সংক্ষিপ্ত

ভবতারিণীর মন্দির প্রাঙ্গন। দেবীর বেদী, রূপোলি সিংহাসন— কোনও কিছুতেই কোনও খুঁত নেই। দেবীর পায়ের নীচে শুয়ে থাকা মহাদেবের রূপ ধারণ করেছিলেন সুপ্রিয়।

১/২ স্টুডিয়ো নিঃঝুম! নেপথ্যে উঁচুস্বরে দেবী কালিকার স্ত্রোত্রপাঠ চলছে। সঙ্গে হালকা ঢাকের বাজনা। আরতির ঘণ্টাধ্বনি। হাতেগোনা কয়েক জন দেবীকে ঘিরে। সবার মধ্যে তিনি বিরাজমান। তিনি দক্ষিণেশ্বরের দক্ষিণা কালী, মা ভবতারিণী! ২০২২-এর কালীপুজোর আগে দেবী জীবন্ত! রূপসজ্জাশিল্পী মুক্তি রায়ের হাতের ছোঁয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবীর জীবন্ত রূপ ছড়িয়ে পড়তেই আপ্লুত কালীভক্তরা। স্পর্শের উপায় নেই। তাই সামাজিক পাতাতেই তাঁরা প্রণাম জানিয়েছেন তাঁকে। ঘুণাক্ষরেো কেউ বুঝতে পারেননি, দেবী আর মৃন্ময়ী নেই! তিনি চিন্ময়ী।

এই নিয়েই হূলুস্থূল শুক্রবারের সন্ধে। দেবী কোন আধারে জীবন্ত? রূপসজ্জাশিল্পীর সাহায্য নিয়ে এ বারেও অসাধ্যসাধন করেছেন অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। তিলে তিলে দেবী ভবতারিণী হয়ে ওঠার ভিডিয়ো বলছে, আরও এক বার তিনি প্রমাণ করলেন, চাইলে তিনি অনেক কিছু পারেন। এ দিন তাঁকেই ‘দেবী ভবতারিণী’র বিগ্রহ বলে ভুল করেছেন সবাই! প্রণাম জানিয়েছেন তাঁকেই।  
তাঁর গায়ের রং, হাঁটু ছোঁয়া চুল, শরীরের গড়ন, চোখ-নাক-মুখে নাকি দেবী কালীকার আদল স্পষ্ট! অন্তত তাঁর জন্মদাত্রী স্বরূপা দাস সে রকমই ভাবেন। তাই শ্রুতি দাস কখনও দেবী কালীকার ভূমিকায় অভিনয় করলে, দেবীর মতো সাজলে মেয়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেও দ্বিধা করেন না। অভিনেত্রীকে এই বিশেষ রূপে প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিল জি বাংলা। তাদের ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকে। দুর্গাপুজোর ঠিক আগে শ্রুতিকে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র তিন রূপে সেজে উঠতে দেখা গিয়েছিল। সেখানেও তাঁর একটি রূপ, দেবী কালিকা। তখন তাঁকে দেখে তাঁর মা বলেছিলেন, ‘‘আমার মেয়ে যেন আমাদের অঞ্চল কাটোয়ার প্রসিদ্ধ ক্ষেপি মা!’’ কালীপুজোর আগে অভিনেত্রী আরও এক বার তাঁর আরাধ্য দেবীর রূপই ধারণ করলেন।



 

কী ভাবে তিনি মানবী থেকে দেবী হয়ে উঠলেন? ভিডিয়ো বলছে, গায়ের রং বদলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পীর রূপটানে শ্রুতি ধীরে ধীরে দক্ষিণা কালী হয়ে উঠেছেন। তাঁর বন্ধ দুচোখের পাতায় আঁকা দেবীর খোলা দুই চোখ। অর্থাৎ, সাজ থেকে শ্যুটিং পর্যন্ত তাঁকে দু’চোখ বন্ধ রেখে কাজ করে যেতে হয়েছে! ওই অবস্থাতেই তিনি শাড়ি, ভারী গয়না, মুকুটে সেজেছেন। তাঁকে সাজানোর পাশাপাশি সেজে উঠেছে দেবী ভবতারিণীর মন্দির প্রাঙ্গন। দেবীর বেদী, রূপোলি সিংহাসন— কোনও কিছুতেই কোনও খুঁত নেই। দেবীর পায়ের নীচে শুয়ে থাকা মহাদেবের রূপ ধারণ করেছিলেন সুপ্রিয়। সবার সাজ, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলে শ্রুতিকে ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। তারপর তাঁকে দাঁড় করানো হয় বেদীর উপরে। আলো-আঁধারি পরিবেশে। হাতের বরাভয় মুদ্রা থেকে বাঁ হাতের খাঁড়া— সব সাজিয়ে দেন রূপটানশিল্পী এবং বাকিরা। এ ভাবেই চিত্রগ্রাহক অমিত চক্রবর্তীর ক্যামেরায় শ্রুতি জীবন্ত দেবী প্রতিমা! 
 

হঠাৎ কেন এমন ভাবনা মুক্তির? ফেসবুকে নিজের কাজ সম্বন্ধে সবিস্তার জানিয়েছেন শিল্পী। লিখেছেন, ‘এত বছরের স্বপ্ন আজ পূর্ণ হল। দু’বছর দীর্ঘ পরিকল্পনার পর এ বছর কাজটি সম্পন্ন হল। আসলে মা না চাইলে মনে হয় আমার পক্ষে এই কাজটা করা সম্ভব হত না। এত পরিশ্রমের জন্য আমার দলের সবাইকে বুক ভরা ভালবাসা। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন। আপনাদের ভালবাসা, আশীর্বাদ একান্ত কাম্য।’ মুক্তির সঙ্গে এই কাজে যুক্ত ছিলেন, স্বরূপ দাস, প্রিয়ম বক্সি, অভিজিৎ, সঞ্জীব পাল প্রমুখ। অভিনেত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে এশিয়ানেট নিউজ বাংলা যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল শ্রুতির সঙ্গেও। কিন্তু এ দিন তিনি দেবীর মতোই অধরা!

আরও পড়ুন-
চোখের নিচে সদ্য অস্ত্রোপচারের নীল রেখা, 'সেনাপতি' অভিষেকের সুস্থতার খবরে তৃণমূল শিবিরে উচ্ছ্বাসের ঢল
প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া, শহরের পাশাপাশি কালীপুজোর রাতে কি বিপদ জেলাগুলিতেও?
'কার কোন ধর্ম, সেটা দেখতে হবে না, ঘৃণাপূর্ণ মন্তব্য করলেই পদক্ষেপ নিন,' পুলিশকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের