গালওয়ান থেকে প্যাংগং-এ ভারত-চিনের দ্বৈরথ, ফোটো নিউজে টাইম লাইন
- FB
- TW
- Linkdin
১৫ জুন লাদাখের গ্যালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ছিল ভারতীয় সেনা। কর্নেল সন্তোষবাবু সহ ২০ জওয়ান নিহত হয়। ভারতীয় সেনার কথায় প্রায় ৪০ জন চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেজিং নিহত সেনার কথা স্বীকার করেনি।
এই ঘটনার পর রীতিমত নড়েচড়ে বসে ভারত। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯ জুন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন। আর এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও অনুপ্রবেশ হয়নি।
তারপরেই উত্তপ্ত থেকে যায় লাদাখ সীমান্ত। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত পাঁচবার ভারত ও চিনা সেনা কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। তিন বার বৈঠক হয়েছিলেন সীমান্তের ওপারে মলডোতে। দুবার বৈঠক হয়েছিল চুসুলে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিতর্কিত এলাকা নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র পৌঁছাতে পারেনি দুই দেশের সেনা বাহিনী।
সেনা বাহিনী সূত্রের খবর সীমান্ত উত্তাপ কমাতে একাধিকবার সামরিক পর্যায়ের বৈঠক হলেও প্রথম দিকে বেশ কয়েকটি এলাকায় চিনা সেনার অনুপ্রবেশের ছবি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইট ইমেজে। যারমধ্যে অন্যতম ছিল গ্যালওয়ান নদী সংলগ্ন এলাকায়।এই এলাকায় চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা একের পর এক তাঁবু তৈরি করেছিল। আনা হয়েছিল সাঁজোয়া গাড়িওছ কিন্তু পরে অবশ্য সেগুলি সরিয়ে নেয় পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা।
বর্তমানে চিনা সেনার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে প্যাংগং লেক সংলগ্ন এলাকায়। এই এলাকায় ৫-৬ নম্বর ফিঙ্গার অঞ্চলে রীতিমত তাঁবু তৈরি করেছে চিনা সেনা। আনা হয়েছে সৌর প্যানেল আর রেডার। বেশ কয়েকটি নৌকার ছবিও ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। এই এলাকা থেকে বেজিং সেনা সরিয়ে নিতে অসম্মত হয়েছে।
অন্যদিকে গোগরা পাস আর দোপসাং উপত্যকায়ও অবস্থান করে রয়েছে চিনা সেনা। প্যাংগং সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভারত ও চিন দুই দেশের সেনাই মুখোমুখি অবস্থান করছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দুই দেশই শান্তি বজায় রেখেছে। তবে গালওয়ান এলাকা থেকে চিনা সেনা একদম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভারত ও চিন সর্বশেষ বৈঠকের আগেই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে জানান হয়েছিল ভারত ও চিন দুই দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা রেখা থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু ভারত চিনের এই দাবি মানতে অস্বকার করে স্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল এখন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা রেখা সংলগ্ন এলাকায় মজুত রয়েছে চিনা সেনা।
পূর্ব লাদাখ এলাকায় চিনা অগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের মনের জোর বাড়াতে সেনা ছাউনিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত তেশরা জুলাই আচকাই লাদাখের সেনা ছাউনিতে চলে যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘ সময় কাটান সেনাজওয়ানদের সঙ্গে। আহত জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলতে লাদাখের সেনা হাসপাতালে যান।
পরবর্তীকালে ১৯ জুলাই প্রতিরক্ষা রাজনাথ সিং ও সেনা প্রধান নরাভানেও পূর্ব লাদাখের ফরোয়ার্ড এলাকা পরিদর্শন করেন। কথা বলেন সেনা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে। বিশেষত ১৬ নম্বর বিহার রেজিমেন্টের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। গালওয়ানে চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ছিল বিহার রেজিমেন্টের সহস্যরা।
সূত্র বলছে অগাস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই পূর্ব লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকায় আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। অন্যান্য বছরগুলিতে ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন রাখা হয় না। কিন্তু চলতি বছর চিনা সেনার অগ্রাসনের কারণে শীলকালেও সেনা মোতায়েন রাখা হবে। আর সেই কারণে এখন থেকে রসদ ও বিশেষ সরঞ্জাম মজুত করার কাজ শুরু হয়েছে।