- Home
- India News
- সনিয়া গান্ধীর জায়গায় কি শরদ পওয়ার, ইউপিএ-র অন্দরেও কি ক্ষমতা হারাবে কংগ্রেস - উঠল প্রশ্ন
সনিয়া গান্ধীর জায়গায় কি শরদ পওয়ার, ইউপিএ-র অন্দরেও কি ক্ষমতা হারাবে কংগ্রেস - উঠল প্রশ্ন
২০০৪ সালে কোনও দল বা জোটই এককভাবে সরকার গঠন করার মতো আসন না জেতায়, জাতীয় কংগ্রেস-এর নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা ইউপিএ জোট। তারপর থেকে গত ১৭ বছরে জোটের অনেক সঙ্গীর অদল বদল ঘটেছে। ভারতের রাজনীতিতে হয়েছে অনেক উত্থান-পতন। এর মধ্যে কংগ্রেস সভানেত্রীর পদ ছেড়ে দিলেও, ইউপিএ চেয়ারপার্সনের পদে একটানা থেকে গিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ কংগ্রেসের শক্তি সংকোচনের পর এবার কি তিনি সেই পদও হারাতে চলেছেন? তাঁর পরিবর্তে জোটের নেতা হবেন কি শরদ পওয়ার?
- FB
- TW
- Linkdin
এই জল্পনার উত্থান একটি গণমাধ্যমের অনুমান ভিত্তিক প্রতিবেদন থেকে। কোনও ভিত্তি ছাড়াই তারা দাবি করেছিল, শীঘ্রই ইউপিএ-র বৈঠকে এই দাবি তুলতে চলেছে শরদ পওয়ারের দল, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি। এই বিষয়ে ইউপিএ-র অন্যান্য শরিকদেরও নাকি সহমত রয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবারই সেই অনুমান, প্রত্যাখ্যান করেছিল এনসিপি। দলের প্রধান মুখপাত্র মহেশ তাপস স্পষ্ট জানান, ইউপিএ-র শরিকদের মধ্যে এ জাতীয় প্রস্তাব নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। ওই প্রতিবেদন চলমান কৃষক আন্দোলন থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার স্বার্থান্বেষী উদ্যোগ বলেও দাবি করা হয়।
তবে এদিন, সেই জল্পনার পালে হাওয়া দিল ইউপিএ-র নবতম শরিক শিবসেনা। শুক্রবার শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন, শরদ পওয়ার ইউপিএ চেয়ারম্যান হলে শিবসেনা খুশি হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় প্রস্তাব উঠলে শিবসেনা তা সমর্থন করবে বলে সংবাদসংস্থা এএনআই-কে জানিয়ছেন সঞ্জয় রাউত।
শিবসেনা নেতা জানিয়েছেন, কংগ্রেস দল এখন দুর্বল হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বিরোধীদের একত্রিত হয়ে ইউপিএ-কে আরও শক্তিশালী করা দরকার।
বস্তুত, ইউপিএ গঠনের সময়, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জিতেছিল ১৪৫টি আসন। ২০০৯-এর নির্বাচনে তা বেড়ে হয়েছিল ২০৬। কিন্তু ২০১৪ সালে তা নেমে আসে ৪৪ টিতে। ২০১৯-এ সামান্য বেড়ে হয় ৫২। তবে তারপর থেকে হওয়া সমস্ত বিধানসভা ও স্থানীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। বিশেষ করে বিহার নির্বাচনে তাদের খারাপ ফলের জন্যই মহাজোট জিততে পারেনি বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী বিশ্লেষকরা।
এই অবস্থায় শরদ পওয়ারের উপর দারুণ আস্থা ব্যক্ত করেছেন সঞ্জয় রাউত। শরদ আরও বড় জাতীয় ভূমিকা নিতে সক্ষম এবং দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। দেশের সমস্ত বড় সমস্যার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান রয়েছে এবং তিনি জনগণের নাড়ি বোঝেন বলেও শংসা দিয়েছেন শিবসেনা নেতা।
বস্তুত, ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে আছেন শরদ পওয়ার। মহারাষ্ট্রের আঞ্চলিক রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি সামলেছেন সমান দক্ষতায়। দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারের তিনবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, এবং ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা এবং কৃষি মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মহারাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের জোট মহা বিকাশ আগারি গঠনেও তাঁরই প্রধান ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়।
মজার বিষয় হল, ১৯৯৯ সালে 'ইতালীয় বংশোদ্ভূত' সনিয়া গান্ধীকে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছিলেন শরদ পওয়ার। সঙ্গে ছিলেন পি.এ. সাংমা, এবং তারিক আনোয়ার। তিনজনকেই ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেছিল কংগ্রেস। তারপরই জন্ম হয়েছিল জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি-র। এবার সনিয়াকে সরিয়ে ইউপিএ-র দায়িত্ব শরদ পেলে রাজনীতির একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে।