সংক্ষিপ্ত

  • বাসের মধ্যেই তৈরি ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ 
  • মিলবে তন্দুর থেকে চাইনিজ ও বাঙালি খাবার
  • একসঙ্গে ৫০ জনের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে
  • অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে এই রেস্তরাঁ

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বদলেছে অনেক কিছুই। আড্ডা, আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়া, অনুষ্ঠান, স্কুল-কলেজে যাওয়া সবই এখন অতীত বললেই চলে। চার দেওয়ালের মধ্যে থমকে গিয়েছে জীবন। হারিয়ে গিয়েছে স্বাভাবিক ছন্দ। আর করোনা সংক্রমণের উপর রাশ টানতে রাজ্য সরকারের তরফে জারি হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। এর জেরে এই কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। অনেকেরই দু'বেলা পেটভরা খাবারও ঠিকমতো জুটছে না। আর সেই সব মানুষের কথা ভেবে এক নয়া উদ্যোগ নিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-২ ব্লকের পাহাড়হাটি এলাকার বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল। অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে বাসের মধ্যেই একটা আস্ত রেস্তরাঁ বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। 

আরও পড়ুন- শরীরে জমেছে মেদ, পেটের থলথলে চর্বি কমাতে ব্রেকফাস্টে ভুলেও খাবেন না এই ৫ খাবার

দূর থেকে দেখলে বাসটিকে কোনও এক রেস্তরাঁ বলেই মনে হবে। বাসের মাথার উপর লাগানো রয়েছে রং বেরঙের ছাতা। তার সঙ্গে রয়েছে বসে খাওয়ার জায়গাও। তন্দুর থেকে চাইনিজ, বাঙালি খাবার সবই পাওয়া যাবে এক ছাদের তলায়। এই বাসের মধ্যে একসঙ্গে প্রায় ৫০ জনের মতো বসে খেতে পারবেন। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করার পর অসহায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য এই অভিনব রাস্তা বাতলেছেন পার্থ। ভ্রাম্যমাণ এই রেস্তোরাঁর নাম দিয়েছেন 'ইন্দো কন্টি'। বুধবার মেমারির পাহাড়হাটি বাজার এলাকা থেকেই শুরু হয়েছে পার্থর এই রেস্তরাঁর পথচলা। তাঁর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

আরও পড়ুন- ৯০ থেকে একলাফে ১৮ কেজি, জানেন কীভাবে ওজন কমিয়ে নিজের যৌবন ধরে রেখেছেন নীতা আম্বানি

অনেক দিন ধরেই এই রেস্তরাঁ খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন পার্থ। কিন্তু, কাজের জন্য বাইরে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন চেন্নাই, গোয়া ও দুবাইতে ছিলেন তিনি। কিন্তু, করোনার প্রথম ঢেউয়ের দাপটে কাজ হারান। আটকে পড়েছিলেন দুবাইতে। অনেক কষ্ট করে কোনওরকমে দেশে ফেরেন। তারপরই দীর্ঘদিনের সুপ্তভাবনাকে বাস্তবের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। শুরু করেন কাজ। এরপরই বাসের মধ্যেই তৈরি করে ফেলেন আস্ত একটি রেস্তরাঁ। এই রেস্তরাঁর মাধ্যমে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। তার এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এর ফলে প্যানডেমিকের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেও আয়ের মুখ দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই। আর এই রেস্তরাঁর ফলে যেমন বহু মানুষের বাড়িতে তিনি খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, ঠিক তেমনই অসহায় মানুষদের মুখেও খাবার তুলে দিচ্ছেন তিনি। তবে করোনার যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনেই কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন পার্থ। এই মুহূর্তে শুধুমাত্র মেমারির পাহাড়হাটি এলাকা, মেমারি স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় চলছে 'ইন্দো কন্টি'। তবে আগামীদিনে বর্ধমান শহরের অলিতে গলিতে 'ইন্দো কন্টি'-র পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পার্থ।