অক্সিমিটার অ্যাপে সাইবার হামলার ঝুঁকি, আঙুলের ছাপ-সহ সংবেদনশীল তথ্য কি যাচ্ছে চিনে
- FB
- TW
- Linkdin
রক্তে অক্সিজেনের শতকরা হার একটা মাত্রার নিচে নেমে গেলে রোগীকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়, নাহলে তাঁকে রক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই কোভিড মহামারির সময়ে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করাটা দরকারি।
পাল্স অক্সিমিটারের পাশাপাশি বেশ কিছু মোবাইল অ্যাপ বর্তমানে এই পরিষেবা স্মার্ট ফোনেই দেওয়ার দাবি করছে। ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার বা টাচ স্ক্রিনের কোনও এক জায়গায় আঙুল রাখলে, অ্যাপের মাধ্যমেই অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যাবে, এই হাতছানিতে পা বাড়াচ্ছেন অনেকেই।
এই অক্সিমিটার অ্যাপ্লিকেশনগুলি গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার পরিবর্তে ব্যবহারকারীদের আঙুলের ছাপ-সহ ফোনে থাকা আরও বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য চুরি করার চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষদিকে, ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন সাইবার হাইজিন সম্পর্কিত একটি টুইটার প্রোফাইল দাবি করেছে এই অ্যাপগুলির মারফত সাইবার হামলার হুমকি রয়েছে। তারা নাগরিকদের ফোনে অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া অ্যাপগুলি ডাউনলোড না করার বিষয়ে সতর্কও করেছে।
তারা বলেছে, এই স্ক্যাম অ্যাপ্লিকেশনগুলি ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার-এর মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ফোন খারাপও করে দিতে পরে। এই জাতীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলি সাধারণত গুগল প্লে স্টোরের বাইরে থেকে ডাউনলোড করতে হয়। যা সাইবার হামলার ঝুঁকি আরও বাড়ায়।
সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের মাধ্যমে কোনওভাবেই অক্সিমিটার-এর কাজ করা সম্ভব নয়। কারণ রক্তে অক্সিজেনের শতকরা হার জানার জন্য রক্তের অক্সিজেন সেন্সর প্রয়োজন। আর হৃৎস্পন্দনের হার জানতে লাগে হার্টবিট সেন্সর। বাজারে এখন যে স্মার্টফোনগুলি পাওা যায়, তাতে এই দুই সেন্সরের কোনওটিই থাকে না। কাজেই যে অ্যাপগুলি ফোনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ব্যবহার করে অক্সিজেনের মাত্রা এবং হার্টরেট জানানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, সেগুলির উদ্দেশ্য যে ভালো নয়, তা একেবারে স্পষ্ট।
বর্তমানে ভারত-চিন উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় নাগরিকদের সাইবার সুরক্ষা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ভারত সরকার। তথ্য চুরি করতে পারে এমন অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চিন ভারতীয় নাগরিকদের তথ্য হাতাতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন সাইবার সুরক্ষা বিভাগের এই সতর্কতার সঙ্গে চিনের কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত নয়।
তবে, ভুয়ো অক্সিমিটার অ্যাপ্লিকেশনগুলি এই জাতীয় সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির কাজে লগানো হতেই পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাজেই, যাঁরা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে আগ্রহী তাদের কোনও মেডিকেল বা অনলাইন স্টোর থেকে একটি প্রকৃত পাল্স-অক্সিমিটার কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।