সংক্ষিপ্ত

  • ক্রীড়া বিশ্বে থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস
  • সবথেক বেশি করোনা আক্রান্ত ফুটবলাররা
  • সেই তালিকায় রয়েছে একাধিক তারকার নাম
  • বছর শেষে আরও একবার দেখা যাক পরিসংখ্য়ান
     

২০২০ সালটা ক্রীড়া বিশ্বের ক্ষেত্রেও খুব একটা সুখকর নয়। অন্যান্য খেলার থেকে বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস সব থেকে বেশি থাবা বসিয়েছিল ফুটবল জগতে। কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন একের পর এক ফুটবল তারকা। সেই তালিকায় নাম রয়েছে রোনাল্ডো, নেইমার, সুয়ারেজদের মত মহা তারকাদেরও। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে খেলার মাঠ ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ২০২০ বছর শেষে এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক ফুটবল বিশ্বে নিজের মারণ থাবা কতটা বিস্তার করেছিল মারণ ভাইরাস।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-
বিশ্ব ফুটবলকে নাড়িয়ে দিয়ে সামনে এসেছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর। সুইডেনের বিরুদ্ধে নেশনস লিগের ম্যাচের অগে পর্তুগাল প্লেয়ারদের করোনা টেস্ট করা হয়। সেখানেই পজেটিভ ধরা পড়েন সিআরসেভেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারনে নেশনস লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম সাক্ষাতে বার্সার বিরুদ্ধেও মাঠে নামতে পারেননি রোনাল্ডো। করোনা মুক্ত হতে অন্যান্যদের থেকে একচু বেশি সময় লাগে ফুটবল মহা তারকার।

 

নেইমার জুনিয়র-
 চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হারের হতাশা ঝেড়ে ফেলতে সতীর্থদের সঙ্গে পার্টি করতে ইবিজায় গিয়েছিলেন নেইমার। সেই পার্টির পরেই করোনা পজেটিভ আসে ব্রাজিলিয়ান তারকা সহ আরও বেশ কয়েক জন পিএসজি  তারকার।  ক্লাবের পক্ষ থেকে তিনজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেও নেওয়া হয়। করোনা আবহে পার্টি করতে যাওয়ার কারণে সমালোচনার সম্মুখীনও হতে হয় নেইমার সহ অন্য়ান্য পিএসজি প্লেয়ারদের।

 

লুইস সুয়ারেজ-
২০২২ কাতার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয় উরুগুয়ে দলের তারকা স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। শুধু সুয়ারেজ নয় উরুগুয়ে ফুটবল দলের একাধিক প্লেয়ার সহ কোচিং স্টাফরা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হন। কোভিড প্রোটোকল না মানর জন্যই এই বিপদের মধ্যে পড়তে হয় গোটা গলকে। নিজেদের ভুলের জন্য পরবর্তী সময়ে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ।

 

পাওলো দিবালা-
করোনা আক্রান্ত হন আর্জেন্টিনা ও জুভেন্তাসের আরও এক তারকা প্লেয়ার পাওলো দিবালা। তবে একবার নয় দুবার করোনা আক্রান্ত হন তিনি। সঙ্গে আক্রান্ত হন তার বান্ধবীও। সোশাল মিডিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিজেই জানিয়েছেন দিবালা।  যেখানে তিনি লেখেন, ‘‘সকলকে জানাতে চাই, কিছু আগেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এল। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওরিয়ানা ও আমি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছি। তবে ভাল অবস্থাতেই রয়েছি।’’ করোনা মুক্ত হয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন দিবালা। 

 

ড্যানিয়েল রুগানি-
জুভেন্তাসের প্রথম প্লেয়ার হিসেবে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ড্যানিয়েল রুগানি। সেই সময় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা ফুটবল বিশ্বে। আইসোলেশনে চলে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো সহ একাধিক প্লেয়ার। রুগানিকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করা হয়। ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছিল রুগানির করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা। সোশ্য়াল মিডিয়ায় রুগানি নিজেও জানিয়েছিলেন করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা। যদিও দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

 

মাতুইদি-
তারকা ফুটবলারদের করোনা আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছেন ২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী দলের তারকা প্লেয়ার মাতুইদি। জুভেন্টাসের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মাতুইদি। করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসার পরই আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছিল মাতুইদিকে। বেশ কিছু দিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন ফরাসী তারকা।

 

ফেলাইনি-
বিশ্ব মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বেলজিয়ামের তারা ফুচবলার মাতুইদি। দীর্ঘদিন ম্যান ইউতে কাটানোর পরই এই মরসুমেই চিনের ক্লাব শ্যানডং লুয়েনেং-এ সই করেছিলেন ফেলাইনি। ক্লাবের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফেলানির করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করা। বেশ কিছু দিন চিনের হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর করোনা মুক্ত হন ফেলাইনি।

 

মাইকেল আর্তেতা-
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম নাম করা ক্লাব আর্সেনালের কোচ মাইকেল আর্তেতা।  করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ ফল আসার পর ৩৭ বছর বয়সী আর্সেনাল কোচ বলেন, ‘এটা সত্যিই হতাশাজনক। শারীরিকভাবে খারাপ অনুভব করায় আমি পরীক্ষা করিয়েছিলাম। ক্লাব আমাকে যখন অনুমতি দেবে তখন থেকেই আবার কাজে ফিরব।’ বেশ কিছুদিন আইসোলেশনে থাকার পর সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরেন আর্তেতা।

 

মালদিনি করোনা-
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ইতালির সর্বকালের সেরা ডিফেন্ডারদের মধ্যে অন্যতম প্রাক্তন প্লেয়ার পাওলো মালদিনি। ইতালির ক্লাব এসি মিলানের হয়ে খেলতেন তিনি।  মালদিনি একাই নন, আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর ছেলে ড্যানিয়েলও। যিনি বর্তমানে এসি মিলানের ফুটবলার। মালদিনির অবস্থা সঙ্কটজনকও হয়েছিল। তবে চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

 

করোনায় মৃত্যু-
বিশ্ব মরামারী করোনা ভাইরাস কেড়েছে একাধিক ফুটবলারের প্রাণও। স্পেনে এক তরুণ ফুটবলারের মৃত্যু হয়। নাম ফ্রান্সিসকো গার্সিয়া। পাশাপাশি প্রয়াত হয়েছেন ইরাকের ফুটবল কিংবদন্তি আহমেদ রাধি। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে ইরাকের হয়ে একনমাত্র গোলদাতা আহমেদ রাধি। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে গোল তাকে জাতীয় হিরোর তকমা এনে দিয়েছিল। এছাড়াও প্রয়াত হয়েছেন,প্রাক্তন আফ্রিকান তারকা ফুটবলার আব্দুল কাদির মহম্মদ ফারার। কনফেডারেশন অব আফ্রিকান ফুটবল  এবং সোমালি ফুটবল ফেডারেশন ঘোষণা করে দেশের তারকা ফুটবলারের মৃত্যুর কথা। এছাড়াও একাধিক দলের একাধিক প্লেয়ার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ইপিএল, লা লিগা, বুন্দেস লিগা, সিরি আঁ সহ বিশ্বের একাধিক ফুটবলার রয়েছে সেই তালিকায়। নতুন বছরে ফুটবল ফিরুক তার চেনা ছন্দে। সেই কামনাই করছেন সকলে।