- Home
- India News
- দেশে সংক্রমণ বাড়লেও আশা জাগাচ্ছে ‘আর নম্বর', এই অস্ত্রে ভর করেই মিলবে সাফল্য আশাবাদী গবেষকরা
দেশে সংক্রমণ বাড়লেও আশা জাগাচ্ছে ‘আর নম্বর', এই অস্ত্রে ভর করেই মিলবে সাফল্য আশাবাদী গবেষকরা
দৈনিক সংক্রমণ ফের রেকর্ড ছাড়াল দেশে। দিনকয়েক ধরেই নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছিল ৬০ থেকে ৬৫ হাজারের মধ্যে। বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সকালের বুলেটিনে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৭৬০ জন রোগী। তবে এসবের মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে ‘আর নম্বর’। : জুলাই মাসের শেষে দেশের ‘এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর’ তথা ‘আর নম্বর’ ছিল ১.১৭ পয়েন্টে। অগস্টের শেষে এসে দেখা গেল আর নম্বর অনেকটাই কমেছে। এর ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমতে পারে বলে আশা গবেষকদের।
- FB
- TW
- Linkdin
দেশে এখন কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৩ লাখ ১০ হাজার ২৩৪ জন। করোনা সক্রিয় রোগী সাত লাখের বেশি। অ্যাকটিভ কেস ২২ শতাংশ ছুঁতে চলেছে।
সংক্রমণ বাড়লেও কেন্দ্রের বুলেটিনে ইতিবাচক দিক হল মৃত্যুহার কমে যাওয়া। দেশে এখন কোভিড ডেথ রেট বা মৃত্যুহার ১.৮৩%। সুস্থতার হারও বেশি। সুস্থতার হার বা কোভিড রিকভারি রেট ৭৬.২৪%।
পাশাপাশি চেন্নাইয়ের ইনস্টিটিউট অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সের গবেষকরা ভাল খবর শুনিয়েছেন। জুলাই মাসের শেষে দেশের ‘এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর’ তথা ‘আর নম্বর’ ছিল ১.১৭ পয়েন্টে। অগস্টের শেষে এসে দেখা গেল আর নম্বর অনেকটাই কমেছে।
দেশে এখন আর নম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৩ পয়েন্টে। অসম, তামিলনাড়ু, বিহারে আর নম্বর একের নিচে নেমে গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
আর নম্বর কমলে করোনা ট্রান্সমিশন রেট তথা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমবে। একের নিচে নেমে গেলে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে। পাশাপাশি, একজন আক্রান্তের থেকে বেশিজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই আর নম্বর এবং কোভিড ট্রান্সমিশন রেট একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গবেষকরা বলেছেন, এই আর নম্বর হল এমন একটা গাণিতিক হিসেব যার মাধ্যমে সংক্রমণের হার মাপা হয়। একজন করোনা রোগীর থেকে কতজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে সেটা মাপা হয় আর নম্বর দিয়ে। এই হিসেবের মাপকাঠিতেই নির্ণয় করা হয় সংক্রমণ কতটা ছড়িয়ে পড়ল এবং কতজনের মধ্যে ছড়াল। শুরুতে এই সংক্রমণের হার মাপার জন্য রিপ্রোডাকশন নম্বর তথা ‘আর-নট’ স্কেলের হিসেব প্রয়োগ করছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। ১.৫ থেকে ৪.০ মাত্রার সেই স্কেল কম থেকে যত বেশির দিকে যাবে, সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ততটাই বাড়বে। রিপ্রোডাকশন নম্বরের স্কেল যদি ২.৫ থেকে শুরু করা যায়, তাহলে দেখা যাবে একজন সংক্রামিত সামাজিক দূরত্বের বিধি না মানলে ৩০ দিনে ৪০৬ জনকে আক্রান্ত করতে পারবেন। এই হিসেবই এখন আর নম্বর দিয়ে মাপা হচ্ছে।
গত ৪ মার্চ দেশের আর নম্বর ছিল ১.৮৩। ওই সময় উহানের আর নম্বর ছিল ২.১৪ এবং ইতালির ২.৭৩, যা ভারতের থেকে অনেক বেশি। অর্থাৎ সংক্রমণ ছড়ানোর হার বেশি। ভারতে ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে এই নম্বর কমতে থাকে। ৬ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত আর নম্বর নেমে আসে ১.৫৫-এ। জুনের প্রথমে সেটাই পৌঁছয় ১.৪৯ পয়েন্টে। জুনের মাঝামাঝি আরও কমে আর নম্বর থিতু হয় ১.১২ পয়েন্টে। আর নম্বরের এই ধারাবাহিক পতন দেখেই লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে আনলক শুরুর পরেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই ফের আর নম্বর বেড়ে পৌঁছে যায় ১.১৯-এ। এখন সেটাই কমে গেছে ১.০৪ পয়েন্টে।
ইতিমধ্যে দেশের কয়েকটি রাজ্যে আর নম্বর নেমে গেছে একের নিচে। বিহারে এখন এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন রেট ০.৭৭। গত সপ্তাহেই সেখানে আর নম্বর ছিল ১.১৬। অসমে ১.৩৬ থেকে আর নম্বর কমে দাঁড়িয়েছে ০.৮০ পয়েন্টে। অন্ধ্রপ্রদেশে গত সপ্তাহ থেকেই আর নম্বর কমতে শুরু করেছিল। ১.১৪ পয়েন্ট থেকে কমে হয়েছে ০.৯০।