শিয়রে নির্বাচন, কোন কোন বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত হতে চলেছে বিহারের রাজনীতি
- FB
- TW
- Linkdin
কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা
এবারের নির্বাচনের ফোকাসে থাকবে বিহারের স্বাস্থ্য পরিষেবা। আগে থেকে এটা আঁচ করতে পেরে মহামারির মধ্যেই স্বাস্থ্য বিভাগে দ্রুত পরিবর্তন এনেছিল নীতিশ সরকার। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রাণহানির সংখ্যা কমেছে বিহারে, পাশাপাশি বেড়েছে সুস্থ হয়ে ওঠার হার। সেইসঙ্গে কোভিড পরীক্ষার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বলা যেতে পারে, বর্তমানে সরকারের পক্ষেই রয়েছে রাজ্যের কোভিড পরিসংখ্যান। তবে বিরোধীরা এই পরিসংখ্যান কতটা সত্য, তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। নির্বাচনের আগে এই নিয়ে শাসক-বিরোধীতে তীব্র বাদানুবাদ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিযায়ী শ্রমিক
কোভিড মহামারি ঠেকাতে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালীন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিহারে ফিরে এসেছিলেন। তাদের নিদারুণ দুর্ভোগের ভয়ানক কিছু দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। বিরোধীরা এই বিষয়টিকে বিহারে বড় করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। অপরদিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি তাদের সাফল্য হিসাবে দেকাতে চাইছে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট।
বেকারত্ব
অর্থনৈতিক মন্দা এবং বেকারত্ব বর্তমানে গোটা দেশের সমস্যা। বিহার-ও তার বাইরে নয়। সিএমআইই-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বিহারের বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬.৬ শতাংশে। কাজেই আসন্ন নির্বাচনে কর্মসংস্থানের অভাব, একটা বড় বিষয় হতে চলেছে। এনডিএ জোট সরকার পরিযায়ী কাজের আশ্বাস দিয়ে এই ক্ষত মেরামতের চেষ্টা করেছে বটে, কিন্তু, বিরোধী দলগুলি বেকারত্ব-কে একটি বড় নির্বাচনী ইস্যু হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে।
কৃষি বিল ২০২০
সংসদে সদ্য পাস হয়েছে দুটি কৃষি বিল। সংসদের ভিতরে বিরোধী দলগুলি যেমন এই দুই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছে, তেমনই সংসদের বাইরে বহু রাজ্যেই কৃষকরা এই বিলের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছেন। এই বিষয়ে জনসাধারণের মতামত প্রথম জানা যেতে পারে বিহারের ভোটেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন কেন্দ্র কৃষি সংস্কার বিলগুলি তৈরির ক্ষেত্রে বিহার মডেল অনুসরণ করেছে। বস্তুত, ২০০৬ সালেই বিহার, রাজ্যের এপিএমসি আইন বাতিল করে, রাজ্যের সমস্ত কৃষি বিপণন কমিটি এবং বিপণন বোর্ডগুলি বাতিল করে দিয়েছিল।
শিক্ষা
শিক্ষা বিহারের ভোটে বরাবরই একটি বড় বিষয়। এনডিএ-র আমলে জাতীয় ও রাজ্য-পর্যায়ের বেশ কিছু মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং পলিটেকনিক কলেজ-সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তবে বিরোধীরা সেইসব প্রতিষ্ঠানের মান ও স্কুল শিক্ষকদের সমস্যার কতা তুলে ধরে আক্রমণ শানাচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের শান্ত করার জন্য নীতীশ সরকারের প্রাক-জরিপ শেষ না করেও অসন্তুষ্ট হতে থাকে।
আইন শৃঙ্খলা
একইভাবে, 'আইন শৃঙ্খলা' নীতিশ সরকারের বরাবরের গর্বের বিষয় হলেও সম্প্রতি আরজেডি-র নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলি সাম্প্রতিক কিছু হত্যাকাণ্ড ও লুটপাটের ঘটনা তুলে ধরে বিষয়টিকে বড় করে দেখাতে শুরু করেছে। এই নিয়ে শাসক-বিরোধীর মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র কথার লড়াই।
সুশান্ত সিং রাজপুত
বলি অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত-এর মৃত্য়ু রহস্যের তদন্তও আসন্ন নির্বাচনে একটি অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা। তদন্তের ভার সিবিআই-এর হাতে যাওয়ার কৃতিত্ব দাবি করে তরুণ ভোট টানার চেষ্টা করতে পারেন নীতিশ কুমার।