সংক্ষিপ্ত
প্রকাশিত হল সর্ববভারতীয় ফুটবল সংস্থার (All India Football Federation) নির্বাচনের ফলাফল (Election Result)। প্রত্যাশা মতই কল্য়াণ চৌবের (Kalyan Chaubey) কাছে হারতে হল বাইচুং ভুটিয়াকে (Bhaichung Bhutia)। প্রাক্তন তারকা স্ট্রাইকারকে ৩৩-১ ব্যবধানে হারালেন প্রাক্তন গোলরক্ষক।
লড়াইটা যে শুধু নামমাত্র ছিল তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। ফল প্রকাশের পর তা স্পষ্ট হয়ে গেল। বিগত একমাসে নানা নাটকীয় পটপরিবর্তনের পর অবশেষে সরর্ভারতীয় ফুটবল সংস্থার নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন কল্যাণ চৌবে। নির্বাচনে তিনি হারালেন বাইচুংকে ভুটিয়াকে। ৩৩-১ ব্যনধানই স্পষ্ট বলে দিচ্ছে এআইএফএফের নির্বাচনে কতটা অ্যাডভান্টেজে ছিলেন কল্যাণ চৌবে। বাইচুং ঘনিষ্ঠরা এই জয়কে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বললেও সেই সকল বিষয় গ্রাহ্য করতে নারাজ প্রাক্তন ফুটবলার তথা বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পর কল্যাণ চৌবে। ভারতীয় ফুটবলের প্রশাসনিক মসনদে। একইসঙ্গে একদিকে দেশের দুই অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট ও ফুটববলের মসনদে দুই বাঙালি। ক্রিকেটে বিসিসিআইয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় ও ফুটবলে এআইএফএফে কল্যাণ চৌবে।
তবে ভারতীয় ফুটবলে প্লেয়ার হিসেবে হোক প্রসাসনিক বিষয়ে সাফল্য এত সহজে আসেনি কল্যাণ চৌবের। ১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন কল্যাণ চৌবে। ছোট বেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল তার। গোল করার থেকে গোল বাঁচাতে ভালোবাসতেন। সেখান থেকেই গোলকিপার হয়ে ওঠা। ১৯৯৫ সালে টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক হন। ফুটবলকেই কেরিয়ার হিসেনে বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালে ইরানে অনূর্ধ্ব-১৭ এশীয় যুব প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬-এ দক্ষিণ কোরিয়ায় অনূর্ধ্ব-২০ এশীয় যুব প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেন। ফুটবলে অল্প সমেই যথেষ্ট নামডাক করেন তিনি। কলকাতার দুই প্রধান মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দুই দলেই খেলেছেন। তবে লাল-হলুদ জার্সিতে বেশি সময় কাটিয়েছেন। ১৯৯৬-৯৭ সালে খেলেন সবুজ-মেরুণ জার্সিতে। এরপর ৩ বছর খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলে। এছাড়া বেঙ্গল মুম্বই, সালগাঁওকর, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবেও খেলেছেন। জার্মানির দুই দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাবে ট্রায়ালও দিয়েছিলেন কল্যাণ। সন্তোষ ট্রফিতে খেলেছেন বাংলা ,ঝাড়খণ্ড, গোয়া, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্রের হয়। ১৯৯৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলে। কিন্তু ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। ১৯৯৭-৯৮ এবং ২০০১-০২ সালে ভারতের সেরা গোলরক্ষকের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন কল্যাণ চৌবে।
ফুটবল অন্ত প্রাণ কল্যাণ চৌবে নিজের বুট জোড়া তুলে রাখার পর রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১৫ সালে তিনি যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। ফুটবল কেরিয়ারের মতন রাজনীতিতে কঠিন লড়াই চালান তিনি। ২০১৯ সালে ২০২১ সালে দুবাপ ভোটে দাঁড়িয়েও হারে মুখ দেখতে হয় কল্যাণকে। ২০১৫ সালে যোগ দেন বিজেপি-তে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রর কাছে হেরে যান। এর পর ২০২১ বিধানসভা ভোটে মানিকতলা থেকে বিজেপি প্রার্থী হন। সেখানে হারেন তৃণমূলের সাধন পাণ্ডের কাছে। ফলে রীজনীতির ময়দানে আসছিল না খুব একটা সাফল্য। তারপরই এবার ফুটবলের প্রশাসনিক বিষয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। আর সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি দাঁড়িয়ে প্রথমবারেই বাজিমাত করলেন চৌবে। এবার ভরতীয় ফুটবলকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য তার।