- Home
- India News
- করোনার হদিশ পেতে জনপ্রিয়তা বাড়ছে পুল টেস্টিং-এর, জেনে নিন কীভাবে হয় এখানে নমুনা পরীক্ষা
করোনার হদিশ পেতে জনপ্রিয়তা বাড়ছে পুল টেস্টিং-এর, জেনে নিন কীভাবে হয় এখানে নমুনা পরীক্ষা
কোরনার আক্রান্তদের থেকে ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে বাহকরা। তাঁদের থেকেই ছড়াচ্ছে মারণ জীবাণু। তাই তাঁদের খোঁজেতে পুল স্যাম্পেল পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর। টেস্টিং কিট কম থাকলেও এই পদ্ধতিতে দেশের সিংহ ভাগ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব বলে মত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের। পুল স্যাম্পেল টেস্টিংয়ের মাধ্যমে খরচ বাঁচিয়ে কম সংখ্যক কিটের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয়। এর ফলে করোনা আক্রান্তদের খোঁজে আরও বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। একইসঙ্গে অনেক বেশি স্ক্রিনিং করা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গেও অ্যাসিম্পটম্যাটিক আক্রান্তদের খুঁজতে পুল স্যাম্পেল টেস্ট করা হচ্ছে।
- FB
- TW
- Linkdin
কোভিড-১৯ পজিটিভ কি না, তা নির্ণয়ের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ও সংবেদনশীল পদ্ধতি হচ্ছে আরটি-পিসিআর বা রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ পিসিআর। এই পদ্ধতিতে আমাদের কোষের মধ্যে থাকা আরএনএকে ডিএনএতে পরিণত করে তাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তা মেশিনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও গণনা করা যায়। আমাদের ডিএনএ মাত্র চারটি অক্ষর দিয়ে লেখা। অ্যাডিনোসিন (এ), সাইটোসিন (সি), থাইমিন (টি), গুয়ানিন (জি)—এই চারটি ক্ষারীয় যৌগের বিভিন্ন রকম বিন্যাস নির্ধারণ করে দেয় কোন জিনের কী কাজ। এই ডিএনএ থেকে আরএনএ তৈরি হয় এবং আরএনএ থেকে তৈরি হয় প্রোটিন, যা আমাদের দেহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশের জন্য দায়ি। যেমন চোখের রং কালো না নীল—এই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলোর ভিন্নতার জন্য দায়ি হচ্ছে ডিএনএর ক্রমবিন্যাসের ভিন্নতা।
করোনাভাইরাস একটি আরএনএ ভাইরাস। অর্থাৎ তার জিনোম ডিএনএ নয় আরএনএ দিয়ে তৈরি। এই জন্য কোনোও মানুষের দেহে এই ভাইরাসটি আছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা মানুষটির সর্দি বা কাশির থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেই কোষগুলো থেকে আরএনএ আলাদা করতে পারি। যদি ভাইরাসের সংক্রমণ থাকে তাহলে অবশ্যই মানুষটির নিজের আরএনএর সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটির আরএনএ-টিও আমাদের নমুনায় চলে আসবে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণত জ্বর, সর্দি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকে। গলা ব্যথাও থাকে। কিন্তু অ্যাসিম্পটম্যাটিকদের ক্ষেত্রে এমন কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। আপাত ভাবে দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু বাস্তবে সেই ব্যক্তির শরীরেই ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। এই উপসর্গহীন কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে বিভিন্ন দেশেই। একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ভারতেও। তাঁদের খুঁজে বার করতেই পুল টেস্টের সাহায্য নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্য।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) একটি কার্যকরী স্ক্রিনিং বা কোভিড আক্রান্তদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি হিসাবে এই পুল টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে। পুল টেস্টের ক্ষেত্রেও সন্দেহভাজন কোভিড আক্রান্তের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে রিয়েল টাইম পিসিআর টেস্টই করেই।
তবে পুল টেস্টে একসঙ্গে ২ থেকে ৫ জনের লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সমস্ত নমুনা এক সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। এর পর পরীক্ষা করা হয়।
পরীক্ষায় ওই মিশ্রিত নমুনা নেগেটিভ হলে বোঝা যায় যে ক’জন ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ভাইরাসের অস্তিত্ব নেই। উল্টো হলে, অর্থাৎ পজিটিভ হলে ধরে নিতে হবে ওই পুলের মধ্যে কোনও একজন কোভিড আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে ওই পুলে যে ক’জনের নমুনা মেশানো হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা করে কোভিড পরীক্ষা করা হয়।
আইসিএমআর নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণের হার কম সেখানেই পুল টেস্টে জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে পুল টেস্ট করা হবে শুধুমাত্র উপসর্গহীন মানুষদের ক্ষেত্রে। যাঁরা কোভিড পজিটিভ রোগীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের এই পরীক্ষা বাঞ্ছনীয় বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।
উপসর্গহীন রোগীদের সন্ধান করতে পুলটেস্ট দ্রুত এবং কার্যকরী পদ্ধতি। গোটা দেশে উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা বিপদ বাড়াচ্ছে।
পুলটেস্টে, একটি কিট ব্যবহার করে পাঁচজনের এক সঙ্গে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে খরচ কমছে। কারণ এখন একটি কিটে একজনের পরীক্ষা হয়। পাঁচজনের পরীক্ষা হলে কিটের খরচ এবং সময় দুটোই সাশ্রয় হয়।