- Home
- India News
- বাণিজ্য যুদ্ধে কোনঠাসা জিনপিং, চিনে টিভি উৎপাদন বন্ধ করল স্যামসাং, ভারতে এল অ্যাপেলের ৮ টি ফ্যাক্টরি
বাণিজ্য যুদ্ধে কোনঠাসা জিনপিং, চিনে টিভি উৎপাদন বন্ধ করল স্যামসাং, ভারতে এল অ্যাপেলের ৮ টি ফ্যাক্টরি
ভারত ও চিনের মধ্যেকার বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে লাগাতার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বেজিং সরকার। প্রথমে করোনাভাইরাস, তারপর লাদাখ সীমান্তে ভারতের সঙ্গে বিবাদ, সবকিছু মিলিয়ে গোটা বিশ্ব এখন ড্রাগনদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নারাজ। তাই বিভিন্ন বড় বড় দেশ তাদের প্রভাবশালী কোম্পানিগুলিকে চিন থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার পরামর্শই দিচ্ছে।
- FB
- TW
- Linkdin
চানিরে সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ যতই বাড়ছে ততই ভারতের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার মত বিশ্বের তাবড় দেশগুলো। কারণ অবশ্যই বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত উৎপাদন ক্ষমতা শীর্ষে থাকা। বৈশ্বিক নির্মাতা হিসাবে ভারত দিনকে দিন নিজেকে যোগ্য করে তুলছে।
বর্তমান চিনের সঙ্গে সকল ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবার ভারতের দিকে ঝুঁকছে প্রভাবশালী দেশগুলো। এই অবস্থায়য় দেশের বাণিজ্যে উন্নতির পথে আরও এক বড়সড় পদক্ষেপ নিয়ে ফেলল মোদী সরকার। এবার ভারতের মাটিতে যে সমস্ত বিদেশী মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা কার্যকরী রয়েছে, তাদের মোবাইল ভারত থেকে বাইরে রফতানি হবে। এই মর্মে সরকারের এক বিশেষ প্যানেল ছাড়পত্র দিয়েছে।
আইফোন তৈরির জন্য চুক্তির আওতায় থাকা, ফক্সকন, পেগাট্রন, উইস্ট্রন,স্যামসং, লাভার মতো সংস্থা মোবাইল তৈরি করে তা বিদেশে রফতানি করবে। এদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে আইফোনের মতো অ্যাপ্লিকেশন। বহু প্রস্তাব ভারত সরকারের কাছে এই মর্মে আগে থেকেই এসেছিল। এবার ভারত সরকার জানিয়েছে প্রায় ৭. ৩ লাখ কোটি টাকার মতো এই অ্যাপ্লিকেশনগুলি রফতানিতে ছাড়পত্র দিয়েছে সরকারের বিশেষ প্যানেল।
এর সুফলও মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। ৮ টি অ্যাপেল আইফোন প্রস্তুতকারী কারখানা ছেড়ে ভারতে চলে এসেছে। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বিষয়ে জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া ভারতের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখেছে। ভারত ধীরে ধীরে বৈশ্বিক নির্মাতা হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করতে সক্ষম হচ্ছে। বহির্বিশ্বে ভারতের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮ টি অ্যাপেল আইফোন প্রস্তুতকারী কারখানা চিন ছেড়ে ভারতে নিজেদের পসার জমানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে।
সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে চিন থেকে সরিয়ে অ্যাপেলের আটটি কারখানা ভারতে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বেজিংয়ের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
অ্যাপলেরে পথে হাঁটছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা স্যামসাং। কিছু বছর আগেই চিনে নিজেদের স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা বন্ধ করে দেয় স্যামসাং। এবার চিন থেকে নিজেদের টিভি উৎপাদন কারখানাটিও সরিয়ে নিয়ে যেতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ান এই সংস্থা।
সম্প্রতি স্যামমোবাইলের-এর একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, চিনের তিয়ানজিনের টিভি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট বন্ধ করার কথা ভাবনাচিন্তা করছে স্যামসাং। খবর এমনও পাওয়া গিয়েছে যে, আজ নয়। সেই ২০১৮ সাল থেকেই এই ছক কষছে সংস্থাটি। তবে এবার পুরোপুরি ভাবেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে তৎপরতা দেখাতে শুরু করে দিয়েছে স্যামসাং।
সামরিক এবং কূটনৈতিক ভাবে চিনকে চাপে রাখার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভাবেও বেজিংকে এবার ধাক্কা দিতে চাইছেদিল্লি৷ কয়েকদিন আগেই দ্বিতীয় দফায় ১১৮টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত৷ নিষিদ্ধ করা হয়েছে টিকটক, পাবজির মতো জনপ্রিয় চিনা অ্যাপগুলিকে৷ এবার অ্যাপেলও তাদের আটটি কারখানা ভারতে নিয়ে আসায় আরও কোণঠাসা জিনপিং প্রশাসন।
বিহারের প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশে একটি ভিডিও কনফারেন্সে রবিশঙ্কর প্রসাদ আরও জানান, লাদাখে যে কোন প্রকার উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হোক না কেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কখনই তাঁর দৃঢ়তা হারান না। তিনি সর্বদাই একথা বলেছেন, যে ভারত যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেদের সার্বভৌমত্বের সাথে আপস করবে না। ভারতের এই সাহসী পদক্ষেপের পাশে বিশ্বের অন্যন্য শক্তিধর দেশগুলোও আছে।
বর্তমানে বিশ্বের তাবড় মোবাইল সংস্থাগুলি একের পর এক বাণিজ্য প্রস্তাব ভারতকে দিচ্ছে । স্যামসং ও অ্যাপেলের তরফে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মোবাইল প্রস্তুতির হিসাব দেওয়া হয়েছে। যে প্রস্তাবও ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, এর প্রেক্ষিতে ভারতের বাণিজ্যের উন্নতি যেমন হবে, তেমনই বোঝা যাচ্ছে যে বিশ্বের তাবড় সংস্থার মানুষের আস্থা রয়েছে ভারতের ওপর।
ভারতকে মোবাইল প্রস্তুতির হাব হিসাবে গড়ে তোলাই কেন্দ্রের পিএলআই স্কিমের মূল লক্ষ্য। এর ফলে বিশ্বর তাবড় ব্র্যান্ডের মোবাইল প্রস্তুত হবে ভারতে। আর ভারত তা রপ্তানি করতে পারবে। ফলে ভারতের তথ্য় ও প্রযুক্তি ক্ষেত্র এতে অনেকটা চাঙ্গা হবে বলে খবর। বহু সংস্থাই ভারত-চিন সংঘাতের মধ্যে ভারতকেই ব্যবসার জন্য় বেছে নিচ্ছে। এমনকি মোবাইল প্রস্তুতকারকের হাব ভিয়েতনাম থেকেও ব্যবসা গুটিয়ে তারা ভারতে আনতে চাইছে।