এক ঝলকে দেখে নিন ইউপি নির্বাচনের ২০টি সর্বাধিক আলোচিত আসন, কে কাকে দেবে টেক্কা
চলছে ইউপি নির্বাচন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় রয়েছে মোট ৪০৩টি আসন। এবার উত্তর প্রদেশ ৭ দফায় নির্বাচন হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল। এরপর ধাপে ১৪, ২০, ২৩ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়। দেখে নিন ইউপি নির্বাচনের ২০টি সর্বাধিক আলোচিত আসন।
- FB
- TW
- Linkdin
মুখ্যমন্ত্রী যোগা আদিত্যনাথ এই আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। এর আগে ২০১৭ সালের নির্বাচনে, বিজেপির ডাঃ রাধা মোহন দাস আগরওযাল এখান থেকে জিতেছিলেন। এই নির্বাচনে যোগীর বিপরীতে সুভাতী শুক্লাকে প্রার্থী করে হয়েছে। তিনি বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি প্রয়াত উপেন্দ্র দত্ত শুক্লার স্ত্রী। এই আসন থেকে খাজা শামসুদ্দিনকে প্রার্থী করেছে বিএসপি।
এই আসনের জন্য দাঁড়িয়েছে SP প্রধান অখিলেশ যাদব। ১৯৭৪ সাল থেকে কংগ্রেস একবার এবং বিজেপি একবার এখানে জিতেছে। ২০০২ সালে বিজেপি এই আসনে জিতেছিল। তাও শোভরান সিংয়ের কারণে। তিনি বর্তমানে এসপিতে রয়েছেন এবং তিনি টানা চারবার এই আসন থেকে নির্বাচনে জয়ী হচ্ছেন। তিনি অখিলেশ যাদবের জন্য আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। বিজেপির তরফে এবারের প্রার্থী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এসপি সিং বাঘেল।
এখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অখিলেশ যাদবের কাকা শিবপাল সিং যাদব। কংগ্রেস একবার এই আসে জিতেছে। মুলায়ম সিং যাদহ ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছয়বার এবং শিবপাল পাঁচবার নির্বাচনে জিতেছেন। বিজেপি যশবন্তনগর আসন থেকে বিবেক শাক্যকে টিকিয়ে দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে এসপির সঙ্গে জোট বাঁধেছে শিবপালের দল প্রগতিশীল সমাজবাদী পার্টি। সে কারণে এখানে প্রার্থী দেয়নি এসপি।
এই আসন থেকে নির্বাচনী ময়দানে রয়েছেন যোগী সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী সতীশ মাহানা। তিনি সাতবারের বিধায়ক ও অষ্টম বারের জন্য ভোটে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ফতেহ বাহাদুরকে নাামো হয়েছে এসপি-র পক্ষ থেকে। এই আসনটিকে হাই প্রোফাইল আসন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
কনৌজ আসনটি গত ২০ বছর ধরে এসপির দখলে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই আসন জয়ের জন্য বিজেপিকে অনেক শক্তি খরচ করতে হবে। এই আসনের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস অফিসার অসীম অরুণ।
রঘুরাজপ্রতাপ সিং ওরফে রাজা ভাইয়া এই আসন থেকে ৬ বার প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন। এবার তিনি তার দলকে জেতানোর জন্য মাঠে রয়েছেন। যোগেশ কুমার কুন্ডা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে, আর বিজেপির সিন্ধুজা মিশ্র মাঠে রয়েছেন। ২০১৭ সালের নির্বাচনে তিনি যে হলফনামা দিয়েছিলেন তার মতে, তার বিরুদ্ধে ৩৯৫, ৩৯৭, ৩০৭, ৩৬৪, ৩২৩, ৩২৫, ৫০৪, ৫০৬, ৪২৭, ৩৪ ধারায় মামলা রয়েছে।
সালমান খুশিদের স্ত্রী লুই খুরশিদ সদর আসনে প্রার্থী। লুইসের বিরুদ্ধে টিকিট পেয়েছেন বিজেপির বর্তমান বিধায়ক মেজর সুনীল দত্ত দ্বিবেদী। একই সঙ্গে মহাদলের জাতীয় সভাপতি কেশম দেব মৌর্যের স্ত্রী সুমন মৌর্যকে প্রার্থী করেছে সমাজবাদী পার্টি। লুইসকে মাঠে নামিয়ে কংগ্রেস এখানে কোনও সাফল্য পায় কি না, তা সময় বলবে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই এই আসনটি আলোচনায় রয়েছে। এই আসনের জন্য মুলায়ম সিং যাদবেবর ছোট পুত্রবধূ অপর্ণা যাদব শুধুমাত্র সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি এই আসনটি বিজেপির কাছে হেরে গিয়েছিলেন। বিএসপি অনিল পান্ডেকে প্রার্থী করেছে এবং কংগ্রেস এখানে দিলপ্রীত সিং ভিরকিকে প্রার্থী করেছে।
এই আসনটি বরাবরই এসপির দখলে। ২০১৭ সালে বিজেপি নির্বাচনে জিতে প্রথমবার এখানে এসেছিল। এই পদের লড়াই আকর্ষণীয় হবে। এখান থেকে অলোক কুমার শাক্যকে টিকিট দিয়েছে এসপি। এই আসনটি বরাবরই সমাজবাদী পার্চি দখলে ছিল। ১৯৮৯ থেকে ২০১২ সালে নির্বাচনে, সমাজবাদী পার্টি এখানে ধারাবাহিকভাবে জিতেছিল।
কানপুরের এই আসনটি বহুদিন ধরেই সমাজবাদী পার্টির দখলে ছিল। এখানের বিধায়ক হাজি ইরফান সোলাঙ্কি। ২০১৭ সালে ইরফান ৫৮২৬ ভোটে বিজেপির সুরেশ অবস্থিকে পরাজিত করে। এখান থেকে সলিল বিষ্ণোইকে টিকিট দিয়েছে বিজপি। কংগ্রেস প্রার্থী হাজি সুহেল আহমাদি। এখন দেখার এই পদে কে জয় লাভ করে।
এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউপির ডেপুটি সিএম কেশব প্রসাদ মৌর্য। সমাজবাদী পার্টি জোট এই আসনে জেপুটি সিএমের বিরুদ্ধে আপনা দল কামারওয়াড়ির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ পল্লবী প্যাটেলকে প্রার্থী করেছে। পল্লবী তার দলের প্রতীক পরিবর্তে সমাজবাদী পার্টির সাইকেল প্রতীকে নির্বাচনে লড়ছেন।
কুশীনগরের এই আসনে বিজেপি থেকে এসপিতে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য নির্বাচনে লড়ছেন। এর আগে স্বামী প্রসাদ তিনবার রদরুনা থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। কিন্তু, অখিলেশ এবার তার আসন বদল করলেন। তাই একানে প্রতিযোগিতা কঠিন। ২০১২ সাল থেক বিজেপি বিধায়ক গঙ্গা সিং কুশওয়াহার ছেলে সুরেন্দ্র কুশওয়াহা মৌর্যকে কঠি লড়াই দিচ্ছেন।
কুশনগর জেলার এই আসনটি ২০১৭ সালে বিজেপির স্বামী প্রসাদ মৌর্য জিতেছিলেন। এখানে বহুজন সমাজপার্চি জাভেদ ইকবাল ছিলেন দুই নম্বরে। এবার এসপি প্রাক্তন ব্লক প্রধান বিক্রম যাদবকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কংগ্রেস এখানে যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মবম্মদ জাহিরুদ্দিনকে প্রার্তী করেছে। মনীশ জয়সওয়ালকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি।
এখানে প্রার্থী হচ্ছেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অজয় কুমাপ লালু। এসপি প্রার্থী দেননি। বিজেপি জোট তমকুবি রাজের আসনটি নিষাদ পার্টিকে দিয়েছে। এখান থেকে ডাঃ অসীম কুমার প্রার্থী হয়েছেন। গতবার বিদেপি এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনে জিতেছিলেন লালু। গত দুই মেয়াদে তিনি বিধায়ক।
বিজেপি প্রাক্তন গভর্নর বোরী রানী মৌর্যকে তার প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। মহেশ কুমার জাটবকে টিকিট দিয়েছে এসপি আরএলডি জোট। বিএসপি কিরণ প্রভা কেশরীকে ও কংগ্রেস উপেন্দ্র সিংকে প্রার্থী দিয়েছে বেরী রানী মৌর্য আগ্রার মেয়র হয়েছেন। তাই বিজেপি তাকে এখান থেকে প্রার্থী করেছে।
বিজেপি বিধায়ক তেজেন্দ্র নিরওয়ালকে আবার সুযোগ দিয়েছে। ২০১৭ সালে, নিরওয়াল এখান থেকে জিতেছিলেন। তিনি আইএনসি-র পঙ্কজ কুমার মালিককে ২৯৭২০ ভোটে পরাজিত করেছে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের এই আসনটি বরাবরই খবরে আসে। এসপি আরএলডি জোট এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে প্রসন্ন চৌধুরী, বিএসপি থেকে বিজেন্দ্র মালিক কুদানা এবং আম আদমি পার্টি বিজেন্দ্র মালিক কুরমালি। এই আসনের মুসলিম প্রার্থী আইয়ুব জংকে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস।
এখান থেকে প্রয়াত সাংসদ বাবু হুকুম সিংয়ের মেয়ে মৃগাঙ্কা সিংকে আরেকবার সুযোগ দিয়েছে বিজেপি। কাইরানা আন থেকে রাজে্দ্র সিং উপাধ্যায়কে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএসপি। আম আদমি পার্টির হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারাসপাল। এসপি আরএলডি জোটের প্রার্থী বিধায়ক নাহিদ হাসান। কাইরানা আসনে হিন্দু মুসলি ইস্যু প্রাধান্য পেয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এই আসনটি আজম খানের দখলে। গতবারও এখান থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন এসপি নেতা আজম খা। এবার তিনি কারাগার থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কংগ্রেস নবাব কাজিম আলি খানকে মনোনয়ন দিয়েছে। সমাজবাদী পার্টির এই দুই দুর্গ ভাঙতে বিজেপি সফল হয় কি না সেটাই দেখার।
এই আসনে বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্ত নাথ সিং। সবচেয়ে ধনী প্রার্থী তিনি। হলফনামায় তিনি ৩২ কোটি টারার সম্পদ ঘোষণা করেছেন। রিচা সিংহকে একান থেকে প্রার্থী করেছে এসপি। তার সম্পদ ৩৭ লক্ষ। কংগ্রেস প্রার্থী তসলিমুদ্দিন আৎ বিএসপি গোলাম কাদির।
মন্ত্রী রাজেন্দ্র প্রতাপ সিং এখান থেকে ইউপি সরকারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এসপি প্রার্থী রাম সিং। কংগ্রেস প্রার্তী সুনীতা। আম আদমি পার্টিও এই আসনে আজয় যাদবকে টিকিট দিয়েছে। তিনি নিজের আসন ধরে রাখেন নাকি হাওয়া বদল হয়, সেটাই দেখার।