কৃষক আন্দোলন - মনমোহন-বুদ্ধ ভট্টাচার্যের রাস্তাতেই চলেছেন নরেন্দ্র মোদী, পরিণতি কি একই হবে
First Published Dec 5, 2020, 4:35 PM IST
২০১১ সালে। আন্না হাজারের আন্দোলনে বিধ্বস্ত হয়েছিল মনমোহন সরকার। সেই আন্দোলনকে রুখতে প্রথমে উদাসিনতা, তারপরে দমন-পিড়নের পথ বেছে নিয়েছিল ইউপিএ-২ সরকার। আর তার ফলে এই আন্দোলন হয়ে উঠেছিল ইউপিএ-২ সরকারের কাছে শাঁখের কড়াত। তারও আগে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএম সরকার-এর জন্য একই পরিণতি বয়ে এনেছিল সিঙ্গুর নন্দিগ্রাম আন্দোলন। দুই ক্ষেত্রেই সরকার একইসঙ্গে দুর্বল বলে প্রমাণিত হয়েছিল, এবং জনগণের চোখে মনে তৈরি হয়েছিল সরকারের অনৈতিক ভাবমূর্তি। বর্তমানে দিল্লিতে যে কৃষক আন্দোলন চলছে, সেই ক্ষেত্রে প্রায় ইতিবাহাসের পুনরাবৃত্তি গঠতে দেখা যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মনমোহন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভুলই করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পথে চললে, তাঁরও পরিণতি একই হতে পারে।

২০১১ সালে যখন ইউপিএ-২ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেছিলেন আন্না হাজারে, তখন মনমোহন সিং-এর নেতৃত্বাধীন (সনিয়া গান্ধী নিয়ন্ত্রিত) ইউপিএ-২ সরকার, প্রথমে সেই আন্দোলনকে পাত্তাই দেয়নি। কিছু অনুগামীদের নিয়ে রাজধানীতে নিয়মিত আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলেন, দেখেও দেখেনি সরকার। তারপর যখন সেই আন্দোলনের পালে জোর বাতাস লেগেছে, তখন আন্না হাজারে, কেজরিওয়ালদের মতো আন্দোলনের পুরোধা-সহ সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। সিঙ্গুর-নন্দিগ্রাম আন্দোলনের সময়ও পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারকে একি রকম ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছিল।

আবার সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে দিল্লিতে। প্রথমে সংসদে সংখ্যার জোরে কৃষকদের সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ভারতীয় কৃষির আইনি কাঠামো আমূল বদলে দিল সরকার। এমনকী বিজেপি-র কৃষক সংগটগুলির সঙ্গেও আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেননি মোদী। বিলটি আইন হওয়ার পর থেকেই পঞ্জাব-সহ সারা দেশেই তা নিয়ে ছোট-বড় প্রতিবাদ হয়েছিল। তাতে কর্ণপাত করেনি মোদী সরকার। তারপর কৃষকরা দিল্লি যাত্রা শুরু করলে ব্যারিকেড দিয়ে, বোল্ডার দিয়ে, রাস্তা খুঁড়ে, জল কামান এবং টিয়ার গ্যাস ব্যাবহার করে, লাঠির বাড়ি মেরে - নানাভাবে তাদের দিল্লি আসা আটকানোর চেষ্টা করা হল। শেষ পর্যন্ত দিল্লির সীমান্তে কৃষকরা যখন শিবির গড়লেন, তখনও সরকার আলোচনার জন্য় একাধিক শর্ত চাপালো।
Today's Poll
একসঙ্গে কতজন প্লেয়ারের সঙ্গে খেলতে পছন্দ করেন