আর মাত্র ৭২ দিনের অপেক্ষা, নিখরচাতেই করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ পেতে চলেছেন ভারতীয়রা
- FB
- TW
- Linkdin
অক্সবোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিন 'কোভিশিল্ড' বাণিজ্যিকভাবে উৎপানের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের। তারাই জানিয়েছে ৭২ দিনের মধ্যেই ভারতে কোভিশিল্ড-এর বাণিজ্যিকীকরণ হবে।
এই টিকার ডোজ ভারতীয়রা বিনামূল্যেই পাবেন। কারণ করোনার টিককরণ জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি বা এনআইপি-র মধ্যেই ধরা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় থাকা অন্যান্য রোগের টিকার মতো করোনার টিকাও বিনামূল্য়েই পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে।
সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-র এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই টিকা উত্পাদন বিষয়ে মোদী সরকার তাদের একটি 'বিশেষ অগ্রাধিকার লাইসেন্স' দিয়েছে। আর সংস্থাও ট্রায়াল প্রোটোকল প্রক্রিয়াগুলি আগামী ৫৮ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার সিদ্ধআন্ত নিয়েছে। তৃতীয় অর্থাৎ চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রথম ডোজিং শুরু হয়েছে শনিবার থেকেই। ২৯ দিন পর দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ। দ্বিতীয় ডোজিংয়ের ১৫ দিনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত পরীক্ষার তথ্য। তার মধ্যেই সেই পরীক্ষা সফল হবে ধরে নিয়ে কোভিশিল্ড-কে বাণিজ্যিকীকরণ করার কাজ চালিয়ে যাবে সেরাম ইন্সস্টিটিউট।
এর আগে, অবশ্য তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে কম করে হলেও ৭ থেকে ৮ মাস লাগবে বলে মনে করা হয়েছিল।
২২ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া কোভিশিল্ড-এর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ১৭টি দেশের প্রতিটি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন করে স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে মোট প্রায় ১৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবীর উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু হয়েছে।
সেরাম ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গিয়েছে, আস্ট্রাজেনেকা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা ভারত ও আরও ৯২টি দেশে কোভিশিল্ড একচেটিয়াভাবে বিক্রি করার বরাত পেয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই সেরাম ইন্সস্টিটিউটকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা সরাসরি সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিনের জোডগুলি সংগ্রহ করবে এবং নিখরচায় ভারতীয়দের টিকা দেওয়া হবে। আগামী জুনের মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ১৩০ কোটি ভারতীয় নাগরিকের জন্য কেন্দ্র ৬৮ কোটি ডোজ চেয়েছে বলে খবর রয়েছে।
বাকি ভারতীয়দের জন্য সম্ভবত আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি 'কোভ্যাক্সিন' এবং জাইডাস ক্যাডিলার 'জাইকোভ-ডি' টিকা দেওয়া হবে।
সেরাম ইন্সস্টিটিউট এখনই মাসে ৬ কোটি ডোজ উত্পাদন করছে। ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে এই সংখ্যা প্রতি মাসে ১০ কোটিতে বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে তারা। এর জন্য তারা প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করে তাদের ভ্যাকসিন উত্পাদন লাইনগুলি নতুন করে তৈরি করছে।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে গরীব দেশগুলিতে সরবরাহের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রায় ১০ কোটি ডোজ উত্পাদন ও সরবরাহ করার জন্য তারা সেরামকে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১১২৫ কোটি টাকা তহবিল দেবে। এতে সিরামের প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম এক হাজার টাকা থেকে নেমে প্রায় আড়াইশো টাকা হয়েছে।