- Home
- India News
- সংবিধানের জনক ভীমরাও রামজি আম্বেডকর, একজন লড়াকু 'দলিত' ছাত্রের জীবনী যা আজও অনুপ্রেরণা জোগায়
সংবিধানের জনক ভীমরাও রামজি আম্বেডকর, একজন লড়াকু 'দলিত' ছাত্রের জীবনী যা আজও অনুপ্রেরণা জোগায়
- FB
- TW
- Linkdin
রামজী মালোজী শাকপাল এবং ভীমাবাইের ১৪তম তথা সর্বকনিষ্ঠ সন্তান তিনি। বর্তমান মধ্যপ্রদেশ-এর মোহ অঞ্চলে ব্রিটিশ কর্তৃক স্থাপিত শহরে আম্বেদকর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ডক্টর ভীমরাও রামজি আম্বেডকর ছিলেন মারাঠী অধ্যুষিত বর্তমান কালের “মহারাষ্ট্র”-এর রত্নগিরি জেলার আম্বোভাদ শহরের।
সেকালে গতবাধা শিক্ষাপদ্ধতি থেকে মারাঠী এবং ইংরেজিতে ডিগ্রি লাভ করেছিলেন এবং সেই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা লাভে কঠোর পরিশ্রমে সন্তানদের উদ্বুদ্ধ করেন। আম্বেদকর বিদ্যালয়ে যেতেন সঙ্গে একই অস্পৃশ্য জাতির অন্যরাও থাকতেন। সেই সময় 'নীচু জাত' বলে তাদের আলাদা করে দেওয়া হত এবং শিক্ষকগণ এদের প্রতি অমনযোগী ও অসহায়ক ছিলেন ।
১৮৯৪ সালে রামজী শাকপাল অবসর নেন ও দুই বছর পরে তার পরিবার সাতারা-এ চলে আসে। জায়গা বদলের অল্পদিনের পরে, অল্প বয়েসেই আম্বেদকরের তাঁর মাকে হারান। তাঁরা ভাই বোনেরা মাসীর সান্নিধ্যে কষ্টের মধ্যেই বড় হন। শুধুমাত্র তিন ছেলে বালারাম, আনান্দ্রা ও ভীমরাও এবং দুই মেয়ে মঞ্জুলা ও তুলাসাদের মধ্যে আম্বেদকরই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সামর্থ হন এবং মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশের প্রথম ইকোনোমিকে পিএইচডি ডিগ্রি, এবং প্রথম দুবার ইকোনোমিক্সে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ভারত বর্ষের প্রথম আইন মন্ত্রী। তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি বিদেশে ইকোনোমিকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় পৃথিবীর ১০০ পন্ডিতের মধ্যে ইনি আছেন। সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে প্রথম এবং শুধুমাত্র ইনিই লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকস থেকে সমস্ত বিজ্ঞান বিষয়ের উপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
১৯০৩ সালে বিয়ে করেন এবং পরিবারসহ তিনি মুম্বাইয়ে চলে আসেন। এলফিন্স্টোন রাস্তার পাশের নিম্ম শ্রেণীর সদস্যদের জন্য সরকারি বিদ্যালয়ের স্থাপন করেন। ১৯০৭ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথম অস্পৃশ্য হিসেবে তৎকালীন বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন।
ডঃ আম্বেদকর ১৯৩৫ সালে মুম্বাইয়ের সরকারি আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান, সেখানে দু'বছর অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৩৬ সালে আম্বেদকর স্বনির্ভর শ্রমিক দল প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি ১৯৩৭ সালের কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়ন পরিষদ বা বিধানসভার নির্বাচনে ১৫ আসন লাভ করেন। ১৯৪৮ সাল থেকে ডঃ আম্বেদকর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন।
শারীরিক অবনতির জন্য ১৯৫৪ সালে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিনি শয্যাগত ছিলেন ও তার দৃষ্টিশক্তি হারান। রাজনৈতিক কারণে তিনি ক্রমবর্ধমানভাবে অনেক তিক্তবিরক্ত হয়ে উঠেন, যা তার স্বাস্থ্যের কাল হয়ে দাঁড়ায়। ৬ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে তার নিজ বাড়ি দিল্লীতে ঘুমন্ত অবস্থায় চির নিদ্রায় শায়িত হন ভারতীয় সংবিধানের প্রণেতা বাবা সাহেব অম্বেদকর।