সংক্ষিপ্ত

তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে ইতিহাসের সাক্ষী শ্রীরামপুর রাজবাড়ি। একসময় এই রাজবাড়িতেই পা রেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাশ থেকে সুভাষচন্দ্র বসু, বিধানচন্দ্র রায়। 

গোস্বামী বাড়ির দুর্গাপুজোয় গান গাইতে আসতেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী, ভোলা ময়রা থেকে বাগবাজারের রূপচাঁদ পক্ষীর দল।এই বাড়ির সাথে রাজনীতির সম্পর্ক বহু প্রাচীন।এই রাজবাড়িতেই পা রেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাশ থেকে সুভাষ বসু বিধান রায়। লিখছেন সংবাদ প্রতিনিধি অনিরুদ্ধ সরকার।

তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে ইতিহাসের সাক্ষী শ্রীরামপুর রাজবাড়ি। একসময় এই রাজবাড়িতেই পা রেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাশ থেকে সুভাষ বসু বিধান রায়। এই পরিবারেরই সদস‌্য তুলসীচন্দ্র গোস্বামী পার্লামেন্টের ডেপুটি লিডার ছিলেন। তিনি অবিভক্ত বাংলায় ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন। একসময় বাংলার রাজনীতিতে যে পাঁচজনকে 'বিগ ফাইভ' বলা হত তাঁদের মধ্যে তুলসীচরণ গোস্বামী ছিলেন অন্যতম। তিনি ছাড়াও অন্য চারজন হলেন, বিধানচন্দ্র রায়, নির্মলচন্দ্র চন্দ, নলিনীরঞ্জন সরকার এবং শরৎচন্দ্র বসু। 




ইতিহাস-
নবাব আলি বর্দির খাঁ শাসনকাল। গোস্বামী পরিবারের পূর্বপুরুষ রাম গোবিন্দ গোস্বামী একদিন পাটুলি থেকে গঙ্গাবক্ষে কলকাতার উদ্দেশ্য যাত্রা করেছিলেন। স্ত্রী মনোরমা দেবীর হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। রামগোবিন্দকে স্ত্রীর জন্য শ্রীরামপুরে থামতে হয়। শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় তা জানতে পেরে তার থাকার ব্যবস্থা করেন।তারপর জমিদারি পান রামগোবিন্দ।


পুজো শুরু কবে থেকে-

পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা রামগোবিন্দ গোস্বামীর নাতি হরিনারায়ণ গোস্বামীর আমলে শুরু হয় পুজো। পরে মূল বসতবাড়ির অনুকরণে প্রাসাদ সংলগ্ন ঠাকুরদালানে রঘুরাম চালু করেন জাঁকিয়ে দুর্গাপুজো।


পুজো পদ্ধতি-
বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। রথের দিন কাঠামো পুজো হয়। তারপর একচালার প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। মায়ের ডাকের সাজ আজও বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে নিয়ে আসা হয়। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় এখনও পুরনো আমলের পিতলের ১৩৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। দশমীর দিন বাড়ির মহিলারা ঠাকুর দালানের বাইরে মাছ ও পান খেয়ে মাকে বরণ করার পর শুরু হয় বিসর্জনের প্রস্তুতি। শ্রীরামপুর রাজবাড়ি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। 


গোস্বামী বাড়ির দুর্গাপুজোয় একসময় ব্যাপকভাবে সঙ্গীতানুষ্ঠানের আসর বসত। যাতে গান গাইতে আসতেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী, ভোলা ময়রা থেকে বাগবাজারের রূপচাঁদ পক্ষীর দল।