কোচিতে বিক্রান্তের কমিশন নরেন্দ্র মোদীর হাতে, দেখুন নৌবাহিনীর অনুষ্ঠানের সেরা ছবিগুলি
- FB
- TW
- Linkdin
দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তৈরি হয়েছে বিক্রান্ত। পরীক্ষা-নিরীক্ষারপরই তা কমিশন করা হচ্ছে। এই রণতরী ভারতীয় নৌবহরকে আরও শক্তশালী করবে। চিনের নৌবহরের মোকাবিলা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। বর্তমানে ভারতমহাসাগরে ক্রমশই শক্তি বাড়াচ্ছে চিন। যা ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে কার্যত হুমকির সামিল।
নৌবাহিনীর ডিজাইন করা এই রণতরী এখনও পর্যন্ত দেশের নির্মিত সবথেকে বড় রণতরী। এতে ১৬০০০ জন ক্রু মেম্বার থাকতে পারবে। ফাইটার জেট হেলিকপ্টার-সহ ৩০টি বিমান পরিবহন করার ক্ষমতা রয়েছে এটির। এই রণতরীতে ৮০ তলার একটি বাড়ি শুয়ে রাখা যাবে। এটি এতটাই বড়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতে জাহাজ তৈরির ৭৫ শতাংশেরও বেশি জিনিস দেশীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়েছে। দেশের প্রায় ৬টি শিল্প সংস্থা আর ১০০ টিকও বেশি ছোট ব্যবসায়ীদের থেকে সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে সমুদ্রে ট্রায়াল চালান হয়েছে বিক্রান্তের।
দেশের নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, আত্মনির্ভর ভারত বা মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যেগের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দেশীয় এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার নির্মাণের সঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা সম্মন্ন এই যুদ্ধ জাহাজ পুরোপুরি দেশীয় পদ্ধতিতে আর দেশেই তৈরি হয়েছে। এই যুদ্ধ জাহাজ ডিজাইনও করেছেন দেশীয় প্রযুক্তিবিদরা।
ভারতীয় নৌবাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ জয়ে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল বিক্রিন্তের পূর্বসূরী। সেই যুদ্ধের ৫০ বছর পর আবারও একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৈরি হয়েছে বিক্রান্ত। তাই ভারতের কাছে এটি একটি বিশেষ দিন। ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কোচি শিফইয়ার্ডে এই রণতরী তৈরি হয়েছে। এটি থেকে মিগসহ একাধিক যুদ্ধ বিমান ওঠা নামা করতে পরে।
২৪০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প। করোনা মহামারির কারণে বিলম্বিত হয়েছে। ২০১৮ সালেই আইএনএস বিক্রান্তকে কমিশন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানান হয়েছে যুদ্ধ জাহাজটি ২০২০ সালের নভেম্বরে সফলভাবে 'বেসিন ট্রায়াল সম্পন্ন' করেছে। পরবর্তীকালে এই বিষয়ে কয়েকটি নেভিগেশন আর যোগাযোগ ও অপারেশনাল সিস্টেমের সংহতকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল।
এই যুদ্ধ জাহাজ ৮০ হাজার টনের এই জাহাজ চালু করা যাবে। তবে এই যুদ্ধজাহাজটির প্রথম পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। কিন্তু তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডিস এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান করে উঠতে পারেননি।বিভিন্ন কারণে আটকে ছিল প্রকল্পটি। প্রায় ১০ বছর পরে প্রকল্পের কাজ নতুন করে পরিকল্পনা হয়েছিল। ২০০৯ সালে প্রকল্পের কাজে গতি আসে। সেই সময় পরিকল্পনা করা হয়েছিল ২০১১ সালে এটি ডক থেকে চালু করা হবে। তবে ২০১৩ সালে এই প্রকল্পের কাজ চালু হয়। ইন্ডিয়ান নেভির নোভাল ডাইরেক্টর অব নোভাল ডিজাইনার ডিজাইন করেছে।
এদিন কোচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে উন্মোচিত হয় দেশের নৌবাহিনীর নতন পতাকা। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে নতুন এই পতাকা ঔপনিবেশিকতা মুক্ত হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনীকে দেখতে সাহায্য করবে।
কেরলে বৃহস্পতিবারই পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এদিন কোচির নৌসেনার ঘাঁটি থেকেই বিক্রান্তকে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং।