একটা টানটান উত্তেজনা রয়েছে। সারা কলকাতা আলোতে সেজে উঠছে। প্যান্ডেল থেকে ঠাকুর, পুজোর থিম থেকে লাইটিং সবকিছুর প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। কোন পুজোর কী থিম তা জানতেও মুখিয়ে রয়েছেন সকলেই। প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ। এবারের থিম হলো- 'চলোমান'। প্রতি বছরই নয়া নয়া থিমে সকলকে চমকে দেয় দমদম পার্ক তরুণ সংঘ। এবারও সেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। প্রতিমা সজ্জায় সৈকত বাসু এবং সৃজনে মানস দাসের ছোঁয়ায় এই থিম হয়ে উঠবে জীবন্ত। গত ৩ রা জুলাই থেকে খুঁটিপুজোর মাধ্যমে শারদোৎসবের শুভ সূচনা হয়েছে।
১৯৮৬ সাল থেকে শুরু হয়েছিল দমদম পার্ক তরুণ সংঘের পুজো। চলতি বছরে ৩৭ তম দুর্গোৎসবে 'চলোমান' থিম নিয়ে বড় চমক দিতে চলেছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। দমদম পার্ক তরুণ সংঘের পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য দেবরাজ সিকদার জানিয়েছেন, 'চলোমান' এমন একটি বিষয় যেখানে তুলে ধরা হবে এক ভিন্ন অধ্যায়। যারা পুজো থেকে এখনও ব্রাত্য তাদের আবার মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাই করবে। মহাসঙ্কট কাটিয়ে সকলেই একটু একটু ছন্দে ফিরেছেন। সেইমতো পুজোর বাজেটও গত বছরের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সদস্য। অন্যদিকে অগ্নিমূল্য বাজারে যেভাবে জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে সবকিছুরই আগুন দাম। আর যার দিন রাত এক করে এই পুজোর জন্য খাটছেন তাদের পারিশ্রমিকটাও যাতে একটু বাড়ানো যায়, এবং তাদের সংসারটা ভাল করে চলে সেকারণেই বাজেটটা আরও বেশি করে বাড়ানো হয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা ও কোভিডের কথা মাথায় রেখেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। গত দুবছর ধরে যেভাবে মহামারিতে পুজো হয়েছে সেগুলির সবই ব্যবস্থা করা হবে। যেমন মাস্ক থেকে স্যানিটাইজার সবকিছুই থাকছে মন্ডপে। পুজোর দিনে বিশেষ কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি। আসলে ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে।
দুর্গাপুজো মানেই চমক, আর এবছরের পুরো প্যান্ডেল জুড়েই একের পর এক বড় চমক রয়েছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘে। পুজো কমিটির সদস্য আরও জানিয়েছেন ২০১৯ সালেই প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ লক্ষ মানুষের ভিড় জমেছিল দমদম পার্ক তরুণ সংঘে । এবছর আশা করা হচ্ছে সেই ভিড় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ পর্যন্ত হবে। পুজোর কটাদিন কোনও অনুষ্ঠান করে মানুষকে বিব্রত না করাই শ্রেয় বলে মনে করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। পুরো পুজোটার উপরেই ফোকাস করতে চান তারা। আজই প্রতিমা আসবে দমদম পার্ক তরুণ সংঘে, আপাতত জোর কদমে প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যেই কলকাতর সমস্ত শারদ সম্মান রয়েছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘের ঝুলিতে। ১৯৯৯ সাল থেকেই শারদ সম্মানের জন্য লড়াই শুরু করেছিল এই ক্লাব। ১৯৯৯ থেকে ২০২১ এই ২২ বছরে প্রতি বছর ৩০-৩৫ টা শারদ সম্মান পেয়ে আসছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ। তবে ২০১৮ সালে ৫৭ টা এবং ২০১৯ সালে ৫৩ টা শারদ সম্মান পায় এই ক্লাব। এই মুহর্তে কয়েকশো শারদ সম্মান রয়েছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘের ঝুলিতে। সকলের উদ্দেশ্য তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর আনন্দ তো উপভোগ করবেন পাশাপাশি সাবধানতা বজায় রেখে মাস্ক পরে, স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখার কথা বলেছেন। বিশেষত বাচ্চাদের হাত ধরে রাখার কথাও বলেছেন। এবং পুজোতে যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে সকলেই তাদের কথা মেনে চলুক। গত দুই বছরের চেয়ে আবার পুরোনো ফর্মে ফিরবে বলেই আশাবাদী পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।
আরও পড়ুন- ৮৩তম গৌরবময় দুর্গোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হরি ঘোষ স্ট্রিট সার্বজনীন
আরও পড়ুন-জমজমাট পুজোয় অদেখার যাত্রায় যেতে প্রস্তুতি চলছে সিকদার বাগান সাধারন দুর্গোৎসব কমিটির
আরও পডুন- জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো মণ্ডপে শরতে বর্ষার আমেজ, অন্য পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা