সংক্ষিপ্ত
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল অভিবাসী শ্রমিকদের নির্যাতনের ভিডিও। আসুন দেখেনি সত্যি কি তামিলনাড়ুতে আক্রান্ত দেশের শ্রমিকরা।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে- যেখানে দাবি করা হয়েছে অভিবাসী বা পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে। কখনও ট্রেনে কখনও আবার রাস্তায়। ভিডিওগুলিতে দাবি করা হয়েছে অভিবাসনের কারণে তামিলনাড়ুর স্থায়ী বাসিন্দাদের চাকরি চলে যাচ্ছে নয়তো তারা চাকরি পাচ্ছেন না। আর সেই কারণেই স্থানীয়রা অভিবাসীদের ওপর চড়াও হচ্ছে- এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। আসুন দেখি এই দাবি কতটা সত্য?
ভাইরাল ভিডিওর বক্তব্যঃ
এজাতীয় একাধিক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই স্থানীয় জিআরপি ভিলুপরম থেকে ৩৮ বছর বসয়ী মাহিমাইদাস নামে এক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করেছে। তেমনই দাবি করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পরে এজাতীয় অভিযোগ তুলে আরও বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যার অধিকাংশতেই হিন্দিতে ক্যাপশান দেওয়া হয়েছে। একাধিক ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়েছে তামিলনাড়ুতে হিন্দিভাসীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে পরপর । কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নীরব উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও বিহার সরকার। টুইটারে ব্লুটিক ব্যবহারকারী মহম্মদ তানভির নামে এক ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি এখানে রইল। যদিও এখন আর সেই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আসল ঘটনাঃ
একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কয়েক জন মুখোশধারী ব্যক্তি হাতে অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে হামলা করছে। ভিডিওটিতে একটি তামিলভাষার সাইন বোর্ডও রয়েছে। যাতে স্পষ্ট ঘটনাস্থল তামিলনাড়ু। সেখানে লেখা রয়েছে শ্রীরাম জেরক্স। এই সূত্র ধরেই গুগল সার্চে থেকে জানতে পেরেছি এই জেরক্স সেন্টার রয়েছে কোয়েম্বাটুরে। তারপরে কোয়েম্বাটুর নিয়ে আরও সার্চ করতেই স্পষ্ট যে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সেখানে গ্যাংওয়ার হয়েছিল। দি হিন্দু সংবাদপত্র তার রিপোর্টও করেছে। প্রতিবদেন বলা হয়েছে প্রচুর লোকের সামনেই দুই জনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুষ্কৃতীরা। তবে গোটা ঘটনাই দুই দুষ্কৃতীদলের সদস্যদের মধ্যে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের কারণে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও বিস্তারিত তথ্যঃ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আদালত চত্ত্বরের সামনে ২৪ বছর বসয়ী এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি তার বন্ধু মনোজকে নিয়ে আদালতে এলে পাঁচ দুষ্কৃতী তাদের ওপর চড়়াও হয়ে। যাকে মারধর করা হয় তার নাম গোকুল। সেই ব্যক্তি আবার ২০২১ সালে সর্বানামপট্টির কাছে ২২ বছরের এক যুবকতে হত্যা করেছিল। তারই প্রতিশোধ নিতে এই হামলা।
অভিবাসী বা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যোগ নেইঃ
এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট যে ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে কোয়েম্বাটুরের ঘটনার কোনও যোগ নেই। এখানে ভিক্টিম একটি হত্যাকাণ্ডের অপরাধী।
পুলিশের বিবৃতিঃ
তামিলনাড়ু পুলিশের একটি বিবৃতিও পাওয়া গেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে গোটা সম্প্রতি অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের যেসব ভিডিও ভাইরাল গয়েছে সেগুলি অতীতের, অভিবাসীদের সঙ্গে এই ক্লিপগুলির কোনও যোগাযোগ নেই। ঘটনাগুলি গ্যাংওয়ারের।