ধার করেই চলছে কেন্দ্রের সংসার, সংসদে অর্থমন্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে চাপে মোদী সরকার
- FB
- TW
- Linkdin
এমনিতেই গত কয়েকবছর হল ভারতীয় অর্থনীতির গতি অনেকটাই স্লথ হয়েছে। তারমধ্যে করোনা পরিস্থিতি দেশের অর্থনৈতিক কাজকর্মকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এরমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন সারসত্য। জানিয়ে দিলেন,
মোদী সরকারের সংসার খরচের সবটাই চলছে ধার করে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, লকডাউনের ধাক্কায় এপ্রিল থেকে জুনে কেন্দ্রের আয় প্রায় ২৯.৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। তার উপরে কেন্দ্র ১০০ টাকা কর বাবদ আয় করলে রাজ্যগুলিকে তার ভাগ ও অনুদান দিতে ১০৭ টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে কেন্দ্রের খরচ এখন চলছে ধার করেই।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মোদী সরকারের মোট দেনার বোঝা মার্চের শেষে ৯৪.৬ লক্ষ কোটি টাকা ছিল। তা জুনের শেষে বেড়ে ১০১.৩ লক্ষ কোটি টাকায় এসে পৌঁছেছে।
ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের টানাপড়েন শুরু হওয়ার পরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ‘ভগবানের মার’ তকমা দিয়ে করোনার দোহাই দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগে থেকেই যে অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির আয় কমতে শুরু করেছিল, তা খোদ সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
রাজ্যের প্রাপ্য জিএসটি ক্ষতিপূরণ কেন্দ্র না-মেটানোয় অর্থমন্ত্রীর দিকে আঙুল উঠেছিল। বিরোধীরা কটাক্ষ করছিলেন। অর্থনীতির দুর্দশার দায় ভগবানের ঘাড়ে চাপানোর জন্য অর্থমন্ত্রীকে সম্প্রতি তাঁর স্বামীও কটাক্ষ করেছেন।
নির্মলা বলেছিলেন, কোভিড দৈবদুর্বিপাক বা ভগবানের মার। তার জেরেই অর্থনীতির সঙ্কোচন। স্ত্রী-র মন্তব্যকেই কটাক্ষ করে নির্মলার স্বামী তথা অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের প্রাক্তন জনসংযোগ উপদেষ্টা ও পেশাদার অর্থনীতিবিদ পরকলা প্রভাকরের বলেন, “আসল দৈবদুর্বিপাক হল, দেশের অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সরকারের মধ্যে সুসংহত ভাবনাচিন্তার অভাব।”
নির্মলার মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ায় শুক্রবার বাজেট-অতিরিক্ত খরচের অনুমোদন নিয়ে বিতর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ল্যাটিনে আদালতে ‘ফোর্স মেজিওর’ বললে সমস্যা নেই। আমি সংসারী মহিলা, পাড়ার আন্টির মতো। তাই ভগবানের মার বলায় আমাকে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। এটা দৈব দুর্বিপাক ছাড়া কী?”
নির্মলা ফের একবার স্পষ্ট করে দেন, জিএসটি সেস আদায়ের তহবিলে টাকা নেই। অ্যাটর্নি জেনারেল বলে দিয়েছেন, সরকারি কোষাগার থেকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানো যাবে না। তাই তিনি রাজ্যকে ধার নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। জিএসটি পরিষদেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
তবে রাজ্যকে অর্থসাহায্য করা হচ্ছে না কেন্দ্রের তরফে, তা মানতে চাননি নির্মলা। কেন্দ্রের আয় এপ্রিল-জুনে ২৯.৫% কমলেও রাজ্যকে দেওয়া করের ভাগ ১১% কমেছে বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।