- Home
- India News
- চিনের অতীতকে খোঁচা দিয়েই বেজিংকে শিক্ষা, মোদীর তিব্বতি সেনার চালে মাত সাম্রাজ্যবাদী জিনপিং
চিনের অতীতকে খোঁচা দিয়েই বেজিংকে শিক্ষা, মোদীর তিব্বতি সেনার চালে মাত সাম্রাজ্যবাদী জিনপিং
- FB
- TW
- Linkdin
গত এপ্রিল-মে মাস থেকেই চিন সীমান্ত বরাবর সৈন্যসংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। তারই দরুন গত ১৫ জুন রাতে দু’দেশের সংঘাত, যাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। এই সংঘাতের কেন্দ্র ছিল পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকা। এখন উত্তেজনা আরও ছড়িয়েছে।
দেপস্যাং প্লেইনস থেকে চুসুল পর্যন্ত এক বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে একেবারে ছকমাফিক চিন তাদের সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধি করছে। এটাও জানা গেছে যে দেপস্যাং প্লেইনস-এ প্যাট্রলিং পয়েন্ট ১০ থেকে ১৩ পর্যন্ত প্রায় ৯০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা এখন চিনের নিয়ন্ত্রণে। যেহেতু লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল ঠিক কী হবে, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতভেদ আছে, তার পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে চিন।
দেপস্যাং প্লেইনস থেকে চুসুল পর্যন্ত এলাকা ছাড়াও গলওয়ান উপত্যকায় এখনো ২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি-নিয়ন্ত্রণে। একই ভাবে তাদের দখলে হট স্প্রিংস এলাকার আরও ১২ বর্গ কিলোমিটার। এটিও জানা গিয়েছে যে প্যাংগং টিসো-তে ৬৫ বর্গ কিলোমিটার এবং চুসুল-এ আরও ২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিনের কব্জায়।
অতএব যতই আলোচনা চলুক, সমস্যা সহজে মেটার নয়। নতুন পরিস্থিতি সামলাতে দরকার নতুন কৌশল। এবং সেখানেই উঠে এসেছে স্পেশ্যাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ-এর নাম।
চিনের সর্বশেষ হামলা প্রতিহত করে ভারতের যে সৈন্যদল, তার মধ্যে নাকি এসএফএফ-এর সদস্যরাও ছিলেন। ভারতের তরফে যদিও তা প্রকাশ্যে স্বীকার করা হয়নি।
ক্রমেই উৎসাহ বাড়ছে এসএফএফ-কে নিয়ে। সাধারণত এদের নাম বিশেষ শোনা যায় না। ১৯৬২-তে তৈরি হয় এই স্পেশ্যাল অপারেশন ফোর্স। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল, ভবিষ্যতে আবার যদি চিন-ভারত যুদ্ধ হয়, তা হলে চিনা সীমান্ত পেরিয়ে নানা গোপন অপারেশন চালাবে তারা।
এই বাহিনীর আর এক নাম ‘এস্টাবলিশমেন্ট ২২’ বা স্রেফ ‘২২’।
এই বাহিনীর প্রথম ইনস্পেক্টর জেনারেল মেজর জেনারেল সুজন সিং উবান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ২২ নং মাউন্টেন ডিভিশনের নেতৃত্বে ছিলেন। সেখান থেকেই এই ‘২২’ সংখ্যা।
এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যই তিব্বতি বংশোদ্ভূত এবং প্রত্যেকেই প্যারাট্রুপার।
স্বাধীনতার পর আমেরিকা ও ভারত একসঙ্গে তিব্বতি বিদ্রোহীদের ট্রেনিং দিয়েছিল নেপালের মুস্টাং এলাকায়। ১৯৫৯ সালে দলাই লামা যখন ভারতে চলে অসেন, তাঁর মূল পরিকল্পনা ছিল মুস্টাং-এর এই চিন-বিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ে বাহিনী গঠন। তখন থেকেই চিনের বিরুদ্ধে তিব্বতিদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা দানা বাঁধে। তা চূড়ান্ত রূপ পায় ১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের পর।
উত্তরাখণ্ডের চক্রাতায় এই ফোর্সের ঘাঁটি। সেখানেই ১২, ০০০ সদস্য নিয়ে প্রথম শুরু হয়েছিল তাদের যাত্রা। প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ভারতের রিসার্চ অ্যানলিসিস উইং অর্থাৎ র, এবং আমেরিকার সিআইএ। সেই সময় তাদের যাবতীয় অস্ত্রও জুগিয়েছিল আমেরিকা।
তবে এসএফএফ কিন্তু সেনাবাহিনীর অংশ নয়। তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধান করে র এবং ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট।
তিব্বতি হওয়ায় হাই-অল্টিচ্যুড লড়াইতে তারা বিশেষ ভাবে দক্ষ এবং সেটাই তাদের তুরুপের তাস। কিন্তু এই ফোর্স অন্যান্য যুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাদের মধ্যে প্রধান ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের লড়াই। সেই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য তাদের নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ফ্যান্টমস অফ চিটাগং’।
এসএফএফ-কে যদি সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করে ভারত, তা হলে চিনের কপালের ভাঁজ চওড়া হবে অবশ্যই। ভারতের ‘সারপ্রাইজ এলিমেন্ট’ বলা যায় এই ‘এস্টাবলিশমেন্ট ২২’ কে।