- Home
- India News
- VPN ব্যবহার করে নিষিদ্ধ সাইট দেখেন - আর হয়তো এই সুবিধা মিলবে না, দেখুন কী করছে মোদী সরকার
VPN ব্যবহার করে নিষিদ্ধ সাইট দেখেন - আর হয়তো এই সুবিধা মিলবে না, দেখুন কী করছে মোদী সরকার
অনেকেই বিভিন্ন কারণে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন (VPN) পরিষেবা ব্যবহার করে থাকে। কিছু কিছু ভিপিএন পরিষেবা সামান্য অর্থের বিনিময়ে কিনতে পারা যায়, আবার কিছু আছে যা বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। কী হয় এই পরিষেবায়? ইন্টারনেটে বেনামী হয়ে যাওয়া যায়। অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কোথায় আছেন, কী তার আইপি পরিচয় - কিছুই জানা যাবে না। নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে ঘুরে বেরালেও কেউ ধরতে পারবে না। এবার সেই দিন যেতে চলেছে। স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ভারতে ভিপিএন পরিষেবা নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে বলে জানা গিয়েছে।

মিডিয়ানামার এক প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বলেছে ভারতে ভিপিএন পরিষেবা নিষিদ্ধ করা উচিত। এই বিষয়ে কমিটি ভারত সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে। কমিটি বলেছে, ভিপিএন পরিষেবা সাইবার হুমকি এবং অন্যান্য অপ্রীতিকর কার্যকলাপের হুমকি বাড়িয়ে তুলছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, কমিটি জানিয়েছে, ভিপিএন পরিষেবা সহজেই অনলাইনে পাওয়া যায়। এগুলি 'অপরাধীদের অনলাইনে বেনামে থাকার ক্ষমতা দেয়।' ভিপিএন পরিষেবা এবং ডার্ক ওয়েবের ফলে যে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, তার মোকাবিলার জন্য এগুলুি নিষিদ্ধ করা উচিত। কারণ এগুলি অপরাধীদের অনলাইনে বেনামে থাকতে দেয়।
ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী বা আইএসপি (ISP)-দের সহায়তায় সরকারকে এই পরিষেবাগুলি বন্ধ করার সুপারিশ করেছে কমিটি। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের (MeitY) সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে সমন্বয় সাধন করার কথাও বলা হয়েছে। ক্ষতিকর ভিপিএনগুলি চিহ্নিত করে সেগুলি স্থায়ীভাবে ব্লক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণভাবে সমন্বয় করা ছাড়াও, সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গেও সমন্বয় স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। নাহলে ভিপিএনগুলি স্থায়ীভাবে ব্লক করার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে না। ভিপিএন এবং ডার্ক ওয়েবের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ট্র্যাকিং এবং নজরদারি প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার সুপারিশও করেছে কমিটি।
গোটা বিশ্বেই ভিপিএন পরিষেবা ব্যবহার করা হয়। কোথও বাড়ির অসুরক্ষিত ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে অফিসের সিস্টেম ফাইল ব্যবহার করার জন্য ভিপিএন ব্যবহার করা হয়। আবার অনেকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ হওয়া ওয়েবসাইটগুলি ব্যবহারের জন্য ভিপিএন-এর সহায়তা নেন। অনেকে অনলইনে ব্যাঙ্ক বা অর্থ সংক্রান্ত পরিষেবাদির জন্য ভিপিএন ব্যবহার করেন। কারোর লক্ষ্য থাকে বেনামে ইন্টারনেট ব্যবহার করা।
এমনকী জম্মু ও কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট শাটডাউনের সময়ও বহু সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলি ব্যবহার করতে ফোনে ভিপিএন সংযোগ ব্যবহার করতেন। সরকারি কর্তৃপক্ষ উপত্যকায় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের শুধুমাত্র ১৬৭৪ টি সাদা তালিকাভুক্ত ওয়েবসাইটের অ্যাক্সেস দিয়েছিল। পিয়ার-টু-পিয়ার যোগাযোগ এবং ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অ্যাক্সেস পেতে ভিপিএন ব্যবহার করার জন্য বহু অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছিল।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন), কোনও পাবলিক নেটওয়ার্কের ভিতরেই একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরি করে। ব্যবহারকারীরা পাবলিক নেটওয়ার্কেই এমনভবে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারেন, যেন তাদের কম্পিউটিং ডিভাইসগুলি সরাসরি প্রাইভেট নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত। ডেডিকেটেড সার্কিট ব্যবহার করে অথবা বিদ্যমান নেটওয়ার্কে টানেলিং প্রোটোকলের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পয়েন্ট টু পয়েন্ট সংযোগ স্থাপন করে ভিপিএন।
বর্তমানে, বেশ কয়েকটি দেশের সরকার ভিপিএন-এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত বা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, বেলারুশ, চিন, ইরাক, ইরান, তুরস্ক, উগান্ডা, ভেনেজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া, ওমান, রাশিয়া এবং আরব আমিরশাহির মতো কয়েকটি দেশ। আরও বেশ কয়েকটি দেশে ইন্টারনেট সেন্সরশিপ আইন রয়েছে, সেখানে অনুমোদনহীন ভিপিএন ব্যবহারের জন্য নাগরিক এবং ভিপিএন পরিষেবা প্রদানকারী - উভয়েরই জরিমানা হতে পারে।