- Home
- India News
- করোনার থাবায় একেবারে কুপোকাত দেশের অর্থনীতি, সমীক্ষা বলছে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি জিডিপি কমবে ভারতের
করোনার থাবায় একেবারে কুপোকাত দেশের অর্থনীতি, সমীক্ষা বলছে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি জিডিপি কমবে ভারতের
কয়েক বছর আগেও ভারত সম্পর্কে বলা হত ‘ওয়ার্ল্ডস ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং ইকনমি’। অর্থাৎ বড় দেশগুলির মধ্যে ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) বাড়ছিল সবচেয়ে দ্রুত হারে। তবে করোনা অতিমহামারীর জেরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি এক বছর আগের তুলনায় ১৯.২ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে ব্লুমবার্গ ইকনমিক্স । ৩১ অগস্ট পর্যন্ত আর্থিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এই মত দিয়েছেন সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা।
| Published : Aug 31 2020, 04:43 PM IST / Updated: Aug 31 2020, 04:46 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
)
ভারতে এখন রোজ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি। তার মধ্যে ৩৬ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, অতিমহামারীর কবল থেকে বেরিয়ে আসা সহজ হবে না এদেশের পক্ষে।
)
যেভাবে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই দেশ বিশ্বে করোনার হটস্পট হয়ে উঠতে পারে। আর এই করোনাভাইরাসের ধাক্কার জিডিপির পতনের সঙ্কেত মিলেছিল আগেই। কিন্তু অভিঘাত যে এতটা তীব্র হবে তার আঁচ পাননি অর্থনীতিবিদদের অনেকেই।
)
সরকার ইতিমধ্যে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু তাতে খুব বেশি কাজ হয়নি। লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বহু ব্যবসা দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছে। লকডাউনে ইতি টানা হলেও সংক্রমণের হার যে গতিতে বেড়ে চলেছে তাতে আর্থিক কার্যকলাপ কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
)
এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি এক বছর আগের তুলনায় ১৯.২ শতাংশ কমতে পারে বলে ব্লুমবার্গ ইকনমিক্সের পূর্বাভাস দিচ্ছে। ৩১ অগস্ট পর্যন্ত আর্থিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এই মত দিয়েছেন সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা।
)
১৯৯৬ সাল থেকে ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশ শুরু হয়। তার পরে কখনই মোট জাতীয় উৎপাদনের হার এত কমেনি। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এশিয়ার বৃহৎ দেশগুলির মধ্যে ভারতের জিডিপি-ই সম্ভবত কমবে সবচেয়ে বেশি।
)
আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ) আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল ভারতের জিডিপি চলতি অর্থবর্ষে ৪.৫ শতাংশ কমে যেতে বা সঙ্কুচিত হতে পারে।
)
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অধীন ডিপার্টমেন্ট অব ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স (ডিইএ)-এর তৈরি জুন মাসের আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টেও একই শঙ্কার কথা বলা হয়েছিল। করোনাভাইরাসের আক্রমণের জেরে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় জিডিপির এই সঙ্কোচন হবে বলে জানানো হয়েছিল রিপোর্টে।
)
অতিমহামারী শুরুর আগেই ভারতের অর্থনীতি সংকটে পড়েছিল। ‘এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি’ হিসাবে পরিচিত ভারতের অর্থনীতির বিকাশের গতি হয়ে আসছিল ধীর। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণত কমছিল। সেই সঙ্গে কমছিল ভোগ্যপণ্যের চাহিদা।
)
মহামারি ঠেকাতে মার্চের শেষ থেকে শুরু হয় লকডাউন। অর্থনীতি বড় ধাক্কার মুখে পড়ে। প্রায় সব ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এর ফলে চার দশকে প্রথমবার বার্ষিক জিডিপি কমার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তখন ব্লুমবার্গের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, চলতি আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি কমতে পারে ৫.৬ শতাংশ।
)
জুলাই মাসে প্রকাশিত ডিইএ-র রিপোর্ট বলছে, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবর্ষে রাজস্ব আদায় ৬৯ শতাংশ কমে যেতে পারে। ব্লুমবার্গের এপ্রিল মাসের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি এক বছর আগের তুলনায় ২৫ শতাংশ কমতে পারে। তা কার্যত মিলতে চলেছে।
)
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, অর্থনীতির যে ক্ষেত্রগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার মধ্যে আছে পরিবহণ, হোটেল, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ।
)
বাৎসরিক রিপোর্টে আরবিআই স্পষ্ট বলেছে, ভোগ্যপণ্যের চাহিদা ব্যাপক কমেছে। তা কোভিড পূর্ববর্তী স্তরে আসতে সময় লাগবে অন্তত কয়েক বছর।