সংক্ষিপ্ত

রবিবার মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্য়ান্ডি হাসপাতালে প্রয়াত হন  কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। সুর সম্রাজ্ঞীর স্মৃতি চারণায় (Remembering Lata Mangeshkar)গোটা দেশ। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের (East Bengal Club) আজীবন সদস্যপদ পেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। জানুন সেই কাহিনি।
 

রবিবার প্রয়াত হয়েছেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। ২৭ দিন মুম্বইের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের 'নাইটঅ্য়াঙ্গেল'। লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণের পর কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পীর স্মৃতিচারণায় (Remembering Lata Mangeshkar) গোটা দেশ। গানের পাশাপাশি ক্রীড়াপ্রেমি হিসেবেও লতা মঙ্গেশকরের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। সে ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলকে (Indian Cricket Team)নিজেক উদ্যোগে সংবর্ধনা দেওয়া থেকে মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ক্রিকেট প্রেমের পাশাপাশি ফুটবলের প্রতিও লতাজির কম প্রেম ছিল না। বাংলা বড় ক্লাবের প্রতি ছিল অবদানও। অনেকেরই হয়তো অজানা নব্বইয়ের দশকে একবার অর্থ সঙ্কটে দল গড়তে হিমসিম খাওয়া ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে (East Bengal Club)সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সুর সম্রাজ্ঞী।

ঘটনা সেই ১৯৮৮ সালের। কলকাতা ময়দানে তখনও স্পনসরেরে মাধ্যমে দল গড়ার প্রচলন শুরু হয়নি। ক্লাব কর্তা ও সমর্থকদের উদ্যোগেই চলত ক্লাবগুলি। কিন্ত ইস্টবেঙ্গলের মত বড় ক্লাব চালাতে গিয়ে সেই আর্থিক দিক থেকে খুব খারাপ সময় এসেছিল। দল গড়তে গিয়ে রীতিমত নাকানি চোবানি খেতে হচ্ছিল ক্লাব কর্তাদের। কোথা থেকে অর্থ আসবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সেই সময় ক্লানের সচিব ছিলেন সুপ্রকাশ গড়গড়ি।  তার সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের ভালো সম্পর্কের কথা অনেকেরই জানা। ব্যক্তিগতভাবে একে অপরকে চিনতেন। আর্থিক সমস্যা মেটাতে ক্লাবের বৈঠকে লতা মঙ্গেশকরতে দিয়ে বিচিত্রা অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব দেন সুপ্রকাশ গড়গড়ি। এক মাত্র উপায় এটিই থাকায় অন্যান্য ক্লাব কর্তারা সুপ্রকাশ গড়গড়ির প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।

তারপরেই ছিল রোভার্স কাপ। ইস্টবেঙ্গল দলের সঙ্গে মুম্বইতে গিয়ছিলেন সুপ্রকাশ গড়গড়ি। দেখা করে লতা মঙ্গেশকরকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন অনুষ্ঠান করার।ক্রাবেপ আর্থিক দুর্দশার কথা শুনে রাজি হয়ে যান 'সুরসম্রাজ্ঞী'। নাম মাত্র পারিশ্রমিকে করেছিলেন অনুষ্ঠান। গান গেয়েছিলেন অমিত কুমারও। এক সাক্ষাৎকারে সুপ্রকাশ গড়গড়ি বলেছিলেন,'১৯৮৮ সাল। ইস্টবেঙ্গল দল নিয়ে মুম্বই গেলাম। রোভার্সে খেলা। বললাম দিদি, আপনাকে আমার জন্য একটা অনুষ্ঠান করে দিতে হবে। এই অনুষ্ঠান হবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। আর্থিক সংকট চলছে। দিদি আমার প্রস্তাব কখনও ফেলতে পারেননি। তাই বলেই দিলেন, ঠিক আছে করব। দিদিকে নিয়ে এসে আমরা সেবার তুলেছিলাম প্রায় কুড়ি লাখ টাকা।' ময়দানে আর কোনও ক্লাবের হয়ে কখনও অনুষ্ঠান করেননি  লতা মঙ্গেশকরের। ক্লাবের তরফ থেকে কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পীকে দেওয়া হয়েছিল আজীবন সদস্য পদ।

 

 

রবিবার লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণের খবর আসার পর শোকস্তব্ধ ময়দানের লাল-হলুদ তাবু। ক্লাবের তরফ থেকে শোক প্রকাশ করা হয় সুর সম্রাজ্ঞার প্রয়াণে। ছবিতে মাল্যদানের পাশাপাশি অর্ঝনমিত করে রাখা হয় ক্বাবের পতাকা। নব্বইয়ের দশকে কীভাবে ইস্টবেঙ্গলকে ক্লাবের দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর স্মৃতি চারণায় উঠে আসে সেই প্রসঙ্গও।