১০০ বছর বাঁচতে চান, আজ থেকেই এই কাজগুলি শুরু করে দিন
সুন্দর ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চান প্রায় মানুষই। কিন্তু, বেশি বছর বাঁচতে পারেন কতজন। আসলে বেশি বছর বেঁচে থাকার জন্য সবথেকে যেটা বেশি প্রয়োজনীয় তা হল সুস্থ থাকা। কারণ সুস্থ না থাকলে বাঁচার ইচ্ছেটাই চলে যায়। আর মন যদি ভালো থাকে তাহলে অনায়াসেই সুস্থ থাকা সম্ভব। আর কোনও সমস্যা হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে এত চাপ, এত চিন্তা সেখানে শান্তি ও সুস্থ থাকাটাই খুব সমস্যার বিষয়। তার জেরেই বেড়ে চলে শরীর খারাপ। আর অসুস্থতা। তাহলে এই সব পরিস্থিতির মধ্যেও কীভাবে সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব তা দেখে নিন।
| Published : Mar 28 2022, 03:35 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
এখন মানুষের গড় আয়ু ৬৯ বছর। খুব কম সংখ্যক মানুষ রয়েছেন যাঁরা তার থেকে একটু বেশি বছর বাঁচেন। কিন্তু, সব নিয়ম মেনে চললে ৮০-৯০ বা ১০০ বছরের কাছাকাছি বাঁচা সম্ভব খুব সহজেই।
আসলে বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের স্বাভাবিক আয়ু ১৫০ বছর হওয়া উচিত। কারণ, জন্মের পর থেকে প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে এবং এর প্রায় ছয়গুণ সময়কাল তার স্বাভাবিক আয়ু বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত কম বয়সেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, দৈনিক শারীরিক ব্যায়াম ও মনোচাপ থেকে মুক্তি। তাহলেই একমাত্র হাসিখুশি থাকতে পারবেন আপনি। আর এর ফলে বাড়বে আয়ুও। এর বাইরে আরও কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আছে যার মাধ্যমে খুব সহজে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। সুস্থ থাকতে ও দীর্ঘায়ু পেতে সেই নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে।
হাসি আপনার আয়ু বাড়াতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। গবেষকরা বলেন, হাসি মানুষের আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। হাসলে এনডরফিনস ও সেরোটোনিনের মতো সুখ হরমোন নিঃসৃত হয়, যা প্রদাহ ও ব্যথা ভুলিয়ে দেয় প্রাকৃতিকভাবেই। পাশাপাশি হাসি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শক্তিশালী করে দেহের ক্ষমতাকে।
ওজনই যত নষ্টের গোড়া। একে কখনও বাড়তে দেবেন না। তাহলেই শরীরে কোনও রোগ থাকবে না। সহজ হিসেব হল, সেন্টিমিটারে উচ্চতা বের করে ১০০ বিয়োগ করলে প্রাপ্ত সংখ্যাটিই হবে আপনার আদর্শ ওজন। আর দেখতে হবে আপনার পেটের পরিসীমা (ভুঁড়ির বেড়) যেন উচ্চতার অর্ধেকের বেশি না হয়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য নিজেকে একটু সময় দেওয়া উচিত। যা আমরা অনেকেই ব্যস্ত জীবনে দিতে উঠতে পারি না। পরিবার ও অফিসকে সময় দিতে দিতে নিজেদের দিকে তাকানোর সময় আর হয় না। তাই কর্মব্যস্ত জীবন থেকে কিছুটা ছুটি নিতে পারেন এবং কিছুটা মুহূর্ত নিজের সঙ্গে কাটাতে পারেন। মস্তিষ্কের সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে আবেগ দূর করুন। এতে চিন্তা ও চাপমুক্তি হবে। এতে হৃৎস্পন্দন কিছুটা কমবে এবং মনোযোগও বাড়বে।
মনের চাপ কাটাতে অনেকটা সাহায্য করে প্রকৃতি। তাই কখনও সময় পেলে প্রকৃতির কোলে দিন কাটাতে পারেন। এতে রক্তচাপ কমবে ও মন ভালো হবে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রকৃতির মধ্যে কিছুক্ষণ হাঁটলেও মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়। বিষণ্নতা দূর করতে প্রকৃতির সান্নিধ্য কাজে লাগবে।
পরিমিত খাবার খাবেন। খুব বেশি খাবার একেবারই খাবেন না। শাকসবজির পরিমাণ বেশি করে রাখবেন। দিনে অন্তত পাঁচ রঙের পাঁচ রকমের ফল খাবেন পরিমিত মাত্রায়। রান্নার জন্য সূর্যমুখী বা সয়াবিন তেল ব্যবহার করুন। খুব বেশি মশলা-তেল খাবেন না। ভাজা-পোড়া খাবারে ক্ষতিকর চর্বি (ট্রান্সফ্যাট) থাকে, যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। রেড মিট না খাওয়াই ভালো। তার থেকে চিকেন ও মাছ খেতে পারেন। আর চিনি একেবারে বর্জন করুন। তার চেয়ে বেছে নিন গুড়।
প্রতিদিন অন্তত সাত ঘণ্টার ঘুম দরকার। দুপুরে অন্তত ১৫-২০ মিনিটের হালকা ঘুম খুব উপকারী। এতে আয়ু বাড়ে। দুপুরের সামান্য ঘুম আপনার জীবন রক্ষা করতে পারে, আয়ু বাড়াতে পারে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ শত কাজের মধ্যেও প্রতিদিন দুপুরে ১৫ মিনিটের জন্য হলেও ঘুমিয়ে নেন। তাঁর বয়স এখন প্রায় ৯০।
সিগারেট পান একেবারে বন্ধ করে দিন। ধূমপানে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের ধূমপান ছাড়ার বছর দুয়েকের মধ্যে হৃদরোগের আশঙ্কা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। আর ধূমপান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসারের আশঙ্কাও অনেকটাই কমেতে শুরু করে। তাই সুস্থ থাকতে আজই বাদ দিন ধূমপান।