- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ষাটের কাছাকাছি বয়সেও অদম্য প্রাণশক্তি, করোনা সচেনতনায় পায়ে হেঁটে ভারত অভিযান দাসু দার
ষাটের কাছাকাছি বয়সেও অদম্য প্রাণশক্তি, করোনা সচেনতনায় পায়ে হেঁটে ভারত অভিযান দাসু দার
বয়স ষাটের কাছাকাছি হলেও, এখনও অদম্য প্রাণশক্তি তাঁর শরীরে। করোনা সচেতনতায় পায়ে হেঁটে সারা দেশ ঘুড়ে বেড়ালেন হাওড়ার দাসু দা। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা ঠাকুরদাস শাসমল। অধিকাংশ লোক তাঁকে দাসু নামেই চেনেন। পেশায় দিনমজুর হলেও করোনা সচেতনতায় তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগ অদম্য সাহসিকতার পরিচয় দেয়। করোনাভাইরাস সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতনতায় করতেই পায়ে হেঁটে ভারত অভিযান বছর ৫৯ দাসু দার।
- FB
- TW
- Linkdin
একেই বলে অদম্য প্রাণশক্তি। ষাট ছুঁইছঁই বয়সেও হার না মানার অঙ্গিকার। শুধুমাত্র, পায়ে হেঁটেই গোটা দেশ ঘুরে বেড়ালেন এক বৃদ্ধ। কী কারণে তাঁর এই উদ্যোগ। জানালে আপনিও অবাক হবেন।
গোটা বিশ্বে থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চিনের উহান প্রদেশ থেকে প্রথম ধাবা বসিয়েছিল। তারপরই খুব দ্রুত গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে এই করোনাভাইরাস।
মারণ এই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ত্রাহি ত্রাহি রব বিশ্ববাসীর। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে কিছু গাইডলাইন বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, মানুষের সচেতনতার অভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। গোটা ভারতও তার সংখ্যটাও কম নয়।
এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে এলেন বছর ৫৯ বয়সের প্রৌঢ়। পায়ে হেঁটে ভারত অভিযান করলেন তিনি। শুধুমাত্র মানুষের মনে করোনা সচেতনতা বৃদ্ধিতে।
তিনি আরও কেউ নন, আমাদের বাংলার নাগরিক। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা ঠাকুরদাস শাসমল। অধিকাংশ লোক তাঁকে দাসুদা নামেই চেনেন। ৫৯ বছর বয়সে করোনা সচেনতনায় গোটা ভারত অভিযান করলেন তিনি।
ঠাকুরদাস বাবু বাংলার একজন সাধারণ নাগরিক। পেশায় দিনমজুর। বাড়িতে স্ত্রী ছেলে-বউমা আছে। দুই মেয়ের বিয়ে আগেই দিয়ে ফেলেছেন। নাতি নাতনিও আছে। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করলেও সমাজ সচেতন তাঁর মধ্যে অনেকটাই বেশি।
করোনাভাইরাসের আবহে সমাজকল্যাণে মানুষের মনে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভারত অভিযান শুরু করেন। তাও আবার পায়ে হেঁটে। কিন্তু তাঁর একার পক্ষে এই আয়োজন করা সম্ভব ছিল না। তাঁর পাশে দাঁড়ায় উদয় নারায়ণপুরেক ভিলেজ বাইকার্স।
চলতি বছরের ২৪ অগাস্ট বর্ধমান থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন দাসু দা। সাইকেলে তাঁকে সঙ্গ দেন বছর চল্লিশের মনোজ মান্না। সঙ্গ নেন ভারত অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। যেমন তাঁবু, প্রেসার কুকার থেকে আরও অনেক কিছু।
তবে তাঁর এই উদ্যোগ নতুন নয়। উদয় নারায়ণপুর ভিলেজ বাইকার্স ক্লাবের সদস্য তিনি। মাঝে মধ্যেই অজানার খোঁজে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। ২০১৮ সালেও সোনালি চর্তুভুজ নামে একটি সংস্থা বেরিয়েছিল এই দাসু দা নিয়ে।
সে সময়, কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই, মুম্বই সফরে বেরিয়েছিলেন দাসু দা। মরণোত্তর দেহদান ও চক্ষুদান বিষয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি। এবার করোনা কালে মানুষকে সচেতন করতে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়লেন।
করোনা সচেতনতায় ভারত অভিযানে বেরিয়ে পথে ঘাটে নানান বাধার মুখে পড়েছিলেন ঠাকুরদাস শাসমল। কিন্ত কোনও বাধাকেই তোয়াক্কা করেননি তিনি। কখনও রাস্তায় ধারে ডাল রুটি খেয়েছেন। আবার কখনও রাস্তার ধারে খোলা জলে স্নানও করেছেন তিনি।
দিল্লি, মুম্বই, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ ঝাড়খন্ড সহ বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে বেড়িয়েছেন। শুধুমাত্র মানুষের মনে করোনা সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে।
তাঁবু আর ছোট স্টোভ নিয়ে রাস্তার ধারেই রাত কাটিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন রাজ্যের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। করোনা সচেতনতা বৃদ্ধিতে সজাগ করেছেন সাধারণ মানুষকে।
রবিবার দুপুরে দাঁতন এলাকার দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছিলেন দাসু দা। বুধবার সকালে কলকাতায় প্রবেশ করার কথা রয়েছে তাঁর। এরপর, সেখান থেকে বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।
পেশায় দিনমজুর করোনা সচেতনতায় ভারত অভিযানের জন্য যথেষ্ট টাকা পয়সা ছিল না তাঁর কাছে। তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানান জেলার প্রান্তিক মানুষজন।
প্রায় একশো দিনের সফরে ভিলেজ বাইকার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে তিরিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিছুটা নিজের পুঁজিও খরচ করেছেন ঠাকুরদাস বাবু। তাঁর এই অদম্য ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন অপামর দেশবাসী।