মরুদেশে মহারণ, জেনে নিন আইপিএলের সেনাপতিদের শক্তি ও দুর্বলতা
- FB
- TW
- Linkdin
রোহিত শর্মা (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)
আইপিএলের ইতিহাসে ট্রফির বিচারে সব থেকে সফল অধিনায়ক হলেন রোহিত শর্মা। হিটম্যানের অধিনায়কত্বেই ৪ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। শেষ মরসুম ২০১৯ সালেরও চ্যাম্পিয়ন মুম্বইয়ের দল। শুধু অধিনায়ক হিসেবেই যে রোহিত শর্মা সফল এমনটা নয়। ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা। আইপিএল কেরিয়ারে ১৮৮ ম্যাচে ৪৮৯৮ রান। গড় ৩১.৬, সর্বোচ্চ ১০৯, হাফ সেঞ্চুরি ৩৬টি, সেঞ্চুরি ১টি। এবছরও রোহিত শর্মার ব্যাট ও অধিনায়কত্বের উপর ভর করেই পঞ্চমবারের জন্য আইপিএল জয়ের স্বপ্ন দেখছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দল।
এমএস ধোনি (চেন্নাই সুপার কিংস)
আইপিএলের ইতিহাসে সব থেকে সফল অধিনায়ক যদি বলতে হয় তবে তার নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। তার অধিনাকত্বে চেন্নাই সুপার কিংস একমাত্র দল যারা প্রতিবার কোয়ালিফায়ার খেলেছে। সব থেকে বেশিবার ফাইনাল খেলা দলও ধোনির সিএসকে। তার মধ্যে তিনবার দলকে আইপিএলের শিরোপাও দিয়েছেন এমএসডি। কিন্তু এবছর আইপিএল ধোনির কাছে এক অন্য চ্যালেঞ্জ। সদ্য জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন ধোনি। অবসরের আগে বলা হচ্ছিল আইপিএলে ভাল খেললেই জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন ধোনি। যদিও ধোনি সে সব কিছু নিয়ে ভাবার পাত্র নন। তিনি অবসর গ্রহণ করে স্বাধীনভাবে আইপিএলে নামছেন। তবে তিনি এটা নিশ্চিত প্রমাণ করতে চাইবেন তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও ব্যাটের ধার কোনওটাই এখনও শেষ হয়ে যায়নি। গতবার রানার্স হলেও এবারের আইপিএলে সিএসকে-কে চ্যাম্পিয় করাই ধোনির অন্যতম লক্ষ্য। ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএলের ধোনির রেকর্ড ঈর্ষণীয়। ১৯০ ম্যাচে ধোনির সংগ্রহ ৪৪৩২ রান। গড় ৪২.২, সর্বোচ্চ ৮৪ রান, ২৩ টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে মাহির।
দীনেশ কার্তিক (কলকাতা নাইট রাইডার্স)
এবছরও আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন দীনেশ কার্তিক। গত দুই মরসুম ধরে কেকেআরের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দীনেশ কার্তিক। ২০১৮ মরসুমে প্রথম দায়িত্ব নিয়ে দলকে প্লে অফে তুলেছিলেন। সেই বছর তিন নম্বরে শেষ করেছিল কেকআর। যদিও ২০১৯ মরসুমে কেকেআর শেষ করে ৫ নম্বরে দলকে প্লে অফে তুলতে ব্যর্থ হন ডিকে। তাই এবথর দীনেশ কার্তিকের কাছে অগ্নি পরীক্ষা বলা যেতেই পারে। অনেক আশা নিয়ে গৌতম গম্ভীরের জায়গয়া দীনেশ কার্তিককে অধনায়ক করে এনেছিল কেকেআর। তাই এইবছর দলকে ট্রফি এনে দেওয়াই প্রধান লক্ষ্য ডিকের। ব্যক্তগতভাবে আইপিএল কেরিয়ারে ১৮২ ম্যাচে ৩৬৫৪ রান করেছেন দীনেশ কার্তিক। গড় ২৭.১, সর্বোচ্চ রান ৯৭ ও হাফ সেঞ্চুরি ১৮টি।
বিরাট কোহলি (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু)
জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে সাফল্যের মুখ দেখলেও, আইপিএলে আরসিবির অধিনায়ক হিসেবে বিরাট কোহলির ঝুলিতে এখনও সাফল্য আসেনি। আইপিএলের প্রথম মরসুম থেকে তারকা সমৃদ্ধ দল হলেও, আরসিবি এখনও একবারও আইপিএল খেতাব জিততে পারেনি। ২০১৬ সালে ফাইনালে উঠে হারতে হলেও, শেষ তিন মরসুমের মধ্যে দুবার লিগ টেবিলের একেবারে শেষে শেষ করেছে কোহিল, ডিভিলিয়ার্সরা। তাই এবছর মরু দেশে ট্রফির খরা কাটাতে মরিয়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। অধিনায়ক হিসেবে আইপিএলে সফল না হলেও, বিরাটের ব্যাট কিন্তু আইপিএলে একইভাবে কথা বলে। আইপিএল কেরিয়ারে ১৭৭ ম্যাচে বিরাট কোহলির সংগ্রহ ৫৪১২ রান। গড় ৩৭.৮, সর্বোচ্চ ১১৩, সেঞ্চুরি ৫টি, হাফ সেঞ্চুরি ৩৬টি।
ডেভিড ওয়ার্নার (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ)
এবছর আইপিএলে ফের সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়কত্বের দায়িত্বে ফিরতে চলেছেন অজি তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। ২০১৬ সালে সানরাইজার্সকে প্রথম আইপিএল চ্যাম্পিয়নকরেছিলেন ওয়ার্নার। মাঝে নির্বাসনের কারণে এক মরসুম খেলেননি ও শেষ মরসুমে খেললেও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলাননি। তবে এই মরসুমে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়ে ফের দলকে সাফল্য এনে দিতে মরিয়া ওয়ার্নার। কিন্তু প্রথম কিছু ম্যাচে ওয়ার্নারকে পাবে না সানরাইজার্স। সেই সময় সম্ভবত দলের দায়িত্ব সামলাবেন ভুবনেশ্ব কুমার। তবে ওয়ার্নারের চওড়া ব্যাট কিন্তু প্রতিবারই শাসন করেছে আইপিএলের ২২ গজকে। আইপিএল কেরিয়ারে ওয়ার্নারের সংগ্রহ ১২৬ ম্যাচে ৪৭০৬ রান। গড় ৪৩.২, সর্বোচ্চ ১২৬, সেঞ্চুরি ৪টি, হাফ সেঞ্চুরি ৪৪টি।
স্টিভ স্মিথ ( রাজস্থান রয়্যালস)
দুই মরসুম পর ফের রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়কত্বের দায়িত্বে ফিরতে চলেছেন স্টিভ স্মিথ। শেষ দুই মরসুম রাজস্থান রয়্যালসের দায়িত্ব সামলেছেন অজিঙ্কে রাহানে। ২০১৮ তে ৪ নম্বরে শেষ করলেও, ২০১৯ সালে ৭ নম্বরে শেষ করে রয়্যালসরা। যদিও এই মরসুমে শুরুর দিকে স্মিথকে পাচ্ছে না রাজস্থান। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে রাজস্থানের দায়িত্ব সামলাবেন জয়দেব উনাদকাট। ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম মরসুমে চ্য়াম্পিয়ন হয়েছিল রাজস্থান। এই মরসুমে ফের রাজস্থান সাফল্য এনে দিতে চান স্মিথ। ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএল কেরিয়ারে ৮১ ম্যাচে ২০২২ রান করেছেন স্মিথ। গড় ৩৭.৪, সর্বোচ্চ ১০১, সেঞ্চুরি ১টি ও হাফ সেঞ্চুরি ৮টি।
কেএল রাহুল (কিংস ইলেভেন পঞ্জাব)
আইপিওএলের অপর তরুণ অধিনায়ক হলেন এই বছর প্রথম কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের দায়িত্ব পাওয়া কেএল রাহুল। গত দুই মরসুমে পঞ্জাবের অধিনায়ক ছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিন্তু দলকে সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হন তিনি। শেষ দুই মরসুমে ৬ ও ৭ নম্বরে শেষ করে পঞ্জাবের দলটি। এছাড়া এখনও পর্যন্ত আইপিএল চ্য়াম্পিয়ন হতে পারেনি পঞ্জাবের দলটি। এই মরসুমে প্রথমবার দায়িত্ব পেয়েই দলকে সাফল্য এনে দিতে চাইছেন কেএল রাহুল। নতুন অধিনায়ককে নিয়ে নতুন করে স্বপ্নও দেখছে প্রীতি জিনতার দল। জাতীয় দলের জার্সি গায়ি কেরিয়ারের সেরা ফর্মে রয়েছেন রাহুল। আইপিএলে তার পারফরমেন্স নজরকারা। আইপিএল কেরিয়ারে ৬৭ ম্যাচে কেএল রাহলের সংগ্রহ ১৯৭৭ রান। গড় ৪২.১, সর্বোচ্চ রান ১০০. সেঞ্চুরি ১টি, হাফ সেঞ্চুরি ১৬টি।
শ্রেয়স আইয়ার (দিল্লি ক্যাপিটালস)
আইপিএলের তরুণ অধিনায়কের মধ্যে অন্যতম দিল্লি ক্যাপিটালসের শ্রেয়স আইয়ার। ২০১৮ মরসুম থেকে দিল্লি দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। গৌতম গম্ভীর দায়িত্ব ছাড়ার পর শ্রেয়স আইয়ারকে নির্বাচন করা হয় অধিনায়ক হিসেবে। ২০১৮ মরসুমে লিগ টেবিলের শেষ থাকলেও ২০১৯ মরসুমে অনেক বছর পর কোয়ালিফায়ার খেলে দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজটি দলটি। যদিও ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় তারা। তিন নম্বরে শেষ করে দিল্লি ক্যাপিটালস। এই মরসুমে দলকে প্রথমবারের জন্য আইপিএল ট্রফি এনে দিতে মরিয়া শ্রেয়স আইয়ার। আইপিএললের সংক্ষিপ্ত কেরিয়ারে ব্যাটসম্যান হিসেবেও নজর কেড়েছেন শ্রেয়স। আইপিএলে ৬২ ম্যাচে শ্রেয়সের সংগ্রহ ১৬৮১ রান। গড় ৩০.৬, সর্বোচ্চ ৯৬ রান ও হাফ সেঞ্চুরি ১৩টি।