অসমের মত এবার বেহাল বন্যা পরিস্থিতি মেঘালয়তেও, বানভাসি পশ্চিম গারোয় গৃহহীণ লক্ষাধিক
যত দিন যাচ্ছে, ক্রমশ অবনতি হচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতির। বন্যার গ্রাসে এখনও পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি প্রাণ গিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, অসমের বন্যায় প্রায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদিকে অসমের সঙ্গেই এবার মেঘালয়ের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের পশ্চিম গোরা পার্বত্য এলাকায় বন্যার গ্রাসে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
- FB
- TW
- Linkdin
গোটা অসমে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে উঠছে, তখন বন্যা পরিস্থিতিও আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, রাজ্যের কাছে দুটোই কঠিন চ্যালেঞ্জের। এখনও মানুষ কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। রাজ্যবাসীকে সবরকম সুবিধা ও সর্বত ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকারও।
অসমের বন্যায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও ক্ষতিগ্রস্থ। বন্যার গ্রাস থেকে সকলকেই উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। তাঁদের সুরক্ষিত জায়গায় ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অসম স্টেট ডিজাজটার ম্যানেজমেন্ট অথোরিটি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজ্যের প্রায় ৩১টি জেলায়। রাজ্যের মোট সাড়ে চার হাজার গ্রামের পরিস্থিতি ভয়াবহ।
গোটা রাজ্যের প্রায় ৩১৮১ টি গ্রাম জলের তলায়। মোট ৮৭.৬০৭ হেক্টর জমির শস্য সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের মোট ২৪টি জেলায় ৩২৭টি ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই ত্রাণকেন্দ্রগুলিতে প্রায় ১৭ হাজার জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
ধীমাজি, বিশ্বনাথ, গোলাঘাট, জোরহাট, মাজুলি, শিবাসাগর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়ার বিস্তৃণ এলাকা এখন বন্যা কবলিত। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরপেটা জেলার। এই জেলায় প্রায় ৭.৩৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।
বন্যার কবলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মরিগাঁওয়ের প্রায় তিন লক্ষ মানুষ। ব্যাপক বৃষ্টির জেরে ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছেই, এবার ফুঁসতে শুরু করেছে বরাক নদও। ফলে আরও পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ছে অসমে। কাছাড় ও করিমগঞ্জ জেলার বিস্তৃণ এলাকাও বন্যার কবলে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থা কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের। গোটা অসমই যেখানে কার্যত জলের তলায়, সেখানে বন্যার জেরে প্রাণ হারিয়েছে কাজিরাঙার ৯টি গন্ডার সহ ১০৮টি বন্যপ্রাণীও।
কাজিরাঙার ১৭০টি প্রাণীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে অসমের বন দফতর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত বৃহস্পতিবারই অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল কাজিরাঙায় যান।
এদিকে উত্তর-পূর্বের আরেক জেলা মেঘালয়ও এবার বানভাসি। পশ্চিন গারো পার্বত্য এলাকায় জলের তলায় বিস্তির্ণ এলাকা। যার ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক।
মেঘালয়ের গারো অঞ্চলে এখনও ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার অতিরিক্ত জলেই প্লাবিত হয়েছে এই অঞ্চল। যার ফলে ১৭৫টি গ্রাম জলের তলায়।
পশ্চিম গারো পার্বত্য এলাকার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।