সংক্ষিপ্ত

অভিনেতা কলকাতায় উপস্থিত থাকলে কী পদক্ষেপ করতেন? প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হতেন?
 

তিনি শহরে নেই। চলতি মাসের গোড়া থেকেই মধ্যপ্রদেশের ভোপালে। সেখানে পবন ওয়াদেয়ারের প্রথম হিন্দি ছবি ‘নোটারি’র শ্যুটিংয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত। তার মধ্যেই শনিবার এশিয়ানেট নিউজ বাংলার সঙ্গে কথা বললেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশি হেনস্থার কড়া নিন্দা করলেন তিনি। বছরের বেশির ভাগ সময় পরমব্রত হয় পরিচালনায় ব্যস্ত, নয় অভিনয়ে। পেশার টানে অনবরত ছুটছেন বিভিন্ন জায়গায়। সে কথা জানিয়ে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষে থেকে আমায় শুক্রবার হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠানো হয়েছিল। শ্যুটিংয়ের চাপে সেটি দেখতে পারিনি। প্রকৃত ঘটনা সবিস্তার জেনেছি শুক্রবার রাতে। জানার পরেই ব্যক্তিগত ভাবে ভীষণ খারাপ লেগেছে।’’
অভিনেতার মতে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতার দৃষ্টি দিয়ে পুরো ঘটনার বিশ্লেষণ করা উচিত। চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দেওয়ার প্রশাসনিক তৎপরতা অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে বহাল থাকলে তিনি নাগরিক হিসেবে বেশি নিশ্চিন্ত হতেন। পরমব্রত মনে করেন, অন্য ভাবেও এই সমস্যা মেটানো যেতে পারত। বদলে রাতের অন্ধকারে আন্দোলনকারীদের এ ভাবে সরিয়ে দেওয়াকে তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। সামনেই রাজ্যজুড়ে আলোর উৎসব দীপাবলি। তার আগে রাজ্যেরই অধিবাসীদের সঙ্গে পুলিশের এই আচরণ কতটা কাঙ্খিত? এই পদক্ষেপ কি আদৌ শাসলদলের পক্ষে গেল? প্রশ্ন রেখেছিল এশিয়ানেট নিউজ বাংলা।
‘অভিযান’ ছবির পরিচালকের দাবি, ‘‘কোনও ভাবেই এই আচরণ কারওর কাছেই কাঙ্খিত নয়। আমি শহরে নেই। কিন্তু দেখছি, অনেকেই অনেক যুক্তি দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, ১৪৪ ধারা জারি ছিল। কেউ বলছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল। পুলিশ আগে মাইকিং করেছিল। তার পরেও বলব, করুণাময়ীতে একটি ন্যায্য দাবিতে ধর্ণা হচ্ছিল। এবং সেটি গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। রাতের অন্ধকারে সেই আন্দোলনকে জোর করে তুলে দেওয়ায় কোথাও যেন গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হল। আমি একেবারেই ভাল চোখে দেখছি না।’’ অভিনেতা কলকাতায় উপস্থিত থাকলে কী পদক্ষেপ করতেন? প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হতেন? পরমব্রতর জবাব, ‘‘যে কেউ যখনতখন চাইলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। আমি তো নইই। তবে শহরে থাকলে শাসকদলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতাম।’’

আলোচনায় তিনি সাফ জানাতেন, যে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক চলছে সেই বিষয়টিকে রাতের অন্ধকারে এ ভাবে জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা একেবারেই কাম্য নয়। বিশেষ করে গোটা রাজ্য যখন আগে থেকেই এসএসসি কেলেঙ্কারিতে উত্তপ্ত। শুক্রবারের আগে পর্যন্ত এই অন্যায়ের প্রতিবাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল। শুক্রবার প্রতিবাদে পথে নামেন বাদশা মৈত্র, শ্রীলেখা মিত্র এবং অন্যান্যরা। ফেসবুক, টুইটারে এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ কতটা সম্ভব? সঙ্গে সঙ্গে টানটান জবাব পরমব্রতর, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে বা বক্তব্য রেখে এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ হয় না। সেটা রাজ্য সরকারের হোক বা কেন্দ্রীয় সরকারের। সোশ্যাল মিডিয়া জনমত তৈরি করে দিতে পারে মাত্র। সেই জনমত ভুল দিকেও যেতে পারে। যেমন, বয়কট ট্রেন্ড। অথবা নানা হিংসাত্মক ঘটনার দ্রুত বিস্তার। আবার ভালও হয়। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব কম সক্রিয়। তাই এর ভাল-মন্দ নিয়ে কিছুই বলব না।’’