- Home
- Entertainment
- Bollywood
- ১৩ বছরে বিয়ে করেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ, নিজের অদম্য ইচ্ছাতেই বলিউডের মাস্টারজি হয়ে উঠেছিলেন সরোজ
১৩ বছরে বিয়ে করেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ, নিজের অদম্য ইচ্ছাতেই বলিউডের মাস্টারজি হয়ে উঠেছিলেন সরোজ
বি-টাউনে একের পর এক দুঃসংবাদ। ইরফান খান, ঋষি কাপুর, ওয়াজিদ খান, সুশান্ত সিং রাজপুতের পর গতকাল গভীর রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন বলিউডের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টিনসেল টাউনে। কোরিওগ্রাফির জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত জীবনও ট্র্যাজেডির মতোন। ১৩ বছর বয়সে বিয়ে, তারপর মুসলিম ধর্ম গ্রহণ, সন্তানের মৃত্যু, স্বামীর গোপন সম্পর্ক এই সমস্ত যন্ত্রণা সহ্য করেও নিজের মনের অদম্য ইচ্ছেতেই আজ তিনি বলিউডের মাস্টারজি।
- FB
- TW
- Linkdin
গতকাল গভীর রাতে প্রয়াত হলেন সকলের প্রিয় মাস্টারজি সরোজ খান। ১৭ জুন থেকেই বান্দ্রার গুরুনানক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গতকাল গভীর রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন সরোজ খান। নিজের হাতে করে যাদের বি-টাউনে গড়েছিলেন সেই কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টিনসেল টাউনে।
২ হাজারের বেশি গানে কোরিওগ্রাফি করেছেন সরোজ। বলিউডে চার দশকের বেশি সময় ধরে জড়িত ছিলেন তিনি। বলিউডের একটা যুগের অবসান হল তার মৃত্যুতে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
কেরিয়ার জীবনে সাফল্যের পিছনেও রয়েছে এক গভীর ইতিহাস। মাত্র ৩ বছর বয়সেই পেটের দায়ে কাজে নামতে হয়েছিল সরোজকে। জীবনের হাজারো চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি বলিউডের অন্যতম সফল কোরিওগ্রাফার।
খুব কম লোকেই জানেন সরোজ খানের আসল নাম নির্মলা নাগপাল। তার বাবার নাম কিশনচাঁদ সাধু সিংহ ও মায়ের নাম ননি সাধু সিংহ। দেশভাগের পরই পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন সরোজের পরিবার। মাত্র ৩ বছর বয়স থেকেই শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন সরোজ খান। তারপর থেকেই শুরু হয় জীবনের আসল যুদ্ধ।
৫০ এর দশক থেকেই ব্যাকগ্রাউন্ড শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন সরোজ। কোরিওগ্রাফার বি শোহনলালের কাছেই নাচের তালিম নিতেন সরোজ। সালটা ১৯৭৪ । 'গীতা মেরা নাম' ছবিতে কোরিওগ্রাফির মাধ্যমেই বলিউডে অভিষেক হয় সরোজ খান। তারপর একের পর এক ছবিতে কোরিওগ্রাফি করেছেন সরোজ খান।
গুরুর কোরিওগ্রাফিতেই তখন নাচ করতেন সরোজ। তারপর নাচের গুরু বি শোহনলালের সঙ্গে গাটছড়া বেঁধেছিলেন তিনি। বয়স তখন মাত্র ১৩। শোহনলাল তখন ৪১। সেই ১৩ বছর বয়সেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন সরোজ খান। সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছাতেই তা তিনি গ্রহণ করেছিলেন।
২৮ বছরের বড় শোহনলালের সঙ্গে সংসার পাতলেন সরোজ। সরোজের আগেও একটি বিয়ে ও চারটি সন্তান ছিল তার। সেকথাও সরোজকে গোপন করেছিলেন শোহনলাল। এটি ছিল তার দ্বিতীয় বিবাহ।
কিন্তু শোহনলালের সঙ্গে সংসার সুখের ছিল না সরোজের। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই প্রথম সন্তান রাজু খানের জন্ম হয়। ফের দু বছরের মাথায় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সরোজ। কিন্তু মাত্র ৮ মাসের মাথাতেই সেই সন্তানের মৃত্যু হয়। ফের এক কন্যাসন্তানের হয় সরোজের। যার নাম হিনা খান।
দুই সন্তানদের নিজের নামের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন শেহনলাল। তারপর থেকেই দূরত্ব তৈরী হয় সরোজ ও শোহনলালের মধ্যে।
সম্পূর্ণ একার প্রচেষ্টাতেই দুই সন্তানকে মানুষ করেন সরোজ খান। মানসিক ভাবে ভেঙে না পড়ে নিজের লক্ষ্যে স্থির রেখেই আজ তিনি বলিউডের মাস্টারজি। তার হাত ধরে বলিউডে নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল।