জলবায়ু পরিবর্তনেই কি হিমবাহ বিস্ফোরণ, ৭ বছর পর কেদারনাথের স্মৃতি ফিরে এল চামোলিতে
- FB
- TW
- Linkdin
২০১৩ সালের প্রবল বৃষ্টি হয়েছে কেদারনাথ সংলগ্ন এলাকায়। সেই সময় বৃষ্টি হয়েছিল ৩৪০ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৬৫,৯ মিলিমিটারের তুলনায় ৩৭৫ শতাংশ বেশি। সেই সময় কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল।
রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক ছিল উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়। স্থানীয়বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন এদিন সকাল থেকেই আবহাওয়া ছিল অত্যান্ত মনোরম। কিন্তু তারপরই ঘটে বিপত্তি। হিমবাহ ভেঙে তুষারধস ভাসিয়ে নিয়ে নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম।
বিশেষজ্ঞদের মতে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অনেক কম পরিমাণে তুষারপাত হয়েছে এই উত্তরাখণ্ডে। বিশেষজ্ঞদের মতে শীতের সময় তুষারপাত আর বৃষ্টি হিমবাহগুলিকে পরিপূর্ণ করে দেয়। যে কোনও কাঠামোগত সমস্যারও সমাধান করে। চলতি বছর তুষারপাত কম হয়েছিল। আর সেই কারণেই এজাতীয় বিপর্যয় হতে পারে বলেও মনে করছে উত্তরাখণ্ডের জিবি প্যান্ট ইনস্টিটিউসনের গবেষক সন্দীপন মুখোপাধ্যায়।
গবেষক জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের প্রায় ২০০টিরও বেশি হিমবাহ রয়েছে। শীতের সময় হিমবাহ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। মার্চ থেকে সেম্পেম্বর মাস পর্যন্ত হিমবাহ পরিদর্শন করা হয়।
হিমালয়ে প্রায় ৮ হাজার আটশো টি হিমবাহ হ্রদ রয়েছে। যার মধ্যে ২০০টি বেশি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত। হিমালয়ে বন্যা আর ভূমি ধ্বসের কারণে পাহাড়ি নদির গতিপথ বাধা পেয়েছ। হিমালয় পর্বত দ্রুতহারে গরম হয়ে যাচ্ছে। বরফ গলছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব পড়তে শুরু হয়েছে। যার কারণে হিমবাহের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আবহার পরিবর্তনকে দায়ি করা হয়েছিল ২০১৩ সালের প্রাকৃতিক বিপর্যের পরেও। সেই সময় বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন নদীর গতিপথ আটকে তৈরি হয়েছিল রাস্তা, কংক্রিটের বিল্ডিং। আর সেই কারণেই জুনের সেই ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক তাণ্ডব।
রুদ্র প্রয়াগ থেকে কেরাদনাথ সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়েগিয়েছিল। গ্রামগুলি পরিণত হয়েছিল শ্মশানে। অধিকাংশ রাস্তাই বন্ধ হয়েগিয়েছিল। মন্দাকিনী নদীর বন্য়ায় গৌরিকুণ্ড সোনপ্রয়াগ বিধ্বস্ত হয়েগিয়েছিল।
গঙ্গা ও যমুনা নদীর জলও বেড়ে গিয়েছিল। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয় প্রায় ৪ হাজার মানুষের মৃ্ত্যু হয়েছিল। একাধিক গ্রাম ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়েগিয়েছিল। প্রায় সেই স্মৃতি সাত বছর পরে ফিলে এল চামোলিতে।