বাড়ছে হেপাটাইটিস রোগের প্রকোপ, জেনে নিন রোগের লক্ষণ, রইল মুক্তির উপায়
- FB
- TW
- Linkdin
এখন প্রশ্ন হল হেপাটাইটিস রোগ কী। এটি একটি ডিএনএ ভাইরাস। যা লিভারকে আক্রান্ত করে। এমনিতে এটি একটি সাধারণ ভাইরাস হিসেবে বিবেচিত করা হয়। তবে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই ভাইরাসের প্রভাব অধিক দেখা যায়। হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো এ, বি, সি, ডি ও ই নামে পরিচিত। এই রোগকে এক কথায় বলা হয়, লিভারের প্রদাহ।
সাধারণত দূষিত খাবার ও জলের মধ্যে দিয়ে এই রোগ ছড়ায়। রোগে সেভাবে বিস্তার করার আগে এর লক্ষণ বোঝা যায় না। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীর দুর্বল লাগা, বমি ভাব, পেট ব্যথা, শরীর হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এর সঙ্গে প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায়। জেনে নিন এই রোগের ইতি বৃত্তান্ত।
একজন ব্যক্তির শরীর থেকে এই ভাইরাস কীভাবে অন্যের শরীরে ছড়ায় তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিস্তর। রক্ত, থুতু, বীর্য-এর মধ্য দিয়ে ছড়ায় এই রোগ। ছুঁচ, ক্ষুর, টুথব্রাশ থেকে এই রোগ ছড়ায়। এই ভাইরাস শরীরে একবার প্রবেশ করলে তা সবার আগে লিভারকে আক্রান্ত করে।
হেপাটাইটিস ভাইরাস হওয়ায় না ছড়ালেও শররীর বাইরে বেঁচে থাকতে পারে। সাত দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এই ভাইরাস। তাই কারও ব্যবহৃত ছুঁচ, ক্ষুর, টুথব্রাশ থেকে সব সময় দূরে থাকুন। এই রোগে উপসর্গ সহজে চোখে পড়ে না। তাই শুরুতেই এই রোগ নির্মূল করা কঠিন।
হেপাটাইটিস দু রকমের হয়। অ্যাকিউট এবং ক্রনিক। অ্যাকিউট ভাইরাস সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা যায়। এই ভাইরাস শরীর ঢুকলে জ্বর, জনডিস, খিদে কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। সঙ্গে সাদা মল, গা বমি ভাব দেখলে সতর্ক হন। তাছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে হলুদ প্রসাব হলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। এই লক্ষণগুলো হেপাটাইটিসের।
ক্রনিক হেপাটাইটিস হয় বাচ্চাদের। ৫ থেকে ১০ বছরের বাচ্চারা ক্রনিক হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। মায়ের থেকে বাচ্চারা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এই ভাইরাস শরীরে ঢুকলে শরীর তা প্রতিরোধ করতে পারে না। ফলে ভাইরাস শরীরে থেকে যায়। যা ধীরে ধীরে নিজের প্রভাব বাড়াতে থাকে।
অনেক সময় দেখা গিয়েছে, শরীরের কোষের ডিএনএ-র ভিতর এই ভাইরাসটি থেকে যায় সারা জীবন। কারও কারও উপসর্গ দেখা যায়। লিভারে সংক্রমণ ঘটে। জ্বর, বমি আরও নানান সমস্যা হয়। আবার কারও কারও উপসর্গ সহজে দেখা যায় না। রক্ত পরীক্ষা করলে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তাই সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে চাইলে সব সময় সতর্ক থাকুন।
রোগ থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিদিন লেবু-জলের শরবত খেতে পারেন। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি। যা লিভারকে রোগ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। রোজ খালি পেটে খেতে পারেন এই পানীয়। ঈষদ উষ্ণ জলে পাতিলেবুর রস চিপে নিন। তা খালি পেটে পান করুন। এটি ডিটক্স ওয়াটারের কাজ করে থাকে। এতে লিভার ভালো থাকবে সঙ্গে ওজন কমবে।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খেলে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এক কাপ জলে ১ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার দিন। ভালো করে মিশিয়ে পান করুন। এটি ডিটক্স ওয়াটারের কাজ করে থাকে। এতে লিভার ভালো থাকবে সঙ্গে ওজন কমবে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারে থাকা উপাদান লিভারের রোগ দূর করতে বেশ উপকারী।
আদাতে রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ। যে কথা সকলেরই জানা। তবে, জানেন কী হেপাটাইটিসের মতো রোগে থেকে মুক্তি পেতে পারেন আদার গুণে। ১ কাপ জল গরম করে নিন। তাতে ফেলে দিন ১ টুকরো আদা। এই জল ফুটলে ছেঁকে নিন। ঠান্ডা করে পান করুন। রোদ খেতে পারেন এই পানীয়। অথবা আদা দিয়ে চা বানান। উপকার পাবেন।