- Home
- World News
- International News
- করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরে 'ডাবল সুরক্ষা' দেবে তাঁদের ভ্যাকসিন, দাবি অক্সফোর্ডের গবেষকদের
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরে 'ডাবল সুরক্ষা' দেবে তাঁদের ভ্যাকসিন, দাবি অক্সফোর্ডের গবেষকদের
- FB
- TW
- Linkdin
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করেছেন বলে মনে করছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাঁরা মানবদেহে ভ্যাকসিনটির প্রথম ধাপের পরীক্ষায় আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন। একইসঙ্গে গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, মারণ ভাইরাসটির বিরুদ্ধে তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ‘ডাবল সুরক্ষা’ দিচ্ছে।
মানবদেহে ভ্যাকসিন পরীক্ষার প্রথম ধাপে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে সংগৃহীত রক্তের নমুনায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি অ্যান্টিবডি ও টি-সেল উৎপাদন করে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়েছে।
শরীরের ইমিউন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে টি-সেল। অর্থাৎ অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অ্যান্টিবডি ও টি-সেল, উভয়ই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে এবং করোনার বিরুদ্ধে যুগল সুরক্ষা দেবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, যে কোনও ভ্যাকসিনের অত্যাবশ্যকীয় দু’টি উপাদান হলো অ্যান্টিবডি এবং ‘টি-সেল’ রেসপন্স তৈরি করা। কেন? অ্যান্টিবডি শরীরের মধ্যে থাকা ভাইরাস চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ভাইরাসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। আর ‘টি-সেলস’ শুধু অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্যই করে না, ভাইরাসে আক্রান্ত কোষগুলোর ওপরেও কাজ করে এবং ভাইরাসকে নিষ্ক্রীয় করে দেয়। হাম, সর্দি-কাশির মতো রোগে এই টি-সেল্স অত্যন্ত কার্যকর।
আবার কোনো ভাইরাসে কেউ একবার সংক্রমিত হন, তার কোষে ওই ভাইরাসের মেমরি সেল্স থেকে যায়। পরবর্তীতে কখনো আবার ওই ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে ওই ‘মেমরি সেল’গুলো আগে আক্রান্ত হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি খুব বেশি দিন থাকে না। কিন্তু এই টি-সেল্স শরীরের মধ্যে বহু বছর পর্যন্ত থাকে। পরবর্তীতে কখনো ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে, এই ‘টি-সেল্’গুলোই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে এবং তার কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
সারা গিলবার্টের নেতৃত্বে অক্সফোর্ডের গবেষকদের দাবি, তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা এই ‘টি-সেলস’ তৈরিতেও সক্ষম।
মডার্না, ফাইজার, বায়োএনটেকএর মতো বিশ্বের বহু সংস্থা টিকা আবিষ্কারের পেছনে ছুটে চলেছে। তাদের কারোও কারোও প্রথম বা দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ এখনো পর্যন্ত দাবি করতে পারেনি যে, তাদের টিকায় অ্যান্টিবডির সঙ্গে ‘টি-সেল্স’ তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি এখনো পর্যন্ত পরীক্ষামূলক প্রয়োগে পাওয়া তথ্যে কারো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার নজির নেই।
এখানেই অক্সফোর্ডের স্বাতন্ত্র্য এবং দ্রুত সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের তৈরি টিকায় অ্যান্টিবডি ও টি-সেল্স উভয়ই তৈরি হয়েছে।
মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রথম ধাপে ৫০০ জনের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। তার ফলাফল বিশ্লেষণ করেই এই অ্যান্টিবডি ও টি-সেলসের বিষয়টি উঠে এসেছে বলে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের।
বর্তমানে ব্রাজিলে ৫০০০ জনের ওপর প্রয়োগ ও তার ফলাফল সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। আবার টিকার বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য ব্রিটেনের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই সংস্থা ২ কোটি ডোজ তৈরি করবে।
অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে অক্টোবরে টিকা তৈরি করা যাবে। আশাবাদী অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে থাকা সারা গিলবার্টও। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এই টিকা তৈরির শুরু থেকেই তিনি কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন।