- Home
- India News
- ষাটের দশকের স্মৃতি উস্কে দিল্লি থেকে এবার বাস ছুটবে লন্ডনে, বিশ্বভ্রমণে যেতে চাইলে এখনি জেনে নিন বিস্তারিত
ষাটের দশকের স্মৃতি উস্কে দিল্লি থেকে এবার বাস ছুটবে লন্ডনে, বিশ্বভ্রমণে যেতে চাইলে এখনি জেনে নিন বিস্তারিত
১৯৬০ সালে কলকাতা থেকে লন্ডন যাওয়ার জন্য বাস সার্ভিস চালু হয়েছিল। আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তবে এবার কলকাতা নয় দিল্লি থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবে বাস। গুরগাঁওয়ের অ্যাডভেঞ্চার ওভারল্যান্ড নামের একটি ট্যুর সংস্থা ভারত-লন্ডন রুটে বাস সার্ভিস চালু করেছে।
| Published : Aug 24 2020, 09:23 AM IST / Updated: Aug 24 2020, 09:24 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
বিশ্বভ্রমণে আগ্রহীদের জন্য সুখবর। দিল্লি সহ ভারতের যে কোনও প্রান্ত থেকে লন্ডন যেতে চাইলে সাধারণত বিমানে করেই যেতে হয়। কিন্তু এবার সড়কে বাসে চেপেও দিল্লি থেকে লন্ডনে পাড়ি দিতে পারবেন। গুরগাঁও-এর একটি বেসরকারি ট্রাভেল কোম্পানি ১৫ অগাস্ট একটি বাস লঞ্চ করেছে, যার নাম 'বাস টু লন্ডন'। এই বাসে ৭০ দিনে লন্ডনে পৌঁছনো যাবে, তাও আবার সড়ক পথে।
৭০ দিনের এই বাস যাত্রায় দিল্লি থেকে লন্ডনে পৌঁছতে সওয়ারিদের অন্য আরও ১৮ টি দেশের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। ভারত ছাড়াও এই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, চিন, কিরঘিজস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, রাশিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড।
১৫ অগাস্ট এই বাস সার্ভিস-এর ঘোষণা করেছে গুরগাঁওয়ের সংস্থাটি। সংস্থার দুই কর্ণধার তুষার ও সঞ্জয় মাদান এর আগে দিল্লি থেকে লন্ডন সড়কপথে গিয়েছিলেন। তাঁরাই এই রোমাঞ্চভরা পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছেন। । ২০১৭,২০১৮ ও ২০১৯-এ তাঁর গাড়িতে করে এই সফর করেছেন। আর এই অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ জনের সঙ্গে বাসে করে যাত্রা সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
'বাস টু লন্ডন'-এ সফরের সময় সওয়ারিদের সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে। এই সফরের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হচ্ছে বাস। থাকছে ২০ জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা। সমস্ত আসনই বিজনেস ক্লাসে। ২০ জন যাত্রী ছাড়াও বাসে থাকবেন আরও চারজন। তাঁরা হলেন, একজন চালক, একজন সহকারী চালক। আয়োজকদের পক্ষে এক ব্যক্তি ও একজন গাইড। ১৮ দেশ সফরে গাইড বদলে যাবে, এতে যাত্রীদের কোনও অসুবিধা হবে না।
ঘুরতে ভালবাসেন যারা তাদের কাছে এর থেকে ভাল সুযোগ আর আসবে না। ৭০ দিনের এই সফরে থাকবে সবরকম ব্যবস্থা। সংস্থাটি যাত্রীদের বিভিন্ন দেশে ফোর বা ফাইভ স্টার হোটালে থাকার ব্যবস্থা করে দেবে।
যাত্রীরা অন্য দেশে ভারতীয় খাবার খেতে চাইলে, সেই অনুসারে তা দেওয়া হবে।
এই সফরের জন্য ১০ টি ভিসা প্রয়োজন। যাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য ট্রাভেলার কোম্পানি যাত্রীদের ভিসার পুরোপুরি ব্যবস্থা করবে।
দিল্লি থেকে লন্ডনে এই সফরের জন্য খরচ হবে ১৫ লক্ষ টাকা।
'বাস টু লন্ডন'-এর এই সফরের জন্য চারটি ক্যাটেগরি বেছে নেওয়া হয়েছে। কারুর সময় কম রয়েছে এবং তিনি লন্ডন পর্যন্ত সফর সম্পূর্ণ করতে পারবেন না, কিন্তু অন্য দেশ ঘুরে দেখতে চান, তাহলে তাঁকে অন্য ক্যাটেগরিতে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। প্রত্যেক ক্যাটেগরির জন্য অর্থের পরিমাণ ভিন্ন। লন্ডন পর্যন্ত সফরের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এই সফরের জন্য ইএমআই-এর বিকল্পও থাকছে।
এই বাস যাত্রার ২০২১-এর মে মাসে রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। যদিও করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সফরের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়নি। ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশের পরিস্থিতি দেখে যাত্রা শুরু করা হবে।
তবে অবাক করা বিষয় হলো ভারত-লন্ডন রুটে এই প্রথম বাস সার্ভিস চালু হলো, তা নয়। এর আগে ১৯৬০ সালে কলকাতা থেকে লন্ডন যাওয়ার জন্য বাস সার্ভিস চালু ছিল।
অ্যালবার্ট নামের একটি ডাবল ডেকার বাস ওই সময় ১৫ বার যাওয়া আসা করেছে লন্ডন ও সিডনির পথে। অ্যালবার্ট বাসটি লন্ডন, বেলজিয়াম, পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রিয়া, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করতো।
সফরের আগে লন্ডন, কলকাতা ও সিডনির মধ্যে বাসটির নিয়মিত চলাচলের একটি বার্ষিক সময়সূচী প্রকাশ করত অ্যালবার্ট ট্যুরস নামের সংস্থাটি। হাইরোড ফর ওজ বলছে, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ট্রিপগুলো সিডনি-লন্ডন আসা-যাওয়া করত। অন্যদিকে, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ট্রিপগুলো চলত লন্ডন-কলকাতা রুটে। ভারতে পৌঁছে বাসটি দিল্লি, আগ্রা, বেনারস ও কলকাতায় যাত্রা বিরতি করতো। কলকাতা ও লন্ডনের মধ্যে ভ্রমণপ্রতি ভাড়া ছিল ৮৫ পাউন্ড বা প্রায় ৭ হাজার ৮৮৯ রূপি। সংখ্যাটি সেই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
১৯৭২ সালের ২৫ জুলাই লন্ডন থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়া বাসটি কলকাতায় পৌঁছায় একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ সে সময় লন্ডন থেকে কলকাতা যেতে লেগেছিল ৪৯ দিন। ষাটের ওই বাসে কিছু বাড়তি 'বিলাসবহুল সার্ভিস'ও ছিল। যেমন- লোয়ার ডেকে একটি রিডিং ও ডাইনিং রুম, আলাদা আলাদা স্লিপিং বাঙ্ক, যাত্রীদের উষ্ণতা দিতে ফ্যান হিটার, এবং দীর্ঘ এ যাত্রাপথে বাসের ভেতর বাড়ির অনুভূতি দিতে চমৎকার সাজসজ্জা।