- Home
- India News
- বিবেকানন্দের আদর্শে চলেন, ৭০ বছরের জন্মদিনে জানুন প্রধানমন্ত্রী মোদীর জীবনের নানা অজানা কাহিনি
বিবেকানন্দের আদর্শে চলেন, ৭০ বছরের জন্মদিনে জানুন প্রধানমন্ত্রী মোদীর জীবনের নানা অজানা কাহিনি
- FB
- TW
- Linkdin
তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছোটবেলা ছিল একেবারে সাধারণ। ছোট বেলায় ছিলেন চা বিক্রেতা। সেই চা বিক্রেতা থেকে সন্ন্যাস জীবন, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী থেকে ক্রমাগত রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠেন মোদী।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসহ নানা কাজে গত অন্তত দুই দশক ধরে বেশ আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জীবনের এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রার মধ্য তিনি বর্তমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এসবের বাইরেও তার রয়েছে আরো অনেক অজানা কাহিনী।
১৯৫০ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর জন্ম। তার পিতার নাম দামোদরদাস মুলচান্দ ও মায়ের নাম হীরাবেন। ৬ সন্তানের মধ্যে মোদী ছিলেন তৃতীয়। মুদি ব্যবসায়ী পরিবারেই মোদীর জন্ম। শৈশব থেকেই মোদী চায়ের স্টলে তার পিতাকে সাহায্য করতেন।
নারী ইস্যুটি নরেন্দ্র মোদির জীবনে বড় ঘটনা। অনেকেই মনে করেন, মোদী নারীদের এড়িয়ে চলেন। অনেকে ব্যাপারটিকে তার সাধনা হিসেবে দেখেছেন। মোটকথা ভারতের সব মহলই মোদির নারী সম্পর্ক ব্যাপারটি বুঝতে ব্যাপক আগ্রহী। কারণ এত বড় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির জীবনে নারীর সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারটি একদমই রহস্যময়।
চা বিক্রি ছিলো মোদীর আদি পেশা। মোদির প্রতিটি নির্বাচনে ভোট প্রচারণার বড় ধরনের অনুসঙ্গ হয়ে ওঠে তার চা, মানে চা প্রচারণা। আহমেদাবাদে স্টেট ট্র্যান্সপোর্ট অফিসে নরেন্দ্র মোদী তার ভাইয়ের সঙ্গে চা বিক্রি করতেন। তখনই তিনি কঠোর সংগ্রাম এবং স্থির ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবার সত্যিকার অর্থ অনুধাবন করেছিলেন।
২০০৫ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ভিসা না পেলেও, মজার ব্যাপার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি পাবলিক রিলেসন্স ও ইমেইজ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ৩ মাসের একটি সংক্ষিপ্ত কোর্স সম্পন্ন করেন। বিজেপি'র জয়ের জন্য গত লোকসভা নির্বাচনে মোদীর স্বতঃস্ফূর্ত ও বুদ্ধিদীপ্ত নির্বাচনী প্রচারণা ভীষণ প্রয়োজন ছিল।
স্বামী বিবেকানন্দকে নিজের আইডল বা আদর্শ মনে করেন নরেন্দ্র মোদী।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করেছিলেন তিনি। বয়স তখন তার মাত্র ১৫ বছর। ১৯৬৭ সালে গুজরাটতে যখন ভয়াবহ বন্যা হয়, তখন ১৭ বছরের মোদী স্বেচ্ছায় বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করেন।
ধর্মীয় সাধনাও তাকে শৈশব থেকে ব্যাপকভাবে মুগ্ধতা দিয়েছিলো। বেশ অল্প বয়সেই তিনি সন্ন্যাসব্রত পালনের জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে সাধুদের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত হিমালয়ে গিয়ে ২ বছর সন্ন্যাস জীবন কাটান তিনি।
সন্ন্যাস জীবন কাটানোর সময় নরেন্দ্র মোদীর মাত্র দুটি পোশাক ছিল। কিন্তু, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষ এখন নিজেকে উপস্থাপনের ব্যাপারে বেশ সজাগ। ইস্ত্রি করা পরিপাটি পোশাক পরতে পছন্দ করেন তিনি। অন্য রাজনীতিবিদদের চেয়ে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন ও মোদী ব্র্যান্ডটাকে রূপ দেয়ার ব্যাপারে বেশ সচেতন তিনি।
নারীদের কাছেও মোদী বেশ আকর্ষণীয়। মোদীর নির্বাচনী এলাকায় নারীরা তাকে দেবতা হিসেবে জ্ঞান করেন। যে কারণে দেখা গেছে শেষ লোকসভা নির্বাচনে নারীদের উপস্থিতি ছিলো আগেরে যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি। ধারণা করা হয়, ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে শশী ঠারুরের পর নরেন্দ্র মোদিই নারীদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। তবে সেটা হয়েছে, বিশেষত তার তাকানোর ভঙ্গির কারণেই। তার তাকানোর ভঙ্গি খুবই তীক্ষ্ণ।
খুব কাজ পাগল মোদি। দিন রাত মিলিয়ে মাত্র ৩ ঘণ্টা ঘুমান। সকাল ৭টায় তিনি অফিসে ঢোকেন, রাত ১০টা বা আরও রাত পর্যন্ত সেখানে কাজ করে তবে বাড়ি ফেরেন।
নরেন্দ্র মোদী বেশ রক্ষণশীল বটে। তবে শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিষয়ে একেবারে আধুনিক। প্রতিদিনই ইন্টারনেটে নিজের খবরগুলো দেখে নেন তিনি। ফেসবুক ও আর ট্যুইটার ব্যবহারেও মোদি খুবই স্বচ্ছন্দ।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের বিয়ের ব্যাপারে কোনোদিন মুখ খোলেননি মোদি। এর আগে ৪ বার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিলেও, আবেদনপত্রে স্ত্রীর কলামটি বরাবরই ফাঁকা রেখেছিলেন। ১৩ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেন।তবে ব্যাচেলর বা কুমার জীবন কাটানোর প্রতি তীব্র ঝোঁক থাকায় যশোদাবেনের সঙ্গে বিয়ে কখনও মেনে নেননি মোদী। এক সময়ে যশোদাবেনও একাকী থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
গুজরাটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। একটানা ২ হাজার ৬৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন।
নরেন্দ্র মোদীর শখের মধ্যে রয়েছে ছবি তোলা। নিজের মোবাইলে সেলফি তুলেও গণমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় তিনি। নিজের তোলা ছবির প্রদর্শনীরও আয়োজন করেছেন মোদী।
কবি হিসেবেও মোদীর নাম ও খ্যাতি রয়েছে। লিখতে ভালোবাসেন, সমাবেশে যে বক্তৃতাগুলো দেন, তার একটি বড় অংশ তার নিজেরই লেখা।
নিরামিষাশী মোদী নিঃসঙ্গ থাকতে ভালোবাসেন ও অন্তর্মুখী স্বভাবের। জানা যায় তাঁর কোনো ঘনিষ্ট বন্ধু নেই।
টাইম ম্যাগাজিনের এশিয়া এডিশনের প্রচ্ছদে নরেন্দ্র মোদীকে স্থান দেয়া হয়েছিল। টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ১০০ শীর্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদীর রসিকতাবোধও অসাধারণ। বিরোধী দল মোদীর এই গুণটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও, তার বাক্যের রসায়নগুলোর মধ্যে তীক্ষ্ণ মেধা ও বুদ্ধির ছটা লক্ষণীয়।