করোনা আবহে দেশে বেকারত্বের হার ৯ শতাংশ বেড়েছে, কেবল জুলাইতেই কাজ হারিয়েছেন ৫০ লক্ষ
করোনা সংক্রমণ দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি করোনার থাবায় দেশের বেকারত্বের হারও বাড়ছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি সম্প্রতি যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর। সিএমআইই জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে শুরু হওয়া লকডাউনের ফলে গত এপ্রিল মাস থেকে ১.৮ কোটিরও বেশি বেতনভুক কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন দেশে। শুধু জুলাইতেই বেকার হয়েছেন প্রায় ৫০ লাখ বেতনভুক কর্মচারী।
- FB
- TW
- Linkdin
ক্রমশ বাড়ছে বেকারত্বের সমস্যা, একথা অবশেষে মেনে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। করোনাভাইরাসের থাবা কী ভাবে দেশে বেকারত্বের হার বাড়িয়েছে, তারই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি।
সিএমআইই জানিয়েছে, অতিমারীর কারণে শুরু হওয়া লকডাউনের জেরে গত এপ্রিল মাস থেকে ১.৮ কোটিরও বেশি বেতনভুক কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই বেকার হয়েছেন প্রায় ৫০ লাখ বেতনভুক কর্মী।
করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের গোটাটাই প্রবল আর্থিক সংকটের মুখে পড়বে। অর্থনীতিবিদদের আগেই এই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এবার সিএমআইই'র সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত কয়েকমাসে যে ভাবে সংগঠিত ক্ষেত্রেও মানুষ কাজ হারিয়েছে, তাতে মুখ থুবড়ে পড়া অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো আরও কষ্টকর হয়ে পড়বে।
ভারতে যাবতীয় কর্মসংস্থানের ২১ শতাংশ হল বেতনভুক কর্মচারী। অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের থেকে এই সংখ্যাটা অনেকটাই কম হলেও দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে অনেক বেশি অবদান রাখে বেতনভুকরা। এপ্রিল থেকেই বেতনভুক কর্মচারীদের চাকরি হারান শুরু হয়েছে। মে মাসেই চাকরি যায় ১৭.৭ মিলিয়ন কর্মীর। তবে জুনে আরও ৩.৯ মিলিয়ন অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়। তাতে অবশ্য বিশেষ লাভ হয়নি। জুলাই মাসে কাজ হারান ৫০ লাখেরও বেশি কর্মী।
১৬ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশের বেকারত্বের হার ৯ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশনের সমীক্ষা বলছে চলতি বছর ৬.১ মিলিয়ন তরুণ কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
পর্যটন, পরিবহন ও বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত সরকারি স্থায়ী কমিটিগুলির বৈঠক ছিল সোমবার৷ পর্যটন সচিব যোগেন্দ্র ত্রিপাঠি সেখানে জানিয়েছেন, পর্যটন শিল্পে ভয়াবহ ভাবে বেকারত্ব দেখা দিয়েছে করোনা আবহে। এক্ষেত্রে ২ থেকে ৫.৫ কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন।
রাজস্বের ক্ষতির হিসাবে দেখা গিয়েছে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা৷ এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই পরিবহন সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে একত্রে একটি পরিকাঠামোর মধ্যে আনতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার এই বিষয়ে পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিমান পরিষেবা মন্ত্রকের সচিব পি এস খরোলাও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বিমান পরিষেবা চালু হলেও আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমতে পারে। জাতীয় পরিষেবাতেও অর্ধেক বিমান চলাচল করবে৷ যদিও তিনি বিমান পরিবহনের ক্ষতির নির্দিষ্ট সংখ্যার হিসাব দেননি, কিন্তু তবুও তাঁর কথা থেকেই বিমান পরিষেবার সঙ্গিন ছবিটা ফুটে উঠেছে৷
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রামে বেকারত্বের হার ৮.৮৬ শতাংশ এবং শহরে সেই সংখ্যা ৯.৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১৬ আগস্ট সপ্তাহ শেষে এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে। যেখানে ৭ দিন আগেও এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮.৩৭ ও ৯.৩১ শতাংশ।
সামগ্রিক ভাবে গোটা দেশে এই ৭ দিনে বেকারত্বের হার ৮.৬৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯.১ শতাংশে ঠেকেছে।
আনলক পর্বের শুরুতে এই হার কিছুটা কমলেও বর্তমানে তা আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, যা ভারতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোকে ভেঙে ফেলতে পারে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রীয় সরকার এই নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েছে।