বেনজির সৌজন্যের পরিচয় দিয়েছেন হরিবংশ, ভোটের আগে বিহারীবাবুদের স্তুতি কৌশলী মোদীর গলায়
- FB
- TW
- Linkdin
গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদের ‘মর্যাদা লঙ্ঘনের’ অভিযোগে সোমবারই ৭ দিনের জন্য ৮ বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করেন চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু।
এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরেই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেন বিরোধী সাংসদরা। দিনভর চলে স্লোগান দেওয়া, গান গাওয়া।
সংসদীয় রাজনীতিতে এ ছবি নতুন কিছু নয়। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গান্ধী মূর্তির নিচে বিক্ষোভ এবং ধরনা, দুটোই বহুবার করতে দেখা গিয়েছে বিরোধীদের। কিন্তু রাতভর এভাবে ধরনায় বসে থাকা, বা গান্ধীমূর্তির পাদদেশে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানো এক কথায় বেনজির।
রাতভর ধরনার জন্য রীতিমতো প্রস্তুতি নিয়েও আসেন আট সাংসদ। নিজেদের বালিশ ও চাদরের পাশাপাশি ছিল মশা মারার ওষুধও।
রাতেই বিক্ষোভকারী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, জেডিএস প্রধান তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া, সমাজবাদী পার্টির জয়া বচ্চন, কংগ্রেসের আহমেদ প্যাটেল, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে। আট সাংসদের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টায় ধর্না. বসেছিলেন কংগ্রেস দিগ্বিজয় সিং। মধ্যরাত পেরিয়ে লোকসভার অধিবেশন শেষের পর বিক্ষোভকারী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন শশী থারুর।
তারইমধ্যে বুধবার সকালে আট সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং। যাঁর সিদ্ধান্ত নিয়েই রবিবার সংসদের উচ্চকক্ষে তুলকালাম বেঁধেছিল।
শুধু দেখাই নয় ৮ সাংসদের জন্য চা নিয়ে আসেন তিনি। অনেকেই বলছেন, যার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে পদানত করার অভিযোগ উঠেছে, তিনি নিজে বিরোধী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে বেনজির সৌজন্যের পরিচয় দিলেন। যা নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ। শাসক-বিরোধী সৌজন্যের এই নিদর্শন সংসদের অন্দরেও দেখা যাওয়া উচিত।
রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং চা নিয়ে যাওয়ার পরই মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
মঙ্গলবার সকালে হরিবংশের প্রশংসা করেন মোদী ট্যুইট করেন, 'শতকের পর শতক ধরে বিহারের পবিত্র ভূমি আমাদের গণতন্ত্রের মূল্যবোধ শেখাচ্ছে। সেই দুর্দান্ত পথে হেঁটেই আজ সকালে বিহারের সাংসদ ও রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান শ্রী হরিবংশজির অনুপ্রেরণামূলক ও রাষ্ট্রনেতার মতো আচরণে গর্ববোধ করবেন প্রত্যেক গণতন্ত্রপ্রেমী।'
কৃষি বিল নিয়ে রবিবার তুলকালাম হয়েছে রাজ্যসভা। সোমবার থেকে ধর্নায় বসেছেন আট বিরোধী সাংসদ। তাতে একটি শব্দও খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মঙ্গলবার হরিবংশ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে বিধানসভা ভোটের আগে বিহারি আবেগও উস্কে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
হরিবংশ নারায়ণ সিং যে আদতে বিহারের সাংসদ, তা ট্যুইটের শুরুতেই মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি মোদী। চলতি বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে বিহারে। তাই বিহারবাসীর মন জয় করতে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা করে কল্পতরু হয়েছেন মোদী। এবার গণতন্ত্র নিয়েও যে বিহার গোটা দেশকে পাঠ দিচ্ছে, তার প্রশংসা করতে কোনও কসুর করলেন না মোদী।