- Home
- Entertainment
- Bollywood
- জীবনে এসেছে বহু পুরুষসঙ্গী, একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে রীতিমতো যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলেন মধুবালা
জীবনে এসেছে বহু পুরুষসঙ্গী, একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে রীতিমতো যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলেন মধুবালা
- FB
- TW
- Linkdin
'বলিউডের মেরিলিন মনরো'। সকলেই জানেন তিনি এক ও অদ্বিতীয় সবার প্রিয় বলিউড কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালা (Madhubala)। যিনি নিজের সৌন্দর্যের রহস্যে আজও বহু প্রেমিকের হৃদয়ে অবিচল হয়ে রয়ে গেছেন। চিরকালীন হার্টথ্রব অভিনেত্রী মধুবালার সৌন্দর্যে মোহিত বহু পুরুষ। ভারতীয় সিনেমার সেরা সুন্দরীর তকমা যেন আজীবন তার নামের সঙ্গে জুড়ে থাকবে। প্রকৃত সুন্দরী বলতে গেলে যা বোঝায় তিনি হলেন সেই পারফেক্ট কম্বিনেশন।
১৯৩৩ সালে দিল্লিতে দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্ম হয় মুমতাজ জাহান বেগম দেহলভি। বোম্বে টকিজ ফিল্ম স্টুডিওর কাছে শহরের বস্তিতে বড় হন তিনি। পরে বড়পর্দায় তিনি মধুবালা নামে পরিচিত হন। বস্তি থেকে উঠে আসা শিশুশিল্পীই আজকের সকলের প্রিয় কিংবদন্তী মধুবালা (Madhubala)। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বড় পর্দায় ছাপ ফেলেছিলেন কিংবদন্তী অভিনেত্রী মধুবালা।
বয়স মাত্র ৯ বছর। বলিউডে প্রথম পা রাখেন মধুবালা। 'বেবি মুমতাজ' নামেই প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ করেন অভিনেত্রী (Madhubala) । পরে ১৯৪৭ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে 'নীল কমল' সিনেমায় প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করে সকলের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি। এই সিনেমা থেকেই তার নাম বদলে হয় 'মধুবালা'।
মধুবালার সৌন্দর্য, সহজাত অভিনয় ক্ষমতা, মায়াভরা চোখ, মলিন হাসিই তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল। সব ধরনের চরিত্রেই তিনি সাবলীল ছিলেন (Madhubala) । আসলে অভিনয়টাই ছিল তার সহজাত। কমেডি থেকে রোম্যান্টিক সবেতেই একের পর এক বাজিমাত করেছেন মধুবালা।
সালটা ১৯৫১। 'তারানা ' সিনেমাতেই অভিনেতা দিলীপ কুমারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মধুবালা। এবং সেই ছবি থেকেই সহ অভিনেতা দিলীপের প্রেমে পড়েন মধুবালা (Madhubala) । কিন্তু সম্পর্কের মধ্যে বাধা দেয় মধুবালার বাবা। গরীব ঘর জন্ম হয়েও বাবার কড়া শাসনই নিজের ব্যক্তিগত জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
বলিউডের অমর প্রেমকাহিনি বলতে এখন সকলের মনে আসে দিলীপ কুমার ও মধুবালার নাম। দিলীপ কুমারের প্রেমে পড়েন মধুবালা (Madhubala) । দীর্ঘ ৭ বছর প্রেম করলেও ইগোর কারণেই ভেঙে গিয়েছিল সম্পর্ক।তারপরও 'মুঘল-এ-আজম' সিনেমায় দিলীপ ও মধুবালার জুটি বলিউডের সেরা রোম্যান্টিক জুটির তকমা পায়। বলিউডের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অবিস্মরণীয় তাদের এই বিখ্যাত ছবি। কিন্তু সেই প্রেমেও পূর্ণতা পায় নি অভিনেত্রীর (Madhubala)।
শুধু বাবার অসুস্থতাই নয়, বরং নিজের শারীরিক অবস্থাও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অভিনেত্রীর জীবনে (Madhubala) । অভিনেত্রীর শেষ জীবনের অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছিল তার বোনের করা কিছু টুইট থেকে। 'মুঘল-এ-আজম' শুটিংয়ের শেষে মধুবালার হাত পা নীল হয়ে যেত। এবং জেলের দৃশ্যগুলিকে আরও বাস্তবায়িত করে তুলতে তিনি শ্যুট করার সময়ও খাবার খেতেন না। অসুস্থতার কারণেই রক্তের পরিমাণও বেড়ে গিয়েছিল মধুবালার । নাক মুখ দিয়েও রক্ত বেরিয়ে আসত মাঝেমধ্যেই। সারাক্ষণ কাশি হতো। ৪-৫ ঘন্টা অন্তর শ্বাসকষ্টও হতো অভিনেত্রীর। এভাবেই যেন প্রেমের যন্ত্রণায় তিনি তিলে তিলে নিজেকে শেষ করেছিলেন।
একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে রীতিমতো যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলেন মধুবালা। একটা সময়ে সম্পর্কে থিতু হতে চেয়েছিলেন। হাফ টিকিট ছবির শুটিংয়ে কিশোর কুমারের প্রেমেও পড়েন মধুবালা (Madhubala)। ১৯৬০ সালে কিশোর কুমারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধও হন। তারপরই মধুচন্দ্রিমায় লন্ডনে দিয়ে হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে। এবং কিশোর কুমারও তাকে বোনেদের কাছে রেখে যান। দুমাসে একবার দেখা করতে আসতেন তবে মধুবালা কিশোরের সঙ্গেই দেখা করতে চেয়েছিলেন।
রাজ কাপুরের বিপরীতে 'ছলক' ছবিতে অভিনয় করার সময়েই তার হার্টে ফুটোর সমস্যা বাড়াবাড়ি হয়।। সেই সময় প্রচন্ড রক্তবমি হতো অভিনেত্রীর। চিকিৎসক তিন মাসের বিশ্রাম নিতে বলেছিল। কিন্তু শুটিং চলছিল বলে তিনি তা শোনেননি। ১৯৬৬ সালে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময় এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে ছবির শুটিং শেষ পর্যন্ত শেষ করতে পারনেনি অভিনেত্রী। এবং ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তিও পায়নি (Madhubala)।
পঞ্চাশের দশক কাঁপানো অভিনেত্রীর শেষের দিনগুলো যেন বড্ড বেশি কষ্টের। একটানা ৯ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন কিংবদন্তী অভিনেত্রী। শেষের সময়ে নিজের মৃত্যকে কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি মধুবালা (Madhubala)। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বলিউডের কালো দিন। বাঁচার প্রবল ইচ্ছা নিয়েই মাত্র ৩৬ বছর বয়সে দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে প্রয়াত হন বলিউডের 'মেরিলিন মনরো'।