'সুশান্তকে কোনও ছবি থেকে বাদ দিইনি, যশ রাজের জন্য আমার প্রস্তাবে নাকোচ করেছিলেন উনি'

প্রায় এক মাস হতে চলল সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর। এখনও পর্যন্ত রেশ কাটেনি তাঁর মৃত্যুর। বরং বারিয়ে দিয়েছে বিতর্ক এবং প্রতিবাদের ঝড়। এই প্রথম কোনও অভিনেতার মৃত্যু সাংঘাতিক বদল এনেছে বলিউডে। গ্ল্যামারাস বি-টাউন এখন পরিবর্তিত হয়েছে ক্রাইম সিনে। একের পর এক তারকাদের জেরা চলেছে সুশান্তের মৃত্যু মামলায়। রিয়া চক্রবর্তী এবং সঞ্জনা সাংঘির পর এবার পালা সঞ্জয় লীলা বনশালীর। সোমবার বান্দ্রার থানার সামনে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বনশালীর আগে রিয়া এবং সঞ্জনা, দু'জনের জেরা হয় প্রায় আট-নয় ঘন্টা ধরে। পরিচালকের জেরা হয়েছে তিন-চার ঘন্টা। জেরায় বিভিন্ন বিস্ফোরক বয়ান দেন বনশালী।

তিনি জানান, সুশান্তকে কোনও ছবি থেকে তিনি বের করেননি। বরং সুশান্ত নিজেই নাকি তাঁর দু'টি ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। তাঁর হাতে যশ রাজ ফিল্মসের ছবি ছিল বলে বনশালীকে নাকোচ করেন অভিনেতা।

বাজিরাও মস্তানি এবং গোলিও কি রাসলীলা রামলীলা, রণবীর সিংয়ের আগে সুশান্তকেই অফার করা হয় বলে জানিয়েছেন বনশালী। সুশান্ত দু'টি ছবির প্রস্তাবে রাজি হননি। যশ রাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। 

যশ রাজ ফিল্মসের 'পানি' ছবিতে মন দিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন সুশান্ত। সেই সময় বনশালীর এই দু'টি ছবির চরিত্রের বিষয় তাঁর মনে হয়, এর পিছনে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে। 

অন্যদিকে পানি ছবিতেও পরিশ্রমের পরিমাণ নেহাত কম নয়। তিনটি ছবির কাজ একসঙ্গে করতে গেলে তাঁর পরিবেশনে ঘাটতি থাকতে পারত। সেই কারণেই নাকোচ করেন তিনি। 

তাই পরিচালকের কথায়, তিনি নিজের কোনও ছবি থেকে স্বেচ্ছায় সুশান্তকে বাদ দেননি। সুশান্ত ছবি দু'টি ছাড়ার পরই রণবীরের ঝুলিতে গিয়ে পড়ে বাজিরাও মস্তানি এবং গোলিও কি রাসলীলা রামলীলা। 

যদিও প্রথম দিকে গুঞ্জন ছিল সঞ্জয় লীলা বনশালীই নাকি নিজের সুপাত্র রণবীর সিংয়ের কারণে সুশান্তকে ছবি দু'টি থেকে সরিয়ে দেন। তবে পুলিশি জেরায় অন্য কথাই বলে বসলেন তিনি। 

সুশান্তকে প্রথম বনশালী দেখেন ২০১২ সালে। সরস্বতী চন্দ্র নামক এক ধারবাহিকের সময় অভিনেতা-অভিনেত্রী বাছতে গিয়ে সুশান্তকে পছন্দ হয় তাঁর। ধারাবাহিকটির জন্য তিনি অডিশন দেন ঠিকই তবে তাঁকে ধারাবাহিকটিতে কাজ করতে দেখা যায়নি। 

সেই সময় সুশান্তের অভিনয় দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন বনশালী। এছাড়াও সুশান্তের মানসিক অবসাদের বিষয় তাঁর কাছে সম্পূর্ণ অজানা ছিল বলেই জানান। সুশান্তের সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ ছিল না। তাই এ বিষয় তাঁর কোনও জ্ঞান নেই।

প্রসঙ্গত, সোমবার তাঁকে থানার সামনে দেখতে পেয়েই উপচে পড়ে চিত্রসাংবাদিকরা। রইল তাঁর এক্সক্লুসিভ কিছু ছবি। তাঁর ব্লকবাস্টার ছবি থেকে সুশান্তের বাদ পড়ার কারণ নিয়ে উত্তাল ছিল সোশ্যাল মিডিয়া। বনশালী প্রযোজনা সংস্থা থেকে তাঁকে ব্যান করার অভিযোগও ওঠে কমল আর খানের ট্যুইটে। 

সত্যিই কি তাঁকে ব্যান করা হয়েছিল সেই নিয়ে এখনও চলছে মতবিরোধ। সঞ্জয়ের সুপাত্র রণবীর সিংয়ের কারণেই কি গোলিও কি রাসলীলা রামলীলা এবং বাজিরাও মস্তানি থেকে বাদ পড়তে হয় সুশান্তকে। চারিদিকে ফেভারিটিজম এবং স্বজনপোষণের গন্ধ পেয়েছে নেটিজেনরা। জেরায় কী কী তথ্য পাওয়া যায় সেটাই এখন দেখা বিষয়।